Advertisement
০২ মে ২০২৪
Derek O\\\' Brien

ডেরেককে বরখাস্ত নয় ঘোষণা করেও

ডেরেককে উচ্চ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। সেই সময় ধনখড়কে উত্তেজিত দেখায়। তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে তর্জনী উঁচিয়ে ডেরেকের নাম উল্লেখ করেন সভায়।

তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনক।

তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনক। — ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৩০
Share: Save:

তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে অধিবেশন কক্ষ থেকে বরখাস্ত করার কথা ঘোষণা করেও পিছিয়ে গেলেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। একই ভাবে রাজ্যসভার নেতা তথা বিজেপির মন্ত্রী পীযূষ গয়ালও ডেরেককে বরখাস্ত করার প্রস্তাবটি পাঠ করার পরেও কার্যক্ষেত্রে নরম হয়ে গেলেন। বিকেল পর্যন্ত চলল এই রাজনৈতিক নাটক।

চলতি বাদল অধিবেশনের গোড়া থেকেই চেয়ারম্যানের সঙ্গে ডেরেকের বাদানুবাদের সাক্ষী থেকেছে রাজ্যসভা। গতকাল দিল্লির অধ্যাদেশ সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনার সময়ে ডেরেক ওয়াশিং মেশিন-এর সঙ্গে মোদী সরকারের তুলনা করায় দৃশ্যতই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ধনখড়। ডেরেককে বলেন, “এ ভাবে নাটকবাজি করতে পারেন না, করলে বলার অধিকার কেড়ে নিতে হবে। আপনাকে সতর্ক করছি।” আজও রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই ধনখড়ের সঙ্গে মণিপুরের বিষয়টি নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয় ডেরেকের।

তাঁকে কক্ষ থেকে বরখাস্ত করার প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যসভার নেতা পীযূষ। তার পরে ডেরেককে উচ্চ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। সেই সময় ধনখড়কে উত্তেজিত দেখায়। তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে তর্জনী উঁচিয়ে ডেরেকের নাম উল্লেখ করেন সভায়। কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপালের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার রাজ্যসভার সদস্যেরা ওয়েলে নেমে আসেন। অধিবেশন মুলতুবি করে দেন চেয়ারম্যান, ফলে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব নিয়ে ধ্বনিভোট নিতে পারেননি তিনি।

এর পরে নাটকের মোড় ঘোরে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পীযূষ ডেরেককে ঘরোয়া ভাবে প্রস্তাব দেন, রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে আচরণের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে, তা হলেই বিষয়টি মিটে যাবে। ইতিমধ্যে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন ডেরেক। জানা গিয়েছে, মমতার নির্দেশ ছিল, সমঝোতা করার প্রশ্নই নেই। যদি সাসপেন্ড করে তো করবে। ডেরেক জানান, ক্ষমা চাইবেন না তিনি। প্রস্তুতি শুরু হয়— তাঁকে বার করে দেওয়া হলে সংসদ চত্বরে অধিবেশনের বাকি দিনগুলি আন্দোলন করা হবে। কিন্তু অধিবেশন ফের শুরু হলে ধনখড়কে নরম ভাবে বলতে দেখা যায়, যা হয়ে গিয়েছে তা পিছনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। বুঝিয়ে দেন, সাসপেন্ড করা হচ্ছে না ডেরেককে।

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই মত বদলের একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, বিজেপি কংগ্রেসকে বিরোধী জোটের মধ্যে একঘরে করার চেষ্টা করছে বিভিন্ন ভাবে। তারা বিরোধী জোটের হাতে এমন অস্ত্র তুলে দিতে চায় না যাতে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়। এ ক্ষেত্রে ডেরেককে বরখাস্ত করা হলে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরাও নতুন করে একজোট হয়ে ধর্না আন্দোলন শুরু করত। বিজেপি-র উদ্দেশ্য, তৃণমূলকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া, সংযুক্ত করা নয়। দ্বিতীয়ত, ইতিমধ্যেই আপ–এর সঞ্জয় সিংহকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তৃতীয়ত, একইসঙ্গে বৈরিতার একাধিক দরজা খুলতে চাইছে না বিজেপি। সমাজমাধ্যমে এবং বিরোধী শিবিরে ডেরেকের প্রভাবও রয়েছে।

ডেরেক আজ বলেন, বিরোধীদের রাজনৈতিক লড়াইয়ের লক্ষ্য মোদী অমিত শাহের সঙ্গে, চেয়ারের সঙ্গে নয়। ফলে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। তাঁর কথায়, “নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে বলতে চাই, আমরা তথ্য দিয়ে আপনাদের সঙ্গে লড়াই করব। সংসদের ভিতরে ও বাইরে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar Rajya Sabha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE