মুম্বইয়ের একটি স্টুডিয়োয় ১৭ জন শিশুকে পণবন্দি করলেন এক যুবক। আর এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দীর্ঘ ক্ষণের চেষ্টায় সমস্ত শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবককেও। বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার দত্ত নালাওয়াড়ে জানিয়েছেন, ধৃতের কাছ থেকে একটি এয়ার গান, কিছু রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি একাই শিশুদের পণবন্দি বানিয়েছিলেন। বহুতল ওই স্টুডিয়োয় অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই প্রশিক্ষণ চলাকালীন ওই ব্যক্তি ঢুকে পড়েন। তার পরই ১৭টি শিশুকে পণবন্দি করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম রোহিত আর্য। তিনি ওই স্টুডিয়োতেই কাজ করতেন। পাশাপাশি একটি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলও চালান তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত চার-পাঁচ দিন ধরে স্টুডিয়োয় অডিশনের কাজ করছিলেন রোহিত। বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ১০০ শিশু অভিনয়ের ক্লাস করতে আসে। বেশির ভাগ শিশুকে চলে যেতে বলেন তিনি। বাকি ১৭ শিশুকে স্টুডিয়োয় ঢুকিয়ে দিয়ে আটকে রাখেন। শিশুদের আটকে রাখায় তারা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেন শিশুদের ঢুকতে দেওয়া হল, এই নিয়ে অভিভাবকেরা জানার চেষ্টা করেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন ১৭ শিশুকে পণবন্দি করেন রোহিত। তার পরই একটি ভিডিয়ো বার্তা ছাড়েন। সেখানে তিনি দাবি করেন, কিছু ব্যক্তির সঙ্গে বিশেষ কিছু কথা বলার জন্য শিশুদের পণবন্দি বানানোর পরিকল্পনা করতে হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘আমি রোহিত আর্য। আত্মহত্যা করতে চাই না আমি। আমার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। আর তার জন্যই শিশুদের বন্দি বানিয়েছি।’’ রোহিত আরও বলেন, ‘‘আমার বেশি কিছু দাবি নেই। সাধারণ কয়েকটি দাবি এবং কিছু প্রশ্ন করতে চাই।’’ এর পরই রোহিত হুঁশিয়ারি দেন, কেউ যদি কোনও চালাকি করার চেষ্টা করেন, তা হলে গোটা স্টুডিয়োয় আগুন ধরিয়ে দেবেন।
কিন্তু তাঁর কী পরিকল্পনা, কী দাবি, কাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন, সে সব কিছুই স্পষ্ট করেননি রোহিত। স্টুডিয়োয় পণবন্দির খবর ছড়াতেই পুলিশ উদ্ধারকাজে নেমে পড়ে। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে স্টুডিয়োয় ঢোকার চেষ্টা করে। শিশুদের যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সে দিকটাও খেয়াল রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার। স্টুডিয়োর বাথরুম দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে পুলিশের একটি দল। তার পর অভিযুক্তকে ধরে ফেলে তারা। শিশুদের নিরাপদে বার করে আনা হয়। রোহিতের কী পরিকল্পনা ছিল, কেন শিশুদের পণবন্দি বানালেন, সেই উত্তর জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।