শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার এমনটাই জানাল নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত সপ্তাহে ফের ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠায় মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। তার পরে এই প্রথম সরকারি ভাবে তা নিয়ে মন্তব্য করল ভারত।
বুধবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে। হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধের প্রাপ্তিস্বীকার করেন তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমাদের কাছে অনুরোধ এসেছে। বিচারবিভাগীয় এবং অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি।” রণধীর আরও জানান, বাংলাদেশের জনতার সর্বোত্তম স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলক ভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশি জনতার সর্বোত্তম স্বার্থের কথা বলতে সে দেশের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া, স্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলির কথা বুঝিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।
হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আগেও ভারতের কাছে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সেই কূটনৈতিক বার্তারও প্রাপ্তিস্বীকার করে নয়াদিল্লি। তবে তার প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি। ওই চিঠি যখন এসেছিল, তখনও হাসিনাকে নিয়ে রায় জানায়নি বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল। তবে সম্প্রতি হাসিনাকে নিয়ে মামলার রায় দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল। তার পরেই গত শুক্রবার হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ফের ভারতকে বার্তা পাঠায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক শুক্রবারই ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে সংক্ষিপ্ত চিঠি পৌঁছে দেয় বিশেষ বাহক মারফত। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় হাইকমিশনার যেন নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রকে চিঠিটি যথাসম্ভব দ্রুত পৌঁছে দেন। রবিবার সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসে। তার পর থেকে এই প্রথম এ বিষয়ে মন্তব্য করল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
বুধবার দুপুরেই বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ফের এই কূটনৈতিক বার্তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। হাসিনাকে ফেরত চেয়ে কূটনৈতিক বার্তা প্রসঙ্গে ঢাকায় এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “কোনও উত্তর আসেনি। এত তাড়াতাড়ি উত্তর আশাও করি না আমরা।” হাসিনাকে নিয়ে ট্রাইবুনালের রায়ের পরে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন তৌহিদ।
গত বছরের জুলাই-অগস্টে বাংলাদেশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভের পরে ক্ষমতাচ্যুত হন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তার পর থেকে তিনি ভারতেই সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছেন। ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময়ে সে দেশে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয় হাসিনার বিরুদ্ধে। ওই মামলাতেই সম্প্রতি তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল।