Advertisement
১৮ মে ২০২৪
National

১৬ বছর পর অনশন প্রত্যাহার করতে চলেছেন শর্মিলা, ভোটেও দাঁড়াচ্ছেন

খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন যখন, তখন তাঁর বয়স ছিল ২৭। এখন বয়স ৪৪। প্রায় ১৬ বছর না খেয়ে কাটিয়ে অনশন প্রত্যাহার করে নিতে চলেছেন শর্মিলা। মণিপুরের এই আন্দোলনকারী নিজেই একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন এ কথা। ইরম চানু শর্মিলা জানিয়েছেন, মণিপুরের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থীও হচ্ছেন।

এ বার কি আইনসভায় ঢুকে ‘কালা আইন’ প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা করবেন শর্মিলা? —ফাইল চিত্র।

এ বার কি আইনসভায় ঢুকে ‘কালা আইন’ প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা করবেন শর্মিলা? —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ১৬:৫৭
Share: Save:

খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন যখন, তখন তাঁর বয়স ছিল ২৭। এখন বয়স ৪৪। প্রায় ১৬ বছর না খেয়ে কাটিয়ে অনশন প্রত্যাহার করে নিতে চলেছেন শর্মিলা। মণিপুরের এই আন্দোলনকারী নিজেই একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন এ কথা। ইরম চানু শর্মিলা জানিয়েছেন, মণিপুরের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থীও হচ্ছেন।

মণিপুর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে ২০০০ সালে অনশন শুরু করেছিলেন শর্মিলা। ওই আইনে উগ্রপন্থা কবলিত এলাকায় অভিযান চালানোর জন্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রায় সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যখন যেখানে খুশি হানা দেওয়া বা তল্লাশি চালানো, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে যে কোনও ব্যক্তি গ্রেফতার করা এমনকী প্রয়োজন বুঝলেই গুলি চালানোর ক্ষমতাও আফস্পা সশস্ত্র বাহিনীকে দিয়েছে। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে ২০০০ সালে সে রকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল। অসম রাইফেলসের গুলিতে সে বছর ইম্ফলে দুই শিশু সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মণিপুর। আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জোরদার হয়। ইরম চানু শর্মিলা আমরণ অনশনের কথা ঘোষণা করেন।

মণিপুরের প্রশাসন অবশ্য শর্মিলাকে অনশন চালাতে দেয়নি। তাঁকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাকে নল ঢুকিয়ে তরল খাবার দেওয়া হতে থাকে। শর্মিলার বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফে অভিযোগ আনা হয়, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। আদালত অবশ্য সে অভিযোগ মানেনি। ২০১৪ সালে শর্মিলাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয় একটি আদালত। আদালতের রায় জানার পর নিজেই নাকের নল খুলে ফেলেছিলেন শর্মিলা। তবে অনশন জারি থাকে। আবার সরকারি হাসপাতালের একটি ঘরে তাঁকে বন্দি করে নল দিয়ে খাওয়ানো শুরু হয়।

শর্মিলা এ বার ঘোষণা করলেন, ১৬ বছর ধরে চলতে থাকা অনশন এ বার তিনি প্রত্যাহার করছেন। আগামী ৯ অগাস্ট তিনি অনশন প্রত্যাহার করবেন বলেও শর্মিলা জানিয়েছেন। ইরম শর্মিলা অনশন তুলে নিতে চান শুনে মণিপুরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। শর্মিলার সমর্থক ও অনুগামীরা বলছেন, শর্মিলা অনশন চালিয়ে নিয়ে যাবেন, নাকি প্রত্যাহার করবেন, তা অবশ্যই তিনি নিজেই স্থির করবেন। কিন্তু আন্দোলনটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া জরুরি। তাই শর্মিলার অনুগামীরা জানতে ইচ্ছুক, অনশন প্রত্যাহারের পর কোনও পথে তিনি আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। বাবলু লোইতংবাম নামে এক আন্দোলনকারী বললেন, ‘‘আমরা শর্মিলার সঙ্গে কথা বলতে চাইছি। বোজার চেষ্টা করছি, ঠিক কোন পথে তিনি আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।

শর্মিলা অবশ্য সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই পরবর্তী পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মণিপুরের পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে চান। নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান বলেও তিনি জানিয়েছেন। ২০১৪ সালেই শর্মিলার সামনে রাজনীতিতে নামার প্রস্তাব এসেছিল। আম আদমি পার্টি তাঁকে টিকিট দিতে চেয়েছিল। তবে শর্মিলা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে নামলেও, তিনি যে এ বারও কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে ময়দানে নামতে চাইছেন না, শর্মিলা তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন।

অনশন তুলে নিলেও ১৫ দিন অন্তর কিন্তু আদালতে হাজিরা দেওয়া শর্মিলাকে আপাতত চালিয়ে যেতে হবে। আদালতকে শর্মিলা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি এ বার বিয়ে করতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Irom Sharmila End Fast Manipur AFSPA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE