এলাকার উন্নয়নে কোনও নজর নেই ভারত সরকারের। দেশের শেষ সীমার গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের অভিযোগ অন্তত তেমনই। এমন ‘নেই রাজ্যে’ বাস করার চেয়ে প্রতিবেশী চিনের অংশ হয়ে যাওয়া ভাল। এমনই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল পিন উপত্যকায়। চিনের সাহায্য চাওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন এলাকাবাসী। অবেশেষ টনক নড়ল ভারত সরকারের। স্পিতির পিন উপত্যকার পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এলাকায় পৌঁছল ভারতীয় সেনা। সেটাও অবশ্য অনেক দেরিতে।
হিমাচল প্রদেশের লাহুল এবং স্পিতি অঞ্চলকে দেশের সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলগুলির অন্যতম বলে মনে করা হয়। দুর্গম পাহাড়-পর্বত-হিমবাহ-খাদ ডিঙিয়ে উন্নয়নের পা সহজে পড়ে না সেখানে। সেই স্পিতি এলাকার মধ্যে আরও দুর্গম হল পিন উপত্যকা। ফলে পিন উপত্যকার গ্রামগুলির অবস্থা বেশ করুণ। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। চিন সীমান্তে অবস্থিত এই সব পাহাড়ি গ্রামে কোনও এক কালে রাস্তা তৈরি হয়েছিল। সেই শেষ। তার পর কত বছর সেখানে অ্যাসফল্টের প্রলেপ পড়েনি, বলা শক্ত। এমন জরাজীর্ণ অবস্থার প্রতিকার চেয়ে বার বার সরকারের কাছে দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই পিন উপত্যকায় চিন-পন্থী আওয়াজ উঠতে শুরু করেছিল। বছর দু’য়েক আগে থেকেই সেখানকার বাসিন্দারা হুমকি দিতে শুরু করেন, ভারত সরকার যদি দুর্গমতার দোহাই দিয়ে এলাকার উন্নতি না করে, তা হলে পিন উপত্যকার মানুষ চিনের সাহায্য চাইবে।
দু’বছর আগে ওঠা এই আওয়াজ ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল। অবশেষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পিন উপত্যকার পরিকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব। পিন উপত্যকার রাস্তাঘাট, সেতু এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন সেনাবাহিনীই করবে বলে বাহিনী সূত্রে ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়েস্টার্ন কম্যান্ডের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পিন উপত্যকায় ‘সহায়তা ক্যাম্প’ আয়োজন করে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং গবাদিপশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চলেছে সেনা।
ইতিমধ্যেই অবশ্য সেনাবাহিনীর বিশেষ কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে পিন উপত্যকায়। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, এলাকায় গ্রামবাসীদের ও সেনাকর্মীরা মিলে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করেছেন। বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিলি করা হয়েছে। সরকারের প্রতি এলাকাবাসীর আস্থা ফেরানোর সব রকম চেষ্টা সেনাকর্তারা করছেন। ‘সহায়তা ক্যাম্প’ আয়োজিত হলে প্রায় ৪০০ গ্রাম উপকৃত হবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy