Advertisement
E-Paper

ভূস্বর্গে জমি উদ্ধারে সেনার ‘কাম ডাউন’

নব্বইয়ের দশকে জঙ্গি উপদ্রবের চরম সময়েও ইদে কার্ফু জারি হয়নি ভূস্বর্গে। নিষিদ্ধ হয়নি বড় জমায়েত। তাতেও শেষরক্ষা হল না। ইদের দিনেও ভূস্বর্গে ঝরল রক্ত। বাহিনী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত হলেন তিন জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৮

নব্বইয়ের দশকে জঙ্গি উপদ্রবের চরম সময়েও ইদে কার্ফু জারি হয়নি ভূস্বর্গে। নিষিদ্ধ হয়নি বড় জমায়েত। তাতেও শেষরক্ষা হল না। ইদের দিনেও ভূস্বর্গে ঝরল রক্ত। বাহিনী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত হলেন তিন জন।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে দক্ষিণ কাশ্মীরে সরকারের কর্তৃত্বই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাই সেই এলাকায় ‘অপারেশন কাম ডাউন’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে সেনা। এরই মধ্যে পুঞ্চে তিন দিন ধরে চলা জঙ্গি দমন অভিযান শেষ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে সরকার। তাতে এক জঙ্গি নিহত হয়েছে।

ইদেও যে বিক্ষোভ বন্ধ রাখা হবে না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতারা। বরং এ দিন ‘আজাদি যাত্রা’ ও কাশ্মীরে রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরের দিকে মিছিল করার ডাক দেন তাঁরা। আজ নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে সাধারণ সভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। তাতে যোগ দেবেন ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী-সহ নানা রাষ্ট্রনেতা। তাই কাশ্মীরের অশান্তিকে বিশ্বের কাছে আরও বেশি করে তুলে ধরতেই এই মিছিলের পরিকল্পনা করেছিল হুরিয়ত। বস্তুত আজ কাশ্মীরে পরিস্থিতি জানতে অবাধ পর্যবেক্ষণের সুয‌োগ চেয়ে ভারত ও পাকিস্তানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার হাইকমিশনার জেইদ রাদ অল হুসেন।

আজ সকাল আটটা থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় বিক্ষোভ। গত দু’মাসের কায়দা মেনে বাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। শোপিয়ান জেলায় ইদের প্রার্থনার পরেই বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন বছরের চব্বিশের যুবক শাহিদ আহমেদ। পুলওয়ামার
অবন্তীপোরায় বিক্ষোভের সময়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল এসে পড়ে এক ধর্মস্থানে। তখনই সেখানে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বছর পঁয়তাল্লিশের পুলিশকর্মী জালালুদ্দিন। বান্দিপোরায় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন মুর্তাজা নামে ১৯ বছরের এক কিশোর। এ নিয়ে সাম্প্রতিক অশান্তিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১ জনে।

বিক্ষোভের জেরে দক্ষিণ কাশ্মীরের চারটি জেলার পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে গিয়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্তারা। নিয়ে বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, পুলওয়ামা, শোপিয়ান, অনন্তনাগ ও কুলগামের বিভিন্ন এলাকায় গাছ, বিদ্যুতের পোল ও পাথর ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। ব্যাটন, পাথর ও পেট্রোল বোমা নিয়ে জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তায় টহল দিচ্ছেন তাঁরা। মানুষকে বাড়ি থেকে বেরোতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাহিনীর গতিবিধি।

এই সুযোগে সীমান্ত পেরিয়ে অবাধে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের ওই এলাকায় ঢুকে পড়েছে অন্তত ১০০ জন জঙ্গি।

অবস্থা সামলাতে ওই জেলাগুলিতে অভিযানে নেমেছেন চার হাজার সেনা। সরকারি সূত্রে খবর, সিআরপিএফ ও পুলিশের সাহায্যে ওই এলাকার বন্ধ রাস্তাগুলি খোলার কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। পুলওয়ামার করিমাবাদে এই অভিযান শেষ হয়েছে। ইদের জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। আগামিকাল শোপিয়ান ও কুলগামে ফের অভিযান শুরু করবে যৌথ বাহিনী।

এরই মধ্যে প্রশাসনকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে পুঞ্চে নির্মীয়মাণ সরকারি ভবনে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ শেষ হয়েছে। ওই ভবনটির দেওয়ালে রকেট ছুড়েছিলেন জওয়ানরা। কিন্তু দেওয়াল এতই মজবুত যে তাতে কোনও কাজ হয়নি। আজ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভিতরে ঢোকার পথ তৈরি করে সেনার ইঞ্জিনিয়ার্স রেজিমেন্ট। তার পরেই লুকিয়ে থাকা শেষ জঙ্গিকে খতম করেন প্যারা কম্যান্ডোরা। রবিবার থেকে চলা এই অভিযানে মোট ৪ জন জঙ্গি খতম হয়েছে।

ইদের মেজাজের বদলে ভূস্বর্গের সঙ্গী এখন বারুদের গন্ধ।

Indian Army Kashmir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy