Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Jamia Millia Islamia

এফআইআর চেয়ে কোর্টে যাবে জামিয়া

জামিয়া-কাণ্ডের এক মাস কেটে গেলেও পুলিশের নামে এফআইআর দায়ের করা কেন সম্ভব হল না, তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল পড়ুয়াদের মধ্যে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৪
Share: Save:

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার লাইব্রেরিতে ‘পুলিশি তাণ্ডবের’ পরে কেটে গিয়েছে এক মাস। কিন্তু এখনও দিল্লি পুলিশের নামে এফআইআর দায়ের করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্‌জিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত, গত ১৫ ডিসেম্বরের ওই ঘটনার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হবে তারা। আর্জি জানাবে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে ওই হানার জন্য দিল্লি পুলিশের নামে এফআইআর গ্রহণ করতে যেন পুলিশকেই নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করতে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৫৬(৩) ধারায় নিম্ন আদালতে আবেদন জানাবে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি।

জামিয়া-কাণ্ডের এক মাস কেটে গেলেও পুলিশের নামে এফআইআর দায়ের করা কেন সম্ভব হল না, তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল পড়ুয়াদের মধ্যে। সোমবার জামিয়ার গেটে জোর করে ঢুকে উপাচার্যকে ঘেরাও করেন কয়েকশো পড়ুয়া। পুলিশের নামে এফআইআর দায়েরের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। দাবি ওঠে পরীক্ষা স্থগিত রাখারও। মঙ্গলবারই চালু হয়ে যাওয়া সিমেস্টার পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। আজ এফআইআরের জন্য আদালতের দরজায় কড়া নাড়ার কথাও ঘোষণা করলেন। একই সঙ্গে তাঁরা জানালেন, এত কিছুর মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নেওয়া কো‌চিংকে সঙ্গী করেই এ বার ইউপিএসসি-র মেনস্‌ পরীক্ষায় সফল হয়েছেন ৫৪ জন। গত বারে সংখ্যাটা ছিল ৪৩।

পুলিশ লাঠি চালানোর পর থেকেই জামিয়ার ৭ নম্বর গেটের সামনে দিনভর প্রতিবাদ চলছে। তাতে নিত্যনতুন কৌশল যোগ হয়েছে এই এক মাসে। রাস্তায় মঞ্চ বেঁধে প্রতিবাদী ভাষণ কিংবা স্লোগান তো আছেই। সেই সঙ্গে কখনও ডিটেনশন সেন্টারের আদলে খাঁচা তৈরি করা হয়েছে, তো কখনও ফুটপাথেই বই পেতে লাইব্রেরি বানিয়ে ‘পড়তে বসেছেন’ প্রতিবাদীরা। অনেক স্থানীয় মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিবাদে আসেন রোজ। নিয়ম করে। কেউ সঙ্গে মেয়েকে আনেন, তো কোনও বয়স্ক মানুষের হাতে রোজ থাকে নতুন পোস্টার। গালে-হাতে তেরঙা আঁকা প্রতিবাদের এই ভিড়ে এ দিন শামিল হয়েছিলেন পঞ্জাব থেকে আসা প্রায় চারশো কৃষকও। জামিয়ার পড়ুয়াদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি মিছিল করে শাহিনবাগের প্রতিবাদস্থলেও পৌঁছেছেন তাঁরা। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যে সমস্ত মহিলা সেখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও টানা এক মাসেরও বেশি বসে আছেন, তাঁদের জন্য এ দিন রাস্তার পাশেই রান্না (লঙ্গর) চাপিয়েছেন তাঁরা। খাইয়েছেন রুটি, ডাল, সব্জি আর ক্ষীর। এসেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকেরা।

আরও পড়ুন: পিছোতে পারে নির্ভয়ার চার দণ্ডিতের ফাঁসি

বুধবার এক দিকে জামিয়ায় পুলিশি হানার এক মাস পূর্ণ হল, অন্য দিকে দশ দিন হয়ে গেল জেএনইউ ক্যাম্পাসে দুষ্কৃতী তাণ্ডবেরও। তার সঙ্গে যুক্ত কারও এখনও কেউ আটক হয়নি। শুধু অন্যতম অভিযুক্ত কোমল শর্মাকে এ দিন চিহ্নিত করেছে পুলিশ। সার্ভার রুমে ভাঙচুর এবং ওই ঘটনার আগে পেরিয়ার হস্টেলে চড়াও হওয়ার অভিযোগে জেএনইউএসইউ প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ-সহ বেশ কিছু আন্দোলনকারীকেও চিহ্নিত করেছে।

ঐশী এ দিন জামিয়ার প্রতিবাদে শামিল হয়ে বক্তৃতা দেন। বলেন, যে ভাবে কাশ্মীরের মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে, তা কোনও ভাবেই ভুলে যাওয়া কিংবা মেনে নেওয়া যায় না। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সরকারের সরাসরি সংবিধানের উপরে আঘাত হানার চেষ্টার শুরুও কার্যত সেখান থেকে। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্কও বেধেছে যথারীতি। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন সরব হন রামজাস এবং হংসরাজ কলেজের পড়ুয়ারাও। বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করছিলেন তাঁরা। এবিভিপি-র কিছু সদস্য সেখানে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jamia Millia Islamia Police Brutality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE