Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
AAP

মনে আছে বিশ্বাস কেজরীর জন্যই

বহু ঐতিহাসিক সমাবেশের সাক্ষী থাকা রাজধানীর রামলীলা ময়দানে এ ভাবেই আজ তৈরি হল জাদু-মুহূর্ত।

রামলীলা ময়দানে আপ সমর্থকরা।—ছবি পিটিআই।

রামলীলা ময়দানে আপ সমর্থকরা।—ছবি পিটিআই।

অগ্নি রায় 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

শপথ নেওয়ার পরে অরবিন্দ কেজরীবাল গাইছেন ‘হাম হোঙ্গে কামিয়াব…।’ লক্ষাধিক জনতা গাইছে তাঁর সঙ্গে। প্রথমে যা গুনগুন, পরে ‘মন মে হ্যায় বিশ্বাস’-এ পৌঁছে তা গর্জন।

বহু ঐতিহাসিক সমাবেশের সাক্ষী থাকা রাজধানীর রামলীলা ময়দানে এ ভাবেই আজ তৈরি হল জাদু-মুহূর্ত। আজকের জনতা-থইথই শপথ অনুষ্ঠান যে শুধু আবেগ নয়, সব অঙ্কেই অন্য রকম — এটা এক বাক্যে স্বীকার করছে নয়াদিল্লি।

মঞ্চে শপথ নেওয়া মন্ত্রীদের সঙ্গে সমমর্যাদায় বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেন পঞ্চাশ জন ‘দিল্লি নির্মাতা’। তাঁরাই আজকের প্রধান অতিথি। প্রত্যেকেই ‘আম আদমি’। কেউ অটোচালক, কেউ ‘মহল্লা ক্লিনিক’-এর ডাক্তার, কেউ সরকারি স্কুলশিক্ষক। প্রত্যেকেই লড়াই করে নিজেদের জায়গা করেছেন, অবদান রাখছেন দিল্লির সমাজেও।

‘লগে রহো কেজরীবাল’, ‘লড়তে রহো কেজরীবাল’— গান-স্লোগানে মাখামাখি রামলীলায় কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে কান পাততে হচ্ছে। আটপৌরে ভঙ্গিতে ঘুরছেন জিতে আসা আপ বিধায়কেরা। চিত্তরঞ্জন পার্ক অঞ্চলের বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ জানালেন, তাঁর এলাকায় স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি অন্য একটি কারণেও সাফল্য পেয়েছে আপ। ‘‘এ বার বাঙালি ভোট আরও বেশি পাওয়ার কারণ, আমরা দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন যমুনার কাদায় না-করে, পুকুর খুঁড়ে সর্বসমক্ষে সুষ্ঠু ভাবে করতে পেরেছি। বয়স্করাও তা সামনে থেকে দেখে তৃপ্তি পেয়েছেন’’— বললেন সৌরভ। সেই সঙ্গে মানলেন যে, বাংলা স্কুলের উন্নতির জন্য অনেকটা হাঁটতে হবে। সৌরভের মতে, পাহাড়-প্রমাণ দুর্নীতির শিকার এই স্কুলগুলি। এ বার হেস্তনেস্ত করবেই তাঁর সরকার।

‘‘আমি দিল্লির ভোটারই নই, থাকি মুম্বইয়ে। ওখান থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটা পারি, প্রচার করি কেজরীবালের জন্য। আজ এক দিনের জন্য এসেছি’’, বললেন আরতি চাড্ডা। তাঁর তৈরি একটি বিজ্ঞাপন (সিমেন্টের শক্তির সঙ্গে কেজরীবালের তুলনা করে) ভাইরাল হয়েছিল ভোটের আগে। আরতির পাশেই দাঁড়িয়ে পঞ্চাশ জন ‘দিল্লি নির্মাতা’র এক জন, দিল্লির সরকারি স্কুলের ছাত্র সুমিত নাগাল জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী তথা দিল্লি সরকার পাশে না-থাকলে তাঁর টেনিস কেরিয়ার স্বপ্নই থেকে যেত। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা সুমিত ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক তারকা। জুনিয়র উইম্বলডনের ডাবলস চ্যাম্পিয়ান তিনি। এর পুরো কৃতিত্বই সুমিত দিচ্ছেন কেজরীবালকে।

আর এক বিশেষ অতিথি লক্ষ্মণ চৌবে অটোচালক। দিল্লির রাস্তায় মহিলা সুরক্ষা আন্দোলনের অন্যতম কর্মীও। বলছেন, ‘‘কেজরীবাল সরকার আমাদের মান-ইজ্জত দিয়েছে। দেশের জন্য কিছু করতেও পারছি। আগে একটা লাইসেন্স রিনিউ করতে হলেও কত টাকা দিতে হত। এখন সে সব অতীত।’’ মঞ্চ থেকে এঁদের অনেকের সঙ্গেই জনতার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছেন কেজরীবাল। বলেছেন, ‘‘দিল্লি কে চালায় ? কেজরীবাল নয়। কোনও রাজনৈতিক নেতা বা দল নয়। দিল্লি চালান এমন সব শিক্ষক, ডাক্তার, অটোচালক, কারখানার শ্রমিকেরাই। এঁদের জন্যই দিল্লি এগোচ্ছে।’’

বিজেপির অভিযোগ, মহিলাদের বাসে যাতায়াত থেকে শিক্ষা-স্বাস্থ্য বিনামূল্যে করে দিয়ে, বিদ্যুতের দামে ছাড় দিয়ে ভোট কিনেছেন কেজরী। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা ব্যাখ্যা, ‘‘কিছু জিনিসের দাম হয় না। যেমন মায়ের ভালবাসা, বাবার আশীর্বাদ। কেজরীবাল দিল্লিবাসীকে ভালবাসে। সেই ভালবাসারও দাম হয় না। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা কিংবা সরকারি স্কুলে পড়ার বিনিময়ে টাকা চাইব? এমন মুখ্যমন্ত্রিত্বকে ঘৃণা করি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

AAP AAM Aadmi Party Arvind Kejriwal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE