রাফাল নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল।—ফাইল চিত্র।
বিতর্ক যতই থাকুক, রাফালেই ভরসা রাখছে কেন্দ্র। প্রথম দফায় ফ্রান্সে তৈরি ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান আসবে। তার পরে ভারতে আরও শ’খানেক রাফাল যুদ্ধবিমান তৈরি করে বায়ুসেনাকে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে আজ স্পষ্ট জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। অর্থাৎ পাঁচ রাজ্যে হার বা রাহুল গাঁধীর লাগাতার আক্রমণে পিছু হটতে নারাজ শাসক শিবির। বরং সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উজ্জীবিত সরকার ও বিজেপি পাল্টা আক্রমণে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে অমিত শাহ রাজনৈতিক ভাবে ও অরুণ জেটলি ও সীতারমন আজ সরকারের তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে সরব হন।
দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ এনে জেটলি বলেন, ‘‘ইউপিএ জমানায় যখন ওই চুক্তি হয়, তখন বিমানের দাম নিয়ে বা দর কষাকষির জন্য কমিটি ছিল না। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিও রাফাল নিয়ে কোনও বৈঠক করেনি। স্রেফ এক ব্যক্তির ইচ্ছার ভিত্তিতে চুক্তি করা হয়েছিল।’’ কে তিনি? তা ভাঙেননি জেটলি। শুধু বলেছেন, ‘‘মোদী জমানায় সরকারি স্তরে ৭৪টি বৈঠকের পরেই রাফাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়।’’
ইউপিএ জমানায় ফ্রান্সের কাছ থেকে ১২৬টি রাফাল বিমান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে পুরনো চুক্তি বাতিল করে ৩৬টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যুক্তি ছিল, ইউপিএ আমলে দশ বছরেও বিমান কেনার প্রশ্নে অগ্রগতি না হওয়ায় নতুন চুক্তি করা হয়েছে।
প্রশ্ন ওঠে, একসঙ্গে পাকিস্তান ও চিনের টক্কর নিতে হলে বর্তমানের ৩১টির বদলে অন্তত ৪২-৪৪ স্কোয়াড্রন বিমান প্রয়োজন। মাত্র দুই স্কোয়াড্রনে কী হবে? সীতারমনের জবাব, ‘‘ইউপিএ আমলে পুরোপুরি তৈরি অবস্থায় এক স্কোয়াড্রন রাফাল ভারতে আসার কথা ছিল। কিন্তু দশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বায়ুসেনার চাহিদা বুঝে দুই স্কোয়াড্রন রাফাল আসছে।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘বাকি ১০০টি ভারতেই তৈরি হবে যৌথ ভাবে। এতে অংশীদার হতে আগ্রহী সংস্থাগুলির জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে।’’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ইউরোফাইটার, বোয়িংয়ের মতো ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে।
বেশি দামে রাফাল কেনার অভিযোগে ওড়াতে এ দিন জেটলি ফের বলেন, ‘‘ইউপিএ আমলে যে বিমান কেনা হচ্ছিল, তাতে অস্ত্র লাগানোর প্রযুক্তি ছিল না। আমাদের সময়ে কেনা রাফালে তা থাকছে।’’ তিনি জানান, ফ্রান্স থেকে কেনা ৩৬টি রাফালের সঙ্গে থাকবে ‘মিটিয়োর’ ক্ষেপণাস্ত্র। শব্দের চার গুণ জোরে ছোটে। ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরের শত্রু-বিমান ধ্বংস করতে পারে। জেটলির আরও বক্তব্য, ‘‘ইউপিএ আমলে যে হাতিয়ারবিহীন রাফাল কেনা হচ্ছিল, তা আমরা ৯ শতাংশ কম দামে পাচ্ছিলাম। আর অস্ত্র নিয়ে রাফাল পাচ্ছি ২০ শতাংশ কম দামে। সে কারণেই সুপ্রিম কোর্ট মোদী সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছে।’’
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে রাফালের নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘‘মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে আমরা দায়বদ্ধ। রিলায়্যান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিমান তৈরি যাতে সফল হয়, তা আমরা নিশ্চিত করব।’’ অন্যতম মামলাকারী প্রশান্ত ভূষণ যদিও বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় পুরোপুরি ভুল। রাফাল নিয়ে আমাদের প্রচার চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy