গরিবদের কথা ভেবে পাঁচ টাকার থালি তামিলনাডুতে অনেক আগেই চালু করেছিলেন আম্মা। বিগত দশ বছর ধরে তামিলনাডুর ইডরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন অন্তত ৭০ জন মানুষকে এক টাকার কুপনে পেট ভরে খাবার দিচ্ছেন ‘শ্রী এএমভি হোমলি মেস’-এর ভি ভেঙ্কটরমন। এমন ৫ টাকা, ১০ টাকায় ভরপেট থালির কথা অনেকেই শুনে থাকবেন। কিন্তু এমন কখনও শুনেছেন, কোনও রেস্তরাঁয় ভরপেট খাওয়ার পর টাকা না দিলেও চলবে? অবিশ্বাস্য হলেও খবরটা সত্যি।
সম্প্রতি কেরলের আলপ্পুঝা জেলাতে এমনই এক রেস্তোরাঁ চালু হয়েছে। যেখানে আপনি পেট ভরে খান, আর তার দামও দিন আপনার ইচ্ছে মতো। আর যদি পকেট ‘গড়ের মাঠ’ হয়, সে ক্ষেত্রে দিতে হবে না এক পয়সাও৷
‘দ্য হিন্দু’-তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই রোস্তেরাঁর নাম ‘জনকীয় ভক্ষণশালা’। জেলার সিপিএম পরিচালিত ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিট’-এর তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার মানুষকে ভরপেট খাওয়ানোই লক্ষ্য এই রোস্তেরাঁর। এমনটাই জানিয়েছেন ‘জীবনথালম’ (প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিট)-এর আহবায়ক আর রিয়াস। কেরলের স্টেট ফিনান্সিয়াল এন্টারপ্রাইজের সিএসআর ফান্ড-এর সহায়তায় এই রেস্তরাঁটি দরিদ্র এবং সাধারণ মানুষের মুখে সুলভে বা প্রয়োজনে বিনামূল্যেই দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গিয়েছে, ১১.২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে এই রেস্তোরাঁ তৈরিতে।
আরও পড়ুন: জয়ের পরে বাড়তি কোচ রাজধানীতে
জানা গিয়েছে, ‘জনকীয় ভক্ষণশালা’ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাকেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। তাই শনিবার এই রেস্তরাঁর উদ্বোধনে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী ম্যাথু টি থমাস। রেস্তরাঁর শুরুর দিন নিজের হাতেই খাবার পরিবেশন করেন অর্থমন্ত্রী।

রেস্তরাঁর তদারকিতে খোদ কেরলের অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাক।
থমাস আইজ্যাক জানিয়েছেন, এই রেস্তরাঁয় কোনও ক্যাশ কাউন্টার নেই। নেই কোনও ক্যাশিয়ারও। পরিবর্তে দরজার সামনে একটি বাক্স রাখা আছে। যেখানে পেটপুরে খেয়ে রেস্তরাঁ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে খাবারের মূল্য হিসেবে আপনার ইচ্ছে মতো টাকা দিয়ে চলে যেতে পারেন। থমাস আইজ্যাকের কথায়, “কারও যদি খাবারের দাম দেওয়ার টাকা না থাকে, সে ক্ষেত্রে তাঁর টাকা না দিলেও চলবে। খিদে পেলে চলে আসুন এখানে।”

জানা গিয়েছে, সরকারি তহবিলের সহায়তা ছাড়াও আলপ্পুঝার অনেক স্থানীয় বাসিন্দা আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আলপ্পুঝা-চেরথানা ন্যাশনাল হাইওয়ের কাছে এই রেস্তোরাঁয় একটি আধুনিক স্টিম কিচেন রয়েছে। যেখানে অনায়াসে ২০০০ জনের খাবার তৈরি করা যায়।
ছবি: কেরলের অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাকের ফেসবুক পেজ-এর সৌজন্যে।