Advertisement
E-Paper

তুমি না-থাকলে! ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে আহতদের নিয়ে মই বেয়ে হাসপাতালে রাজস্থানের নতুন ‘রানা’

কী ভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল, রাজ্য সরকারের কাছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০ জানুয়ারির মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩২
How 20-year-old saved 30 burn victims of Jaipur LPG tanker blast

জয়পুরের ট্যাঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল। —ফাইল চিত্র।

জয়পুরের ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের জন্য নিজের খামারবাড়ির দরজা খুলে দিয়েছিলেন তিনি। কারও হাত, পা ঝলসে গিয়েছে, কারও আবার মুখের চারপাশ। শরীরে প্রায় নগ্ন বললেই চলে। পুড়ে ছাই। সেই অবস্থা থেকে অন্তত ৩০ জনকে উদ্ধার করে নিজের জমিতে আশ্রয় দেন রাকেশ সাইনি। শুক্রবার সকালের ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে নিজেই কেঁপে উঠছিলেন রাজস্থানের নতুন রানা রাকেশ! একাই ৩০ জনকে বাঁচিয়ে ‘রাজা’ হয়ে উঠলেন ২০ বছরের ওই তরুণ।

জয়পুর-অজমের হাইওয়ের ধারে পেট্রল পাম্পের কাছে দাঁড় করানো একটি সিএনজি ট্যাঙ্কারে ধাক্কা মারে এলপিজি বোঝাই ট্রাক। সেই সংঘর্ষে সিএনজি ট্যাঙ্কার লিক হয়ে যায়। তার পরেই আগুন ধরে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়। দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই ছিল রাকেশদের খামারবাড়ি। তা লাগোয়া রয়েছে একটি হাসপাতাল। মাঝে আট ফুট উচ্চতার পাঁচিল। তবে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সেই হাসপাতালের প্রবেশদ্বার ছিল প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক ছিল, আহতদের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেড় কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া ছিল অসম্ভব। তখনই রাকেশরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

রাকেশের কথায়, ‘‘আমি অন্তত ৩০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় ক্ষেতের দিকে ছুটে আসতে দেখছিলাম। যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন, জামাকাপড় প্রায় পুড়ে গিয়েছিল। একটি মই নিয়ে আসি। সেই মই দিয়ে ক্ষেতের পাশের হাসপাতালে যাওয়ার এক অস্থায়ী পথ তৈরির চেষ্টা করেছিলাম। অনেকের ক্ষমতা ছিল না মই বেয়ে উপরে ওঠার। তাঁদের কাঁধে তুলে পার করিয়েছি।’’

ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক তথা মালিক রমণ কান্দোই শুক্রবারের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘‘অন্তত ৩০ জন সে দিন সাহায্য চেয়েছিলেন। তাঁদের শরীরে অনেকাংশই পুড়ে গিয়েছিল। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন।’’ রমণের স্ত্রী, যিনি নিজেও এক জন চিকিৎসক, তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাসপাতাল হাইওয়ের ধারে হওয়ায় সব সময়ই কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা থাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরই আহতদের ওই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে এসএমএস হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’ আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জনের শরীর ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

জয়পুরে সিএনজি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও আশঙ্কাজনক ৩০ জন। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, মৃত এবং আহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেছে তারা। মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও মৃতদের পরিবারের জন্য আলাদা ভাবে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। তবে কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, রাজ্য সরকারের কাছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০ জানুয়ারির মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Jaipur Tanker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy