Advertisement
E-Paper

‘আম্মার আত্মার’ নির্দেশ, তাই ধ্যান সেরে শশির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ পনীরের!

রাত তখন ন’টা। চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে জয়ললিতার স্মৃতিসৌধে হঠাৎ হাজির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম। টানা চল্লিশ মিনিট সেখানে বসে ধ্যান করলেন। তার পর চোখ মুছে বাইরে এসে দাঁড়ালেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২২
জয়ললিতার সমাধিস্থলের সামনে ধ্যানে বসেছেন পনীরসেলভম। মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে। ছবি:পিটিআই।

জয়ললিতার সমাধিস্থলের সামনে ধ্যানে বসেছেন পনীরসেলভম। মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে। ছবি:পিটিআই।

রাত তখন ন’টা। চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে জয়ললিতার স্মৃতিসৌধে হঠাৎ হাজির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম। টানা চল্লিশ মিনিট সেখানে বসে ধ্যান করলেন। তার পর চোখ মুছে বাইরে এসে দাঁড়ালেন।

তত ক্ষণে বাইরে ভিড় জমে গিয়েছে। এসে গিয়েছে সংবাদমাধ্যমও। সব প্রশ্নের জবাব দিতে যেন তৈরিই ছিলেন পনীর। বললেন, ‘‘বিবেকের দংশনেই এখানে এসেছি। আম্মার আত্মাই আমাকে দলের কর্মী ও দেশের মানুষকে কিছু সত্যি কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন।’’

কী সেই সত্যি?

পনীরসেলভম দাবি করেন, ‘আম্মা’ তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন। এখন তাঁকে জোর করে সরানো হচ্ছে। আম্মার মৃত্যুর পরে শশিকলা শিবিরও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হতে অনুরোধ করেছিল। অথচ তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই রাজস্বমন্ত্রী আর বি উদয়কুমার ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শশিকলার নাম ভাসিয়ে দেন। শশিকলার বাড়িতে পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকে তাঁকে সরতে বলা হয়। প্রশ্ন তুললে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ভয়ও দেখানো হয়। এ সবই অবশ্য পনীরের দাবি। তামিলানাড়ুবাসী শুধু দেখেছিলেন, শশিকলা প্রথমে দলের রাশ হাতে নিলেন। তার পরেই হাত বাড়ালেন। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের দিকে। পনীর উচ্চবাচ্য না করে পদত্যাগ করলেন।

আজ কিন্তু সেই পনীর সুর পাল্টে বলছেন, ‘‘দলের কর্মীরা আমার সঙ্গে থাকলে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেব।’’ পনীরের এই বোমার পরে তড়িঘড়ি দলের নেতা-বিধায়কদের বৈঠক ডাকে শশিকলা শিবির। জারি হয় হুইপও। শশীর বাড়িতে বিধায়কদের এক দল জড়ো হলে সেখানে পনীরকে দলের কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারিত করা হয়।

এডিএমকে শিবিরের গুঞ্জন, দুর্নীতি মামলার রায় বেরনোর মুহূর্তে শশিকলার আসন কিছুটা টলোমলো দেখেই ফোঁস করেছেন পনীর। এ দিন দিনভর দফায় দফায় শশীকে নিশানা করেছেন জয়ললিতার ভাগ্নি দীপা জয়কুমার ও প্রবীণ নেতা পি এইচ পান্ডিয়ান। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ফোরক অংশই যেন রাতের জন্য তুলে রেখেছিল শশী-বিরোধী শিবির।

শশীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হতে পারে আগামিকালই। এই পরিস্থিতিতে দলে বিদ্রোহের ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বিকল্প নাম নিয়ে জল্পনা দিল্লিতেও। গত কালই নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও। শশিকলার বিরুদ্ধে মামলার গুরুত্ব খতিয়ে দেখে বিজেপি নেতাদের ধারণা, তিনি শীর্ষ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, পনীরসেলভম গত কাল দিল্লিতে মোদী সরকারের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। তাই তাঁর বিদ্রোহের পিছনে দিল্লির মদত থাকতে পারে। হাওয়া বুঝে শশিকলার বদলে তাঁর স্বামী এম নটরাজন বা লোকসভার ডেপুটি স্পিকার তথা এডিএমকে নেতা এম থাম্বিদুরাইকে মুখ্যমন্ত্রী করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। বিরোধী দল ডিএমকে-র নেতা স্ট্যালিন আবার বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে যারা পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ক়ড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা গোটা ঘটনায় বিজেপির হাত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল শশিকলার শপথগ্রহণ পিছিয়ে দিলেন। তার পরেই বিদ্রোহ করলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী আর একটি রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে সরানোর চেষ্টা করছেন না তো?’’

Panneerselvam jayalalitha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy