কার সঙ্গে হাত মেলাবেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে?
বেশ কিছু দিন যাদের সঙ্গে মুখ দেখাদেখি বন্ধ, সেই বিজেপি’র দিকে কি মুখ ফেরাবেন উদ্ধব? নাকি হাত রাখবেন ‘ঘোর শত্রু’ কংগ্রেসের ‘হাত’-এ? এ কূল নয়তো ও কূল, এ ছাড়া আর কোনও কুল নেই শিবসেনা প্রধানের, যেহেতু বৃহন্মুম্বই পুরসভার মেয়র হওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য।
ক্ষমতার কুর্সির জন্য বাঘে-গরুতে একই ঘাটে জল খায়!
আর বাল ঠাকরেহীন বৃহন্মুম্বইয়ের পুরভোটে বিস্তর দৌড়োদৌড়ির পর সবচেয়ে কাছে পৌঁছেও ক্ষমতার কুর্সিতে বসার প্রয়োজনীয় সংক্যাগরিষ্ঠতার মাইলস্টোন থেকে অনেকটাই দূরে থেমে গিয়েছে শিবসেনার বিজয়রথ। ২২৭ সদস্যের পুরসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য শিবসেনার প্রয়োজন ছিল ১১৪টি আসনে জেতা। শিবসেনা পেয়েছে ৮৪টি আসন। ভোটের ফলাফলে এক নম্বর দল হলেও, তার ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি, ৮২টি আসনে জিতে।
উদ্বেগে থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ‘মাতোশ্রী’র বাড়িতে এ দিন তা বুঝতেই দেননি শিবসেনা প্রধান। উদ্ধব বলেছেন, ‘‘আমরা এখন উৎসব পালন করছি। আর ও সব আলোচনা তো চলছেই। কিছুই ঠিক করিনি।’’
বিজেপি’র তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গডকড়ী অবশ্য কোনও রাখঢাক করেননি। একটি মরাঠি টেলিভিশন চ্যানেলকে নীতীন বলেছেন, ‘‘এখন অবস্থাটা এই রকমই যে কাছাকাছি আসা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই দু’টি দলের (বিজেপি ও শিবসেনা)। তবে সিদ্ধান্তটা অবশ্যই নেবেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীস ও শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। দু’জনেই পরিণত রাজনীতিক। আমার আশা, দু’জনে সঠিক সিদ্ধান্তটাই নেবেন। সেই সম্ভাবনার রাস্তাটা আগ বাড়িয়ে খুলে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। ফলাফল ঘোষণার পরপরই ফডনবীস বলেছিলেন, ‘আমরা (বিজেপি ও শিবসেনা) একে অপরের শত্রু নই। কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা আলোচনায় বসব।’’
আরও পড়ুন- ‘আমার দেশ ছাড়ো’ বলে পরপর গুলি, আমেরিকায় হত ভারতীয় ইঞ্জিনিয়র
মহারাষ্ট্রে পুরভোটে বিজেপি’র পালে হাওয়া কী ভাবে তুলতে হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ফডনবীস। বৃহন্মুম্বই পুরসভায় ৫১টি আসন বিজেপি যে ছিনিয়ে নিতে পেরেছে, তার অন্যতম কৃতিত্ব ফডনবীসেরই। তার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে ১০টি পুরসভার মধ্যে ৮টিতেই ক্ষমতাসীন হতে চলেছে বিজেপি। নির্দল সমর্থিত বাকি পাঁচটি দল বিজেপি বা শিবসেনাকে সমর্থন করলেও সেই ভরসায় বৃহন্মুম্বই পুরসভা দু’দলের কেউই দখল করতে পারবে না।
সে ক্ষেত্রে আর একটি রাস্তা খোলা রয়েছে শিবসেনার সামনে। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানো। কংগ্রেস পেয়েছে ৩২টি আসন। কিন্তু সেটা কংগ্রেসের পক্ষে কতটা সম্মানজনক হবে, সেটাই এখন দেখার।