Advertisement
E-Paper

চিনকে ছাপিয়ে সেরার তকমা ফের ভারতের

দু’বছর পূর্তির উৎসবে সাফল্যের দামামা বাজানোর নতুন বিষয় পেয়ে গেল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর্থিক বৃদ্ধির মাপকাঠিতে বিশ্বসেরার তকমা ধরে রেখেছে ভারত। গত আর্থিক বছরে বৃদ্ধির হার পৌঁছেছে ৭.৬ শতাংশে। শুধু তা-ই নয়, সব অনুমানকে ছাপিয়ে ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে বৃদ্ধির হার ৭.৯ শতাংশে পৌঁছেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০৩:৩৫

দু’বছর পূর্তির উৎসবে সাফল্যের দামামা বাজানোর নতুন বিষয় পেয়ে গেল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর্থিক বৃদ্ধির মাপকাঠিতে বিশ্বসেরার তকমা ধরে রেখেছে ভারত। গত আর্থিক বছরে বৃদ্ধির হার পৌঁছেছে ৭.৬ শতাংশে। শুধু তা-ই নয়, সব অনুমানকে ছাপিয়ে ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে বৃদ্ধির হার ৭.৯ শতাংশে পৌঁছেছে। সরকারি ভাবে আজ এ দু’টি হিসেব জানানো হয়েছে। যা স্পষ্ট করে দিয়েছে বৃদ্ধির হারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চিনকে ফের ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চে চিনের বৃদ্ধির হার ছিল সাত বছরের মধ্যে সব চেয়ে কম, মাত্র ৬.৭%।

মোদী সরকারের আশা, ভারতে এ বছর বৃদ্ধির হার ৭.৭৫% ছুঁতে পারে।

মোদী সরকারের জন্য সব থেকে খুশির খবর, বাজারে কেনাকাটা বাড়তে শুরু করেছে বলে সঙ্কেত মিলছে। আটটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার এপ্রিলে ৮.৫% ছুঁয়েছে। আগের মাসেই যা ছিল মাত্র ৬.৪%। এতে আগামী দিনে বেসরকারি লগ্নিতে গতি আসবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে এখনই আনন্দ উৎসব শুরু করে দেওয়ার কারণ রয়েছে বলেও মনে করছেন না তাঁরা। কারণ, বৃদ্ধির এই হার ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যার অনেকটাই নির্ভর করছে বর্ষার উপর। পরপর কয়েক বছর খরায় ধাক্কা খেয়েছে কৃষি। তাতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে মন্দা চলছিল। কেনাকাটাও বাড়ছিল না। অন্য দিকে, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার জেরে ভারতের রফতানি গত ১৭ মাস ধরে টানা কমছে। কারখানার উৎপাদন গত অর্থবর্ষে ৯.৩% হারে বেড়েছে। এটাও সরকারের অনুমানের থেকে কিছুটা হলেও কম। এর সঙ্গে অর্থনীতিবিদরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কর্পোরেট সংস্থাগুলির হিসেবের খাতার ছবিটা ভাল নয়। শিল্পে ক্ষমতায় তুলনায় কম উৎপাদন হচ্ছে। নতুন পুঁজির বৃদ্ধির হারও তাই কম। এই অবস্থায় দেশের বাজারে কেনাকাটা বৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির উপরেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো অনেকখানি নির্ভর করছে।

সরকার আজ দেশের অর্থনীতির উজ্জ্বল ছবিটা তুলে ধরলেও কংগ্রেস কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। তাদের দাবি, আর্থিক বৃদ্ধি মাপার পদ্ধতি বদলে দিয়ে অর্থনীতির এই সাফল্য দাবি করেছে মোদী সরকার। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার যুক্তি, ‘‘পুরনো পদ্ধতি অনুযায়ী বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের কিছু বেশি হবে।’’ যদিও অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রকের পাল্টা দাবি, গত কয়েক বছরের তুলনায় মোদী জমানায় বৃদ্ধির হার বাড়ছে। ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ছিল ৭.২%। পরের আর্থিক বছরে তা ৭.৬%-এ পৌঁছেছে। এটা হয়েছে ধাপে ধাপে। গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনে ছিল ৭.৬%। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৭.৬%। অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৭.২%। এবং জানুয়ারি-মার্চে তা পৌঁছয় ৭.৯%-এ।

অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, বৃদ্ধির হার নয়, ঘাটতির মাপেও রাজকোষের ছবি উজ্জ্বল। রাজকোষের ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৩.৯% রয়েছে। রাজস্ব ঘাটতি নেমে এসেছে ২.৫%-এ। নতুন সম্পদ তৈরি, পরিকল্পনা খাতে ব্যয়, কর বাবদ আয় সবই ঊর্ধ্বমুখী। এ দিনই অর্থসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন অশোক লাভাসা। তিনি বলেন, ‘‘এই হিসেব যথেষ্ট উৎসাহজনক। বৃদ্ধির হার আরও বাড়ানার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।’’ লাভাসা জানান, পরিকাঠামো ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয়বরাদ্দ বাড়াতে চায় সরকার। কৃষি ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে বর্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এ বছর ভাল বর্ষার আশা করছে সরকার।

সরকারের এটাও স্বস্তির কথা যে, জানুয়ারি-মার্চে কৃষি উৎপাদন গত তিন মাসের মতো কমেনি। বরং বেড়ে ১.২% হারে বেড়েছে। একে ‘ভাল খবর’ বলে মনে করছেন স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ সৌম্যকান্তি ঘোষ। তবে চিন্তার কথা হল, সরকারি লগ্নির হার কমেছে। স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ অনুভূতি সহায়ের মতে, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হল কেনাকাটায় খরচ ৭.৪% হারে বৃদ্ধি। এটা অনুমানের থেকে অনেকটাই বেশি। সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার পর কেনাকাটা আরও বাড়বে বলেই আশা করা যেতে পারে।’’

Financial Growth India china MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy