ইরানে আমেরিকার হামলার ফলে সংঘাত আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল ভারতের পাঁচ বাম দল। সিপিএম, সিপিআই, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক রবিবার যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এই সংঘাতের অভিঘাত ভারতের উপরেও পড়তে পারে। বাম দলগুলির বক্তব্য, ‘ইজ়রায়েল-আমেরিকা জোটের প্রকৃত উদ্দেশ্য ইরানকে ধ্বংস করে পশ্চিম এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এবং সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের উপরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ তৈরি করা। হামলার নেপথ্যে সামরিক-শিল্প গোষ্ঠীর স্বার্থও জড়িত।’
সংঘাত পরিস্থিতিতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির আর্থিক-সমস্যা হতে পারে বলেও মনে করছে বামেরা। তাদের তরফে এমএ বেবি, ডি রাজা, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, মনোজ ভট্টাচার্য, জি দেবরাজনেরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে তাঁদের আহ্বান, ‘অবিলম্বে আমেরিকা ও ইজ়রায়েলপন্থী বিদেশনীতি ত্যাগ করে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় নিজেদের যুক্ত করতে হবে।’
গত কালই কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী ‘দীর্ঘদিনের বন্ধু’ ইরানের উপরে আমেরিকার হামলায় নরেন্দ্র মোদী-সরকারের শুধুমাত্র শান্তির বার্তা দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। আজ বাম দলগুলির তরফ থেকেও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, ‘‘অবিলম্বে আমেরিকা ও ইজ়রায়েলপন্থী বিদেশনীতি ত্যাগ করে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় নিজেদের যুক্ত করতে হবে।’’ আমেরিকার হামলার তীব্র বিরোধিতা করে আজ কলকাতায় পথে নেমেছিল এসইউসি। ধর্মতলায় বিক্ষোভ দেখায় তারা। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ বলেছেন, “এটা শুধু ইরান নয়, এটা মানবজাতি ও বিশ্বশান্তির উপরে আক্রমণ।”
অন্য বিরোধীরাও এ দিন আমেরিকার অবস্থান নিয়ে সরব। জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী বলেন, ‘‘পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমেরিকা, খুব দুর্ভাগ্যজনক এটা। এত বড় একটা রাষ্ট্র হিসেবে ওদের উচিত ছিল শান্তির পথ খোঁজা।’’ এ প্রসঙ্গে শিবসেনার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর মন্তব্য— ‘‘আমেরিকা ভোট দিয়ে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট করেছে। কিন্তু আসলে বস হিসেবে পেয়েছে নেতানিয়াহুকে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)