Advertisement
E-Paper

চিনকে চাপ দিতে ভারত মহাসাগরে নোঙর নয়াদিল্লির

ভারত মহাসাগরে চিনের প্রবেশ ভারতের কাছে কাঙ্ক্ষিত নয়। এখানে ‘ভারত ও ভারত মহাসাগর’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে এই বার্তা দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ)-র ২০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভারত মহাসাগরে ভারতের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিদেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ‘রিজ’।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৭
ভুবনেশ্বরের সম্মেলনে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ সুষমা স্বরাজ ও নবীন পট্টনায়কের। শুক্রবার।—নিজস্ব চিত্র।

ভুবনেশ্বরের সম্মেলনে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ সুষমা স্বরাজ ও নবীন পট্টনায়কের। শুক্রবার।—নিজস্ব চিত্র।

ভারত মহাসাগরে চিনের প্রবেশ ভারতের কাছে কাঙ্ক্ষিত নয়। এখানে ‘ভারত ও ভারত মহাসাগর’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে এই বার্তা দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ)-র ২০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভারত মহাসাগরে ভারতের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিদেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ‘রিজ’। সেখানেই সুষমা বলেন, “ভারত মহাসাগরীয় এলাকার শান্তি, স্থিরতা ও সমৃদ্ধি রক্ষার মূল দায়িত্ব এখানকার দেশগুলিরই। যদিও ওই তল্লাটের বাইরের কিছু দেশ এই মহাসাগরে আসছে। তারাও এই প্রক্রিয়ায় সামিল হতে চায়। কিন্তু ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় স্বাধীন নৌ চলাচল ব্যবস্থা বহাল রাখার দায়িত্ব সংলগ্ন দেশগুলিকেই নিতে হবে।”

চিনের নাম উল্লেখ না করলেও এই বক্তব্যের মাধ্যমে সুষমার আসল বার্তা চিনের প্রতিই। ভারত মহাসাগরে ক্রমাগত বেজিংয়ের উপস্থিতি নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে দিল্লি। তাই ২০১৫ সালের প্রথম বিদেশ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেছে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কা, মরিশাস এবং সেসেলসকেই। মরিশাসে গিয়ে ভারত মহাসাগর নিয়ে তাঁর ‘সাগর’, অর্থাৎ ‘সেফটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজিয়ন’ তত্ত্বের কথা জানান মোদী। এর পরপরই এই সম্মেলন। এ প্রসঙ্গে অন্যতম সংগঠক ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ-এর কর্তা অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, “চিনের গুরুত্ব খর্ব করে ভারতের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার সময় এসেছে। কূটনীতিক এবং বেসরকারি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনা করে নীতি তৈরি করা হবে। ভূবনেশ্বর ঘোষণাপত্র সরকারের কাছে তুলে দেওয়া হবে।”

তবে চিনকে মোকাবিলার জন্য ভারতকে যে এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, তা জানাচ্ছেন সম্মেলনে উপস্থিত বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সরকারি আলোচনাতেই উঠে এসেছে, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে চিন ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে আগামী পাঁচ বছরে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। প্রধানমন্ত্রী সদ্য যে তিনটি দেশে সফর করে এসেছেন, সেখানেও চিনের বিনিয়োগ ভারতের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। শ্রীলঙ্কায় ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে একটি বন্দর শহর নির্মাণ করছে চিন। মরিশাসে রাস্তা, বিদ্যুতের মতো পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে চিন। মলদ্বীপের বর্তমান শাসক দল প্রকাশ্যেই চিন সম্পর্কে নরম নীতিতে চলছে। সম্মেলেনের মূল বক্তা, দেশের জয়েন্ট ইন্টেলিজেন্স কমিটির চেয়ারম্যান আর এন রবি বলেন, “ভারত মহাসাগরকে কোনও ভাবেই শক্তিশালী দেশগুলির দাবার বোর্ড বানাতে দেওয়া যাবে না। ভারত মহাসাগর শান্তির মহাসাগর হিসেবেই থাকুক।” এক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি আমেরিকাও ভারত মহাসাগরের দিকে নজর দিয়েছে। তারই পাল্টা হিসেবে চিন তাদের প্রভাব বাড়াতে চাইবে। গোয়েন্দা কর্তার মত, ভারতের প্রভুত্ব থাকলেই এই অঞ্চলে শান্তি বজায় থাকবে। বৃহৎ শক্তির লড়াইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে ভারত মহাসাগর যাতে অস্থির না হয়ে ওঠে, সেই আবেদন জানান সুষমাও।

উপকূলীয় দেশগুলির মধ্যে পাঁচটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। সেগুলি হল, মেরিটাইম সিকিউরিটি, বাণিজ্য, আবহাওয়া পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলা, উগ্রপন্থা দমন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আদানপ্রদান।

jagannath chattopadhyay bhubaneswar Naveen Patnaik Sushma Swaraj India China Indian Ocean Srilanka Prime Minister Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy