বোনের খুনি মনু শর্মার সাজার জন্য দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছেন তিনি। এ বার সেই লড়াইয়ে ইতি টানতে চান নিহত মডেল জেসিকা লালের দিদি সাবরিনা। তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে চিঠিতে সাবরিনা জানিয়েছেন, জেসিকা খুন হয়েছেন প্রায় ১৯ বছর আগে। এত দিন বাদে আর মনুর প্রতি রাগ পুষে রাখতে চান না তিনি। মনুকে তিনি ক্ষমা করেছেন। এখন চাইলে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দিতে পারেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল।
১৯৯৯-র ২৯ এপ্রিল দিল্লির এক রেস্তরাঁয় মদ পরিবেশন করতে অস্বীকার করায় মডেল জেসিকা লালকে গুলি করে খুন করে সিদ্ধার্থ বশিষ্ঠ ওরফে মনু শর্মা। মনু কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী বিনোদ শর্মার ছেলে। প্রভাবশালী ও ধনী নেতার ছেলের হাতে বোনের খুনের বিচার চেয়ে লড়াইয়ে নামেন জেসিকার দিদি সাবরিনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে ২০০৬-এ মনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে জেলে থাকাকালীন সমাজসেবামূলক কাজ চালিয়ে যাওয়ায় মাস ছয়েক আগে মনুকে মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। সাবরিনা মনে করছেন, প্রায় ১২ বছর জেলে কাটিয়ে যথেষ্ট সাজা ভোগ করেছে মনু। তাই বোনের খুনির মুক্তিতে আর আপত্তি নেই তাঁর। গত মাসে তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠিও লিখেছেন তিনি।
সাবরিনা লিখেছেন, ‘‘শুনেছি জেলে থাকাকালীন অনেক ভাল কাজ করেছে মনু। বাকি বন্দিদের নানা ভাবে সাহায্য করেছে। মানুষ হিসেবে ও যে বদলেছে তার প্রতিফলন হয়েছে ওর কাজে। অনেক বছর জেলে কাটিয়েছে। এ বার ছাড়া পেতে পারে।’’ সাবরিনা এ-ও জানিয়েছেন, মনু যা শাস্তি পেয়েছে তা যথেষ্ট। তিনি নিজেই মনুকে মন থেকে ক্ষমা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওর উপর আর কোনও রাগ নেই। আমি এ বার নিজেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। খ্রিস্টধর্মের আদর্শ অনুসরণ করে আমি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি।’’ তিহাড় জেলের তরফে ‘ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ থেকে সাবরিনাকে যে সাহায্যের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা নিতে অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের সাহায্য দেওয়া হোক।’’