দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাকে আবার তলব করল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এই নিয়ে একই সপ্তাহে দু’বার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডাকল এস জয়শঙ্করের মন্ত্রক। মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
কী কারণে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক দিনে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে হামিদুল্লাকে তলব করে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে ভারত সরকার।
তার পরে পর পর দু’বার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে ডেকে পাঠায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশে দীপু দাসের হত্যার প্রতিবাদের আঁচ এসে পড়েছে ভারতে। মঙ্গলবার দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং কলকাতার উপদূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এভিবিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক সংগঠন। বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই আবহে প্রণয়কে তলব করে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন।
বাংলাদেশের কিছু নেতার ভারতবিরোধী মন্তব্য, ভারতের কূটনৈতিক দফতরে অভিযানের ফলে ভারতীয় হাইকমিশন এবং উপহাইকমিশনগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দানা বাঁধে। তার পরে বাংলাদেশের তরুণ নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই বাংলাদেশের একাধিক ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। অন্য দিকে, নিরাপত্তা হেতুতে ভারতেও ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন:
গত বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির। তার পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগও উঠে আসে। এই পরিস্থিতিতেই ময়মনসিংহে দীপুচন্দ্র দাস নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের এই উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার দুপুরেই বিবৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। দীপুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবি তুলেছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেছে ভারত সরকার। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। ময়মনসিংহের ঘটনা নিয়ে ভারতের বিবৃতিতে আপত্তি জানিয়েছে তারা। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করেছে, ময়মনসিংহের ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ভারতের কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বলে দেখাচ্ছেন বলে দাবি করেছে তারা।