অসুস্থতার কারণে তৃণমূলের লোকসভার নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন নেতা তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। সম্প্রতি তিনি দেশের বাইরেও রয়েছেন ব্যক্তিগত কাজে। চলতি শীতকালীন অধিবেশনে তৃণমূলের লোকসভার সংসারের অসুখী চেহারা কিন্তু প্রকাশ্যেই চলে আসছে।
সাংসদদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ, অভিযোগ রয়েছে, চলেছে বাদানুবাদ। সূত্রের খবর, লোকসভায় অধিবেশন চলাকালীনও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। সংবিধান সদনে তৃণমূলের সংসদীয় অফিসেও সেই ক্ষোভের নিদর্শন দেখা গিয়েছে। তবে এই নিয়ে কোনও সাংসদই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি।
শুধুমাত্র হাওড়ার সাংসদ প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আজ, কিন্তু সেটা লোকসভার সংসদীয় বিষয়ে নয়। তাঁর অভিযোগ খেলার মাঠ সংক্রান্তই। রাত পোহালেই কলকাতা দেখবে লিয়োনেল মেসিকে। কিন্তু মাঠে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পাননি ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক প্রসূন। রাতে তিনি বলেন, “আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভেবেছিলাম মাঠে হাজির থাকার চিঠি আসবে। আমি শুধু নই, গৌতম সরকার, সুব্রত ভট্টাচার্য, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যদেরও ডাকা হয়নি, যা শুনেছি। আমিখুব হতাশ।”
অন্য দিকে, প্রথম বারের কয়েক জন সাংসদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকসভার বর্ষীয়ান নেতার মধ্যে বিসংম্বাদের খবরও আজ সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রের দাবি নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে দেখা করার সময় চান। জানা গিয়েছে, দলকে না জানিয়ে নিজে থেকেই রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি নিয়ে (অধিবেশন শুরুর আগেই অভিষেক নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন, দলীয় সাংসদদের সংসদীয় কাজকর্ম নিয়ে) তাঁর ক্ষোভ লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার সরাসরি জানিয়েছেন রচনাকে। বিষয়টি নিয়ে উত্তাপ বাড়ে। রচনার পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সাংসদ কাকলির ব্যবহারে হতাশা প্রকাশ করেননিজেদের মধ্যেই।
এরপর দলের লোকসভার উপনেতা শতাব্দী রায় অধিবেশন কক্ষেই এই নতুন সাংসদদের সঙ্গে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। জানা গিয়েছে, তখন যাদবপুরের সায়নী ঘোষ প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শতাব্দী এবং তাঁরমাধ্যমে কাকলির কাছেও। তিনি নাকি নারদ কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে জানিয়েছেন, কার কোন দুর্নীতির জন্য দলের মুখ পুড়েছে সব তিনিজানেন। নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, যখন সবাই দল ছেড়ে দিচ্ছিল, তিনি তৃণমূলের হয়ে কঠিন আসনে দাঁড়িয়ে জিতেছেন— এই ধরনের কথাও তাঁকে বলতে শোনা যায় বলে সূত্রের দাবি। জানা গিয়েছে, সব পক্ষই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের কাছে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)