পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় নাম জড়িয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-এর। এ বার সেই টিআরএফ-কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় জুড়তে তৎপর হল ভারত। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাস দমন দফতরের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে দেখাও করেছে ভারতের প্রতিনিধিদল। তাদের দাবি, পহেলগাঁও কাণ্ডে জড়িত টিআরএফকে অবিলম্বে রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করা হোক।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাস দমন শাখার আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেছে। সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১২৬৭ আল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’-র সঙ্গে দেখা করে টিআরএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করার অনুরোধও করেছে তারা।
আরও পড়ুন:
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। লশকরের ছায়া সংগঠন টিআরএফ প্রথমে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিহানার দায় স্বীকার করেছিল। পরে আবার নিজেদের বক্তব্য পরিবর্তন করে একটি নতুন বিবৃতি প্রকাশ করে তারা। নতুন বিবৃতিতে টিআরএফ জানায়, পহেলগাঁও কাণ্ডে তাদের কোনও যোগ নেই। প্রথমে স্বীকার করেও পরে সেই দায় অস্বীকার করাকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পরিস্থিতিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলির লশকর সংক্রান্ত বেশ কিছু কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পাকিস্তানকেও। পাকিস্তানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, পহেলগাঁওয়ের ওই ঘটনায় লশকর-এ-ত্যায়বার কোনও যোগ রয়েছে কি না। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পরামর্শও দেওয়া হয় পাকিস্তানকে।
লশকর পাক জঙ্গিগোষ্ঠী। ওসামা বিন লাদেনের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে লশকরকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল ‘১২৬৭ আল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’। এর পর ২০১৯ সালে টিআরএফের উত্থান হয়। তখন সবে সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’-র অবলুপ্তি হয়েছে। ঠিক সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝেই লশকরের ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। এদের মূল লক্ষ্য ছিল, কাশ্মীরের স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো এবং ভারতের সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করা। সেই লক্ষ্য সাধনের জন্য নাশকতামূলক কাজকর্মে পুনর্বিন্যাস করার চেষ্টা শুরু করে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। এ বার তাদের রুখতে তৎপর হল ভারত।