Advertisement
E-Paper

দেখেই পালাচ্ছে হাতি, হিড়িক তাই উট কেনার

হাতি তাড়াতে উট কিনবে ঝাড়খণ্ডের বন দফতর! হাতির হানায় জেরবার হয়ে এই অভিনব পদক্ষেপ করতে চায় রাজ্য বন দফতর। হাতির তাণ্ডবে যখন গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ, হাতিকে জঙ্গলে পাঠাতে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন বনকর্মীরা, তখন সামনে স্রেফ উট দেখেই জঙ্গলের দিকে চম্পট দিচ্ছে হাতির দল!

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫৭
অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

হাতি তাড়াতে উট কিনবে ঝাড়খণ্ডের বন দফতর!

হাতির হানায় জেরবার হয়ে এই অভিনব পদক্ষেপ করতে চায় রাজ্য বন দফতর। হাতির তাণ্ডবে যখন গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ, হাতিকে জঙ্গলে পাঠাতে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন বনকর্মীরা, তখন সামনে স্রেফ উট দেখেই জঙ্গলের দিকে চম্পট দিচ্ছে হাতির দল!

প্রথম ঘটনাটি কিছু দিন আগের। জানুয়ারি মাসে খুঁটি জেলায় একটি গ্রামে ১৪টি হাতির একটি দল তাণ্ডব চালাচ্ছিল। কিছুতেই তাদের তাড়ানো যাচ্ছিল না। সেই সময় ওই গ্রামের এক বাসিন্দার দু’টো উট হঠাত্ হাতির দলটির সামনে এসে পড়ে। গ্রামের মানুষকে অবাক করে উট দু’টিকে দেখে হাতির দলটি মুহূর্তেই জঙ্গলের দিকে পিঠটান দেয়।

তামারের ফরেস্ট অফিসার নওয়াল পাসোয়ান জানাচ্ছেন, এই ঘটনার কথা তাঁদের মনে ছিল। কয়েক দিন আগে রাঁচির বুন্ডু, তামার ও সোনাহাতু ব্লকের কয়েকটি গ্রামে এক দল হাতি রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছিল। খেতের ফসল নষ্ট করা থেকে শুরু করে বাড়িতেও হানা দিচ্ছিল তারা। এক মহিলাকে জখমও করেছিল। হাতি ঠেকাতে গ্রামবাসীরা বনকর্মীদের ডেকেছিলেন। কিন্তু তাঁদেরও নাস্তানাবুদ অবস্থা। এই সময় ওই গ্রামের পাশের জাতীয় সড়ক দিয়ে তিনটে উট নিয়ে যাচ্ছিলেন দু’জন লোক। তামার ফরেস্ট সার্কেল ডিভিশনের কর্তারা জানাচ্ছেন, আগের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই তাঁরা হাতি তাড়ানোর জন্য তিনটে উট ধার নেন। ফলও মেলে হাতেনাতে।

এ বারেও দেখা গেল, উটের মুখোমুখি হয়ে হাতির দল পিঠটান দিচ্ছে। খুঁটির ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার কে কে ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘এই দু’টি ঘটনার পরে আমরা সরকারকে প্রস্তাব দিচ্ছি, জেলার ফরেস্ট অফিসগুলোতে কম পক্ষে তিনটে করে উট কেনা হোক।’’

কিন্তু উট দেখে কেন পালাচ্ছে হাতির দল? দেশের অন্যতম হস্তি-বিশারদ, অসমের পার্বতী বরুয়ার ধারণা, একেবারে নতুন একটি জন্তুকে দেখেই বোধহয় হাতির এই আচরণ। তাঁর কথায়, ‘‘হাতির কাছে উট একটি অপরিচিত জন্তু। ঘোড়া দেখলেও ঘাবড়ে যায় হাতি।’’ ফরেস্ট অফিসার ত্রিপাঠী আবার বলছেন, ‘‘হাতির ঘ্রাণশক্তি খুব প্রবল। এমনও হতে পারে যে, উটের গায়ের গন্ধ হাতির পছন্দ নয়। তাই পালাচ্ছে।’’

একই মত প্রিন্সিপ্যাল চিফ কনজারভেটর অব ফরেস্ট প্রদীপ কুমারেরও। তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড বা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলের মধ্যে হাতিকে কখনও উটের সামনাসামনি পড়তে হয় না। তাই হাতির কাছে অপরিচিত উট। অপরিচিত বড় কোনও জন্তু দেখেই হাতি ভয় পেয়ে পালাচ্ছে বলে মনে হয়।’’ উট দেখে হাতির ভড়কে যাওয়ার কথা তাঁর ‘হাতির বই’-এ লিখেছেন ধৃতিকান্ত লাহিড়ীচৌধুরীও।

কারণ যাই হোক, উট-ফর্মুলায় দু’বার সাফল্য মেলায় এই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন হাতি-তাণ্ডবে জেরবার রাজ্যের বনকর্তারা। তবে একই ফর্মুলা দিয়ে কত দিন চালানো যাবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পার্বতীও সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘‘একই জন্তু বারবার দেখলে হাতির ভয় কিন্তু ধীরে ধীরে কেটেও যেতে পারে!’’

jharkhand elephant camel aryabhatta khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy