পাকিস্তান-কাশ্মীর। লাগাতার দুই সমস্যায় দিশেহারা নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়ছে দু’পক্ষের সঙ্গেই আলোচনায় বসার জন্য।
সোমবার পাক সেনা এবং পাক বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট)-এর প্রত্যক্ষ মদতে যে ভাবে দুই জওয়ানের মাথা কেটে নিয়ে গিয়েছে জঙ্গিরা, তার জবাবে এখনও পর্যন্ত ‘যুদ্ধং দেহি’ অবস্থানই নিয়েছে মোদী সরকার। উরি হামলার পরে যে ভাবে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ চালানো হয়েছিল। আজ সেনার উপ-প্রধান লেফটেনান্ট জেনারেল শরথ চাঁদও বলেন, ‘‘ওদের এর ফল ভুগতে হবে।’’ জওয়ানদের চাঙ্গা করতে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত আজ নিয়ন্ত্রণ রেখায় গিয়েছেন।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ থেকে রাজনৈতিক শিবির বলছে, এই মার পাল্টা মারে সমস্যা মিটবে না। নিয়ন্ত্রণ রেখা তথা কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখতে আলোচনাই একমাত্র পথ। ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাব নিতে গিয়েই বারবার ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্র। আর এই পরিস্থিতির জন্য আঙুল উঠেছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের দিকে। প্রতিরক্ষা এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডোভালের ‘ডান্ডা মেরে সব কিছু ঠান্ডা করা’র নীতিতেই হিতে বিপরীত হচ্ছে। এটাতেই সমস্যা বেড়েছে বহুগুণ।
আজ জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল এন এন ভোহরা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহর সঙ্গে। সরকারি সূত্রের খবর, ভোহরাও কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসারই সুপারিশ করেছেন। এর আগে মেহবুবা মুফতি একই সুপারিশ করলেও কেন্দ্র তা খারিজ করে দেয়।
জওয়ানের মুণ্ড কাটার জবাব কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে আজ রাজনাথ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি আলাদা ভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য যুক্তি, ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীকে পাল্টা মারের জন্য ইচ্ছে মতো রণকৌশল তৈরির সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাল্টা মার তো পরের কথা। সেনাঘাঁটিতে একের পর এক হামলা, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক হামলা কেন রোখা যাচ্ছে না?
সমস্যা হল, অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বাড়তি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন জেটলি। যা নিয়ে কটাক্ষ করে আজ কংগ্রেসের কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘পাকিস্তান বা সন্ত্রাসবাদ— কোনওটার মোকাবিলাতেই দিশা দেখা যাচ্ছে না। পরিপূর্ণ কৌশল তখনই দেখা যাবে, যখন পূর্ণ সময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকবেন।’’
আজ ভারত ও পাকিস্তান, দু’দেশের ডিজিএমও-র মধ্যে হটলাইনে কথা হয়। জঙ্গিরা হামলা চালানোর সময় যে ভাবে ব্যাট তাদের সঙ্গে ছিল বা যে ভাবে পাক সেনা ‘কভার ফায়ারিং’ করেছে, তার নিন্দা করেছেন ভারতীয় সেনার ডিজিএমও লেফটেনান্ট জেনারেল এ কে ভট্ট। পাক সেনা অবশ্য সব অভিযোগ খারিজ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy