Advertisement
E-Paper

সন্তর্পণে গ্রিল কেটে তৈরি করা হয় প্রবেশপথ! মুম্বইয়ের স্টুডিয়ো থেকে কী ভাবে ১৭ শিশুকে উদ্ধার পুলিশের

বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুদের অপহৃত হওয়ার খবর পায় মুম্বই পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। যৌথ প্রচেষ্টায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার অভিযান।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১২
এখানেই পণবন্দি করে রাখা হয় অন্তত ১৯ জন শিশুকে। অভিযুক্ত যুবক (ইনসেটে)।

এখানেই পণবন্দি করে রাখা হয় অন্তত ১৯ জন শিশুকে। অভিযুক্ত যুবক (ইনসেটে)। — ফাইল চিত্র।

দীর্ঘ ক্ষণের চেষ্টায় মুম্বইয়ের পওয়াইয়ের স্টুডিয়ো থেকে অন্তত ১৭ জন পণবন্দি শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুদের নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বাবা-মায়ের কাছে। এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে অভিযুক্ত রোহিত আর্যের। বৃহস্পতিবার বিকেলের ওই অভিযানের বর্ণনা দিল মুম্বই পুলিশ।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুদের অপহৃত হওয়ার খবর পায় মুম্বই পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। যৌথ প্রচেষ্টায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে উদ্ধার অভিযান। দমকলের স্টেশন অফিসার অভিজিৎ সোনাওয়ানে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বেলা ৩টের দিকে আমরা পুলিশের কাছ থেকে ফোন পাই। তখনই ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি।’’ নাটকীয় ঘটনাটি ঘটছিল পওয়াইয়ের এলএনটি ভবনের কাছে ‘আরএ স্টুডিয়ো’ নামে এক ভবনে। খবর পেয়েই সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে ওই এলাকার উদ্দেশে রওনা দেয় দমকলের একটি দল।

উদ্ধারকারী দলের দাবি, অভিযুক্তের কাছে একটি এয়ারগান এবং বেশ খানিকটা রাসায়নিক ছিল। কেউ ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে গোটা বহুতলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছিলেন ওই যুবক। তাই অনেক ক্ষণ ধরে চেষ্টার পরেও ভিতরে ঢুকতে পারছিল না পুলিশ। শেষমেশ দমকলবাহিনীর তৎপরতায় হাইড্রোলিক সরঞ্জাম দিয়ে গ্রিল কাটা শুরু হয়। ছোট ছোট কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে স্টুডিয়োয় ঢোকার চেষ্টা করতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। শিশুদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে জন্য সবটাই করা হচ্ছিল সন্তর্পণে। গ্রিল কাটার পর স্টুডিয়োর শৌচাগার দিয়ে ভিতরে ঢোকে পুলিশের একটি দল। তারা বন্দি শিশুদের উদ্ধার করে। অভিযুক্তের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন আর এক পুলিশকর্মী।

যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) সত্যনারায়ণ জানিয়েছেন, অভিযুক্তের কাছে একটি এয়ারগান ছিল। আর ভিতরে বন্দি ছিল অন্তত ১৭ জন শিশু। সে কারণে প্রথমে এগোনোর সাহস পায়নি পুলিশ। পওয়াই পুলিশের সিনিয়র ইনস্পেক্টর জীবন সোনাওয়ানে বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ব্যক্তি মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে মনে করা হচ্ছে। ওই যুবক বার বার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকারের সঙ্গে কিছু সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চাইছিলেন।’’ রোহিত নামে ওই যুবক পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়েন বলে দাবি। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানা গিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে রোহিতের।

পওয়াইয়ের বহুতল ওই স্টুডিয়োয় অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। বৃহস্পতিবার সেখানে অডিশনের জন্য এসেছিল অনেক শিশু। অভিযোগ, সেখানে অন্তত ১৭ জন শিশুকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বন্ধ করে দেন রোহিত। তার পর সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার জন্যই শিশুদের পণবন্দি বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি রোহিত আর্য। আত্মহত্যা করতে চাই না আমি। আমার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। আর সে জন্যই শিশুদের বন্দি করেছি। আমার সে রকম কোনও বড় দাবি নেই। সাধারণ কয়েকটি দাবি এবং কিছু প্রশ্ন করতে চাই।’’ কেউ কোনও চালাকি করলে গোটা স্টুডিয়োয় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন ওই যুবক।

Children Hostage Mumbai Studio Encounter Powai
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy