Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডোকলাম ঘিরে শান্তির ছবিতেও আশঙ্কার ছায়া

বিরোধীদের চাপের মুখে বাদল অধিবেশনে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘পরিণত কূটনীতি’র সাহায্যে ডোকলাম সঙ্কটের নিরসন হয়েছে। এখন কোনও সমস্যা নেই। 

 ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৩
Share: Save:

বিরোধীদের চাপের মুখে বাদল অধিবেশনে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘পরিণত কূটনীতি’র সাহায্যে ডোকলাম সঙ্কটের নিরসন হয়েছে। এখন কোনও সমস্যা নেই।

কিন্তু ডোকলামে সংঘাত বিরতির এক বছর পরে স্পষ্ট, শুধু ভারত নয়, এখনও ওই ঘটনার প্রভাবমুক্ত নয় সংলগ্ন ভুটান এবং সিকিমও। গত এক বছরে ভুটানের সঙ্গে দফায় দফায় কথা হয়েছে নয়াদিল্লির। কূটনৈতিক শিবিরের খবর, হাত গুটিয়ে বসে নেই চিনও। বিদেশনীতি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রস্তাবে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সূত্রের খবর, গত শনিবার এই কমিটির তরফে মোদী সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ডোকলাম অঞ্চলে আরও বেশি সেনা নিয়োগ করতে ভুটানকে অনুরোধ করুক ভারত। সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভুটান আগাগোড়াই ভারতের পাশে আছে। ভবিষ্যতে ডোকলামে ফের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে তখনও নয়াদিল্লির সমর্থনে এগিয়ে আসবে তারা।

যদিও এমন ব্যাখ্যাকে অতি সরলীকরণ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ। এক মাস আগেই চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী কং জুয়াং ইউ তিন দিনের সফর সেরেছেন ভুটানে। রাজা জিগমে ওয়াংচুক এবং প্রধানমন্ত্রী তেসরিং তোবগে-র সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন তিনি। অক্টোবরে ভুটানে নির্বাচন। তার আগে তোবগে সরকারকে ঢেলে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেজিং। ৫৩টি দেশের সঙ্গে ভুটানের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও এখনও চিনের সঙ্গে সরকারি ভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই থিম্পুর। চিনা মন্ত্রীর সফরে আলোচনা হয়েছে ভুটানে চিনা দূতাবাস খোলা নিয়েও।

ভুটানের অর্থনীতি এখনও অনেকটাই ভারতের উপর নির্ভরশীল হলেও দ্রুত সেই জায়গা দখল করতে তৎপর ড্রাগন। ডোকলাম কাণ্ডের সময় ভুটান সরকারি ভাবে বিবৃতি দিয়ে বলেছিল, ডোকলামে একতরফা নির্মাণ শুরু করে চিন-ভুটান চুক্তি অমান্য করেছে বেজিং। কিন্তু গোয়েন্দা কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, ওই বিবৃতি দিলেও ভুটান কিন্তু চিনের হাতেও তামাক খাচ্ছে।

ডোকলাম থেকে চিনা সেনা সরলেও এখনও রয়ে গিয়েছে রাস্তা, বাঙ্কার-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো। সীমান্তবর্তী রাজ্য সিকিমের কাছে যেটা যথেষ্ট উদ্বেগের। গত বছর ডোকলাম দিয়ে সিকিমের কুপুপ পর্যন্ত ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা। গ্রামবাসীরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছিলেন। কুপুপে এখন চিনা সেনা না থাকলেও ঘরে ফেরা বাসিন্দারা শান্তিতে নেই। মালপত্র বাঁধাছাদা করে তৈরিই থাকেন তাঁরা। ভারতীয় সেনা আশ্বাস দিলেও অস্বস্তি কাটছে না।

ডোকলাম এবং কুপুপের পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ সিকিম সরকার। মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিঙ সম্প্রতি কলকাতা থেকে যাওয়া একদল সাংবাদিককে বলেন, ‘‘এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। তাই ডোকলাম বা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ তবে ডোকলাম নিয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকার বা সেনাবাহিনী কোনও খবর দেয় না বলে অনুযোগ করে চামলিং বলেন, ‘‘ডোকলাম সংক্রান্ত সব খবর সংবাদমাধ্যম থেকেই জানতে হয় আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doklam China India Bhuta Diplomacy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE