১৭ দিন ধরে বেপাত্তা ছিলেন মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সোনম রঘুবংশী। অবশেষে সোমবার ভোররাতে উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের এক ধাবা থেকে বাড়িতে ভিডিয়ো কল করেন নিখোঁজ তরুণী। সেটাই কাল হল। একটিমাত্র ফোন কলই ধরিয়ে দিল সোনমকে!
সম্প্রতি মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হন মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী। সেই ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না তাঁর স্ত্রী সোনমের। অবশেষে সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরে তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর প্রায় সাড়ে ৩টে নাগাদ গাজ়িপুরের নন্দগঞ্জ এলাকায় বারাণসী-গাজ়িপুর রোডের উপর অবস্থিত ‘কাশী ধাবা’য় পৌঁছোন সোনম। কাঁদতে কাঁদতে ধাবার মালিকের কাছ থেকে তাঁর ফোনটি চান। সেই ফোন থেকেই ভিডিয়ো কল করেন বাড়িতে।
আরও পড়ুন:
রাজার ভাই বিপুল রঘুবংশী সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে নন্দগঞ্জের একটি ধাবা থেকে সোনম তাঁর ভাই গোবিন্দ রঘুবংশীকে ফোন করেন। ভিডিয়ো কলে জানান, তিনি গাজ়িপুরে রয়েছেন। ফোন রেখেই সোনমের ভাই ইনদওর পুলিশকে খবর দেন। সন্দেহজনক কিছু আঁচ করে ধাবার মালিকও আপৎকালীন নম্বর ১১২-তে ফোন করেন। সঙ্গে সঙ্গে ইনদওর পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় গাজ়িপুর পুলিশের সঙ্গে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় সোনমকে।
বিপুলের কথায়, ‘‘সোনম আত্মসমর্পণ করেননি। গোবিন্দের সঙ্গে আমার ভোরেই কথা হয়। ও জানায়, ওর দিদিকে উত্তরপ্রদেশে পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা পুলিশে খবর দিই। পুলিশই সোনমকে গ্রেফতার করে।’’ তবে রাজার ভাই এ-ও জানিয়েছেন, যে ক’দিন সোনম তাঁদের বাড়িতে ছিলেন, ওই নবদম্পতিকে কখনও ঝগড়া করতে দেখা যায়নি। বিয়ের পর থেকে বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন দু’জন। বিপুল বলেন, ‘‘যদি বৌদি সত্যই এই কাজ করে থাকেন, তবে ওঁর কঠোর শাস্তি চাই।’’
বর্তমানে, সোনমকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে গাজ়িপুর পুলিশ। কী ভাবে তিনি শিলং থেকে গাজ়িপুরে পৌঁছোলেন, গত ১৭ দিনে তাঁর সঙ্গে কী কী ঘটেছে, সবই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানতে চাওয়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাজের সঙ্গে বিয়ের আগে সোনমের সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও দু’জনের যোগাযোগ ছিল। সেই কারণেই সোনম স্বামীকে খুন করেছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে সোনমের মা সঙ্গীতা বলেন, ‘‘কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল তা তদন্তের পরেই জানা যাবে। কিন্তু মেয়েকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, আপাতত এটাই স্বস্তির!’’