ব্যস্ত: কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালের ক্যান্টিনে রান্নায় ব্যস্ত রফিয়া বেগম। —নিজস্ব চিত্র।
খাদানে পাথর ভাঙতেন অসমের কাছাড় জেলার র খওয়াজ আলি লস্কর। অনেকদিন ধরেই তাঁর গালের ভিতরে ঘা। অভাবি খওয়াজ চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। তবে মারণ রোগ শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ল, ক্যানসার।
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! সেই সময় কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিনা খরচে তাঁর চিকিৎসা করা হবে বলে জানাল। কিন্তু তাতেও কি খওয়াজের চিন্তা দূর হয়! প্রশ্ন, সংসার চলবে কী করে? স্ত্রী-সন্তানের মুখের অন্ন জুটবে কী ভাবে? মুশকিল আসান হয়ে পাশে দাঁড়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই। খওয়াজ-পত্নী রফিয়া বেগমকে হাসপাতালের ক্যান্টিনেই কাজ দিলেন তাঁরা। স্বামীর খোঁজ-খবর নেওয়ার পাশাপাশি মাসান্তে যা কিছু উপার্জন হয়, ছেলেমেয়েদের জন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দেন রফিয়া।
রফিয়া কোনও ব্যতিক্রম নন, ক্যান্টিনে কাজ করেন খোকন দেবনাথ, শচীন নাথের স্ত্রীও। লবজান বেগম, মায়া নমঃশুদ্রের স্বামীদেরও একই কারণে ক্যান্টিনে নিয়োগ করা হয়। হাসপাতালের ফার্মেসিতেও কাজ করেন কয়েকজন।
কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল আসলে সোসাইটি পরিচালিত। শিলচর-সহ বরাক উপত্যকার মানুষ চাঁদা তুলে এই হাসপাতাল গড়ে তুলেছেন। এই হাসপাতালে কোনও ক্যানসার রোগীকেই ফেরানো হয় না। হাসপাতালের মুখ্য প্রশাসনিক অফিসার কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’বছর আগে আমাদের এই প্রকল্প চালু হয়। এক সঙ্গে ৬-৭ জন কাজ করেন। হাসপাতালের প্রয়োজন না থাকলেও অনেক সময়েই তাঁদের প্রয়োজনের কথা ভেবে কাজে লাগানো হয়।’’ তাঁর কথায়, যতটা সম্ভব চেষ্টা করছেন তাঁরা।
দরিদ্র রোগীর পরিজনদের জন্য হাসপাতাল চত্বরেই ধর্মশালা রয়েছে। সেখানে দশ টাকা দরে নিরামিষ মিলের ব্যবস্থাও রয়েছে। কল্যাণবাবুর কথায়, অ্যাটেনডেন্টদের থাকা-খাওয়ার সমস্যায় আগে বহু রোগীই চিকিৎসা না করিয়েই ফিরে যেতেন। সে জন্যই এই ব্যবস্থা। আর রফিয়া বেগমের কথায়, ‘‘গত আড়াই মাস ধরে আমার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ক্যান্টিনে কাজের সুযোগ না মিললে কবেই তাঁকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে হতো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy