Advertisement
E-Paper

যুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সীমান্ত উধাও

#সেনোটুওয়ার (যুদ্ধে না বলুন), #গিভপিসআচান্স (শান্তিকে সুযোগ দিন)— সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে থাকা এই ধরনের নানা হ্যাশট্যাগই তার প্রমাণ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০১:৫২
দু’দেশের ফেসবুকের ওয়াল-এ ঘুরছে পাক শিল্পী মারিয়া খানের আঁকা এই ছবি।

দু’দেশের ফেসবুকের ওয়াল-এ ঘুরছে পাক শিল্পী মারিয়া খানের আঁকা এই ছবি।

ওঁরাও লড়াইয়ে নেমেছেন। যুদ্ধের বিরুদ্ধে ওঁদের লড়াই সামাজিক মাধ্যমে। ভারত-পাকিস্তান চাপান-উতোরের মধ্যে যুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলে অনেকেই ‘একঘরে’ হচ্ছেন। কিন্তু তবু ভারত এবং পাকিস্তান— দু’দেশেরই বহু মানুষ যুদ্ধের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছেন। #সেনোটুওয়ার (যুদ্ধে না বলুন), #গিভপিসআচান্স (শান্তিকে সুযোগ দিন)— সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে থাকা এই ধরনের নানা হ্যাশট্যাগই তার প্রমাণ।

পাকিস্তানের তরুণী শাহজ়াদি হুসেনের ফেসবুক পেজে #সেনোটুওয়ার-এর পাশাপাশি রয়েছে #অওরতআজ়াদিমার্চ (মহিলা মুক্তি মিছিল), #অওরতআজ়াদসমাজআজ়াদ (নারী মুক্তিতে সমাজের মুক্তি) হ্যাশট্যাগও। শাহজ়াদির ওয়াল-এ এক ভিডিয়ো পোস্টে একসঙ্গে নানা বয়সের মহিলা দাঁড়িয়ে ভারতের মহিলাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন, যুদ্ধে না বলার জন্য। শান্তির বার্তা দিয়ে তাঁরা বলছেন, পুরুষের শুরু করা লড়াইয়ে সব চেয়ে কষ্টের মুখে পড়তে হয় মহিলা আর শিশুদের। তাই #সেনোটুওয়ার লিখে তাঁরা বলছেন, ‘‘হামে জঙ্গ নহী, আমন চাহিয়ে, হামে বম্বস নহী, কলম চাহিয়ে (যুদ্ধ নয় শান্তি চাই, বোমা নয় কলম চাই)।’’ এর পরেই তাঁদের মুখে শোনা যাচ্ছে, ‘‘চলুন সীমান্তের দু’পারের শিশুদের জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ পৃথিবী তৈরি করি।’’ মহিলাদের হাতে ধরা কাগজে লেখা, ‘উইমেন টু উইমেন, অ্যাক্রস বর্ডার্স, #সেনোটুওয়ার’। কারও হাতে ধরা ‘উইমেন ফর পিস, #সেনোটুওয়ার’ লেখা কাগজ। এক হাজারেরও বেশি বার শেয়ার হয়েছে শাহজ়াদির এই পোস্ট। ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ দেখেছেন এই ভিডিয়ো।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ও পাকিস্তানি পড়ুয়া, দু’দেশের কর্মী এবং অধ্যাপক-অধ্যাপিকারাও দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য সরব হয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশীয় সদস্যদের মধ্যে ১৪০ জনেরও বেশি এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘ভাগ করে নেওয়া ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির কথা কী করে ভুলে যাব আমরা? দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ইচ্ছেতে দ্বিমত নেই।’’ এই সদস্যেরা দু’দেশের সংবাদমাধ্যমকে সংযমের বার্তা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, দায়িত্বের সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করুন, যুদ্ধবাজদের মতবাদ ছড়াবেন না।

যুদ্ধের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী জ়ুলফিকার আলি ভুট্টোর কন্যা ফতিমা ভুট্টো, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রাক্তন স্ত্রী রেহাম খান, অভিনেত্রী মাহিরা খানের মতো ব্যক্তিত্বও। ফতিমার টুইট, ‘যুদ্ধের জিগির তোলার চেয়ে কুৎসিত আর কিছু হয় না।’ রেহাম লিখেছেন, ‘আমি #সেনোটুওয়ার বলছি। আপনি?’

‘লজিক্যাল পাকিস্তানি’ পেজ থেকে টুইট, ‘এই উন্মাদনা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। ড্রয়িং রুমে বসে যুদ্ধের ডাক দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম ও আমাদের উপরে এর কী প্রভাব পড়বে, তা কারও মাথাতেই নেই। #সেনোটুওয়ার, #সেইয়েসটুপিস।’ ভারতের রীতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ার যুদ্ধবাজরা দুই পরমাণু অস্ত্রধর দেশকে উস্কে দিচ্ছে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। সেটা সত্যি হলে? বিশ্বের ৯০ শতাংশ মানুষ না খেতে পেয়ে মরবে। বিষয়টা বুঝুন এবং #সেনোটুওয়ার।’ ভারতের মহম্মদ আসিফ খানের টুইট, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তখনই যুদ্ধটা হওয়া উচিত, যখন দু’পক্ষের রাজনীতিবিদরা সীমান্তে গিয়ে লড়াইটা করবেন। #সেনোটুওয়ার।’

Pakistan War Social Media India Pakistan Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy