ভারত বরাবরই বলে আসছে। এ বার বলল পেন্টাগন।
একটি রিপোর্টে পেন্টাগন জানিয়েছে, তুলনায় শক্তিশালী ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোকাবিলায় ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে আসছে পাকিস্তান। আর এই কাজে তারা ব্যবহার করছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই এই রিপোর্টে খুশি নয়াদিল্লি।
আফগানিস্তানের অবস্থা নিয়ে ছ’মাস অন্তর একটি করে রিপোর্ট দেয় পেন্টাগন। ছ’মাসের রিপোর্টে মার্কিন কংগ্রেসকে পেন্টাগন জানিয়েছে, “আফগানিস্তানে প্রতিপত্তি খোয়ানোর বদলা ও ক্রমশ ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠা ভারতীয় সেনার সঙ্গে টক্কর নিতেই বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে পাকিস্তান। ভারত ও আফগানিস্তানের সুস্থিতি নষ্ট করার লক্ষ্যেই পাকিস্তান এই কাজ করছে।”
এখন দিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক বেশ তিক্ত। সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। রবিবারই ওয়াগা সীমান্তের আত্মঘাতী হামলায় নিহত প্রায় ৬০ জন। এই অবস্থায় এই রিপোর্ট ভারতের হাতে একটি কূটনৈতিক অস্ত্র তুলে দিল। যার ফায়দা তুলতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে দিল্লি। তাই রিপোর্টেরই প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিনের গলায়। আজ ওই রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা বারবারই বলেছি ছায়াসেনাদের লেলিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তান। কারণ আফগানিস্তানে তাদের প্রভাব কমে আসছে। ভারতের উচ্চমানের সেনাবাহিনীর মোকাবিলার জন্যও এই ছায়াযুদ্ধ চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের সঙ্গেও যে পাকিস্তান যুক্ত, পেন্টাগনের রিপোর্ট তাতে সিলমোহর দিল।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার এটাও বলেছি, সন্ত্রাসবাদকে পৃথক করে দেখা অনুচিত। সভ্যতার স্বার্থেই সন্ত্রাসবাদকে অশুভ শক্তি হিসেবে দেখতে হবে।”
পাকিস্তান কেন আফগানিস্তানকে অশান্ত করতে চাইছে, তা-ও রিপোর্টে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভাল। ২০১১ সালে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিও সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী অর্থনীতি, বাণিজ্য, শিক্ষা, জনসংযোগ, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করছে দুই দেশ। কারণ ভারত মনে করে মধ্য এশিয়ার শান্তি ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আফগানিস্তানকে নিরাপদ ও স্থিতিশীল রাখতে হবে। আফগানিস্তান পুনর্গঠনে ভারতের ভূমিকা উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে “এই কারণেই পাকিস্তান আফগানিস্তানে অশান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।”
মে মাসে আফগানিস্তানের হেরাটে ভারতীয় দূতাবাসে জঙ্গি হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণের কিছু দিন আগেই সশস্ত্র জঙ্গির একটি দল এই হামলা চালায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “মোদী হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলগুলির ঘনিষ্ঠ। তাই দিল্লিকে বার্তা দিতেই হামলা চালানোর জন্য ওই সময়টিকে বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা। জুনে মার্কিন বিদেশ দফতর জানিয়েছিল, লস্কর-ই-তইবা ওই হামলা চালিয়েছিল।” হামলার কড়া নিন্দা করে এবং ভারতের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্কের কথা জানিয়ে আফগানিস্তান বিবৃতি দিয়েছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে বিদ্যুৎ, খনি, রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পেও সাহায্য করছে ভারত। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণও দিচ্ছে তারা।