Advertisement
E-Paper

অনেক দূর যাবেন, বোঝালেন হার্দিক

তবে আজ ভরতের ছেলে হার্দিক পটেল বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। ২০১৯ বা তার পরেও গুজরাতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন তিনি। ‘‘আমার তো মাত্র ২৩ বছর বয়স। রাজনৈতিক জীবন পুরোটাই বাকি’’— হার্দিকের মাথায় থামার কোনও ভাবনা নেই।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬
প্রত্যয়ী: সাংবাদিকদের মুখোমুখি হার্দিক। অমদাবাদে। পিটিআই

প্রত্যয়ী: সাংবাদিকদের মুখোমুখি হার্দিক। অমদাবাদে। পিটিআই

অমদাবাদের ফ্ল্যাট থেকে বেরনোর সময় ভরত পটেল বলেছিলেন, ছেলে একদিন ‘বড়াপ্রধান’ বা প্রধানমন্ত্রী হবে।

বাবা ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবেনই। তবে আজ ভরতের ছেলে হার্দিক পটেল বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। ২০১৯ বা তার পরেও গুজরাতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন তিনি। ‘‘আমার তো মাত্র ২৩ বছর বয়স। রাজনৈতিক জীবন পুরোটাই বাকি’’— হার্দিকের মাথায় থামার কোনও ভাবনা নেই।

হার্দিকের সমর্থন সত্ত্বেও গুজরাতে কংগ্রেস হেরেছে ঠিকই। কিন্তু পাতিদার আন্দোলনের নেতা হার্দিক বিজেপির হাঁটু কাঁপিয়ে দিয়েছেন। সংরক্ষণের দাবিতে পাতিদার আন্দোলনের ঢেউ উঠেছিল সৌরাষ্ট্র জুড়ে। গোটা সৌরাষ্ট্রেই বিজেপির দুর্গে ধস নামিয়েছেন হার্দিক। মধ্য গুজরাতে নিজেদের পুরনো আসন হারিয়েও হার্দিকের হাত ধরেই সৌরাষ্ট্র-কচ্ছে আসন বাড়িয়েছে কংগ্রেস। গুজরাতের মাঠে কংগ্রেস-বিজেপি যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে, তার অন্যতম কৃতিত্ব এই হার্দিক পটেলেরই।

শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি। ধনী ও গরিব পটেলদের এককাট্টা করতে পারেননি তিনি। লেউভা-কড়ভা, নবীন-প্রবীণ ভোটারদের ভেদাভেদ মুছে পাতিদার ভোটকে একজোট করে কংগ্রেসের বাক্সে ফেলাটাই হার্দিকের চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই পরীক্ষায় উতরোতে পারেননি তিনি। বিরামগাঁওতে কড়ভা পটেল হাউজিং সোসাইটিতে হার্দিকের পুরনো পাড়ায় তাঁদের প্রতিবেশী হিতেন্দ্র পটেলের কথাই ফলে গেল। হিতেন্দ্র বলেছিলেন, সব পাতিদাররা হার্দিকের কথায় কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। গত দু’দশকে অনেকেই বিজেপির থেকে উপকৃত হয়েছেন।

হয়েছেও তাই। সুরাত-মেহসানার মতো পাতিদার অধ্যুষিত এলাকাতেও বিজেপি জিতেছে। তা দেখিয়েই আজ অমিত শাহ মাছি তাড়ানোর মতো পাতিদার আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পাটিল সতর্ক করেছেন, ‘‘সৌরাষ্ট্র নিয়ে ভাবতে হবে। কৃষকদের সমস্যায় চোখ বুজে থাকলে চলবে না।’’

হার্দিক নিজেও ভোটের ফলে হতবাক। সুরাতে তাঁর সভায় লাখো লোকের ভিড় হয়েছিল। তা হলে ভোট পড়ল না কেন— উত্তরের খোঁজে হার্দিক। ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বলছেন, ‘‘বলতে পারেন, হার্দিক কা জাদু নেহি চলা। কিন্তু কোটি কোটি লোকের আন্দোলন কি ভুল ছিল?’’ দেরি না করে ঘোষণা করে দিয়েছেন, ‘‘আবার সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হবে।’’ বিজেপির দুর্বল জায়গা— গ্রামে আরও ধাক্কা দিতে ফসলের ন্যায্য দাম, ঋণ মকুব নিয়েও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হার্দিক।

গুজরাতের জনসংখ্যার ১২ শতাংশ পাতিদার। অন্তত ৬০টি আসনে পাতিদাররাই নিয়ন্ত্রক। বিজেপির কেশুভাই পটেলের পরে বর্তমান গুজরাতে পাতিদার নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তায় এই মুহূর্তে হার্দিকের ধারেকাছে কেউ নেই। তাই কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, হার্দিক ২০১৯-এর লোকসভা ভোটেও রাহুলের রণনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। কিন্তু অমিত শাহ বুঝিয়েছেন, হার্দিককে গুরুত্ব না দিয়ে ভোঁতা করে দেওয়াটাই তাঁদের উদ্দেশ্য। তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীদেরও ভোটের আগে ভাঙিয়ে নিয়েছে বিজেপি। না হলে কী হত, বলা কিছুটা কঠিন।

হার্দিক হাসছেন। প্রথম লড়াইয়ে হারের ধুলো ঝেড়ে ফেলতে বলছেন, ‘‘আমার তো কোনও রাজনৈতিক দলই নেই। কোনও দলের পদাধিকারীও ছিলাম না।’’ তাঁর ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি— ‘‘ভোটের ফল যা-ই হোক, ভিতুর মতো ঘরে বসে থাকব না। গ্রামে গ্রামে ঘুরব। গুজরাতের ভোটাররা সচেতন হচ্ছেন। আরও সচেতন করতে হবে।’’

Gujarat Results Hardik Patel Patidar হার্দিক পটেল Congress BJP Gujarat Assembly Election 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy