প্রতীকী ছবি।
সিংহভাগ কর্মীই কাজ করেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে। অথচ সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকারি বরাদ্দ নগণ্য। যেটুকু বরাদ্দ, দুর্নীতির কারণে তার একটা বড় অংশ আবার মাঝপথে মার যায়। এই ‘ত্র্যহস্পর্শেই’ করোনা-কালে ভুগতে হয়েছে ভারত সমেত এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অধিকাংশ দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে। এই সমস্যা তুলে ধরে ওই দেশগুলিকে দ্রুত সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) সমীক্ষা।
ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে যে, পেনশন-পিএফের সুবিধা এই অঞ্চলে পান মূলত সরকারি কর্মী এবং বড়জোর সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা। অথচ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক এই দেশগুলিতে অন্তত ৭০ শতাংশ। ভারতে তা ৯০ শতাংশেরও বেশি।ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য বাদে অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা (পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেকারভাতা, শারীরিক অক্ষমতা-ভাতা ইত্যাদি) খাতে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির গড় বরাদ্দ জিডিপির ২ শতাংশের মতো। বিশ্বের অন্যান্য দেশে তা প্রায় ১১ শতাংশ।
পিএফ, পেনশন নেই। বাড়ি ছেড়ে কাজের খোঁজে পাড়ি দিতে হয় অন্যত্র। সেই কাজের নিশ্চয়তাও নেই বললেই চলে। এমন অনন্ত অসুবিধার মধ্যে এমনিতেই বছরের পর বছর ধুঁকতে হয় এই সমস্ত দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের। তাঁদের এই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে থাকা দশাই কোভিডের আক্রমণের মুখে একেবারে বেআব্রু হয়ে গিয়েছে বলে সমীক্ষায় দাবি। যে কারণে এই অতিমারি নতুন করে বহু জনকে ফের দারিদ্রসীমার নীচে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে।
সংসদের শেষ অধিবেশনে পাশ হওয়া তিনটি শ্রমবিধি নিয়েও এই আপত্তিই তুলেছিলেন বিরোধীরা। সরব হয়েছিল ট্রেড ইউনিয়নগুলি। বক্তব্য ছিল, যেখানে অসংগঠিত ক্ষেত্রে এমনিতেই কাজের নিশ্চয়তা নেই, সেখানে ছাঁটাইয়ের পথ কোন যুক্তিতে আরও মসৃণ করছে কেন্দ্র? আর ছাঁটাইয়ের রাস্তা চওড়া করার আগে কেন বেকারভাতা কিংবা বেকারত্ব বিমার কথা নতুন শ্রমবিধিতে বলছে না তারা? তুমুল অনিশ্চয়তায় ঘেরা কাজের বাজারে এই উদ্বেগের বিষয়টিই ফুটে উঠেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষাতেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy