Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা, বলল ভারত

আগে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি। তার পর চলতে পারে কূটনৈতিক আলোচনা। আজ পাকিস্তান নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এ কথা বুঝিয়ে দিলেন বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাস-হামলার পর যদি প্রশ্ন করা হয়, জঙ্গি আক্রমণ নাকি কূটনৈতিক দৌত্য, সরকারের অগ্রাধিকার এখন কোনটা? আমার মনে হয়, উত্তরটা খুবই সহজ।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ১৯:১৯
Share: Save:

আগে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি। তার পর চলতে পারে কূটনৈতিক আলোচনা।

আজ পাকিস্তান নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এ কথা বুঝিয়ে দিলেন বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাস-হামলার পর যদি প্রশ্ন করা হয়, জঙ্গি আক্রমণ নাকি কূটনৈতিক দৌত্য, সরকারের অগ্রাধিকার এখন কোনটা? আমার মনে হয়, উত্তরটা খুবই সহজ।’’

গত কাল থেকে শুরু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগ ও ভূ-রাজনীতি সংক্রান্ত একটি তিন দিনের আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্র — ‘রাইসিনা ডায়লগ’। উপস্থিত অতীত এবং বর্তমানের রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মামুদ আলি, আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারতুঙ্গা প্রমুখ। রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও। এই সম্মেলনে শুধু ভারতীয় কর্তার বক্তব্যেই নয়, প্রায় প্রত্যেকের বক্তৃতাতেই উঠে এসেছে সন্ত্রাসদমন প্রসঙ্গ। কেউ নাম করে, কেউ নাম না-করে তুলেছেন পাকিস্তানের প্রসঙ্গ। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতি না হলে যে দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক অর্থনৈতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার হাল ফিরবে না, এ ব্যাপারে সরব হয়েছেন প্রায় প্রত্যেকেই।

আরও পড়ুন- ভারতীয় রেলের সাইট হ্যাক করে জেহাদের ডাক দিল আল কায়েদা

আফগানিস্তানে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা, পাল্টা হামলায় আইটিবিপি

পঠানকোট-কান্ডের পর অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রয়েছে প্রস্তাবিত ভারত-পাকিস্তান বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক। জইশ নেতা মাসুদ আজহার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ ভারত ইসলামাবাদের হাতে তুলে দেওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি নওয়াজ সরকার। আজ বিদেশসচিবের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, পঠানকোট-সন্ত্রাস নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক কোনও ব্যবস্থা পাকিস্তান না নেওয়া পর্যন্ত বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের জন্য এগোবে না নয়াদিল্লি। পাকিস্তান প্রসঙ্গে এখনও আগ বাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ করলে (যেভাবে লাহৌরে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী), ঘরোয়া রাজনীতিতে তার ফলাফল যে ভাল হবে না, এমনটাই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলিকেও হিসেবের মধ্যে রাখা হচ্ছে।

তাঁর বক্তৃতায় আজ নাম না করে পাকিস্তানকে বিঁধেছেন জয়শঙ্কর। আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে তালিবানদের পুনরুত্থানের প্রশ্নে ইসলমাবাদের যে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে, এমনটা বরাবরই মনে করে সাউথ ব্লক। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট তথ্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রয়েছে। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে আমাদের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, শক্তি-সংযোগ, বাণিজ্য সমন্বয়ের পক্ষে প্রধান বাধা হচ্ছে এই এলাকায় পণ্য যাতায়াতের অনুমোদন।’’

পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য ইসলামাবাদের কাছে দীর্ঘ দিন দরবার করে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সাড়া তো পাওয়াই যায়নি, আফগানিস্তানের মাটিতে ভারতের বিভিন্ন সক্রিয়তাকে সব সময়েই বাঁকা চোখে দেখে এসেছে পাকিস্তান। এ ব্যাপারে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হামিদ কারজাই বলেছেন, ‘‘পাকিস্তান বরাবরই চেষ্টা করে এসেছে দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করার।’’ বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মামুদ আলির কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদের মত বিষয়গুলি বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষতি করে। আমরা এই সব চাই না। শান্তিপূর্ণ এবং সুস্থির দক্ষিণ এশিয়াই আমাদের কাম্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE