Advertisement
E-Paper

জেএনইউ চত্বরে তাণ্ডবে দায়ী উপাচার্যই, দাবি কংগ্রেসের

ঠিক সাত দিন আগে জেএনইউ ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়েছিল কিছু মুখোশধারী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:০২
জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

গত রবিবার জেএনইউ চত্বরে তাণ্ডবের মূল মাথা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার, দাবি করল কংগ্রেসের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল। তদন্তকারী দলের দাবি, অবিলম্বে উপাচার্যকে বরখাস্ত করা হোক। একই সঙ্গে, জগদেশ-জমানার একাধিক অধ্যাপক পদে নিয়োগ নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেসের ওই তদন্তকারী দল।

ঠিক সাত দিন আগে জেএনইউ ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়েছিল কিছু মুখোশধারী। হামলায় আহত হন জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ-সহ একাধিক পড়ুয়া ও শিক্ষক। ওই হামলার পিছনে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সংঘর্ষের ঘটনা খতিয়ে দেখতে মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেবের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের একটি দল গড়ে কংগ্রেস। তদন্ত শেষে আজ ওই দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুস্মিতা। বলেন, সে দিনের গন্ডগোলের পিছনে উপাচার্যের হাত ছিল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গোটা আক্রমণটাই পূর্ব পরিকল্পিত। যাঁরা সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ শিক্ষক-পড়ুয়া তাঁদের উপর কোনও হামলা হয়নি। বেছে বেছে সঙ্ঘ-বিরোধী পড়ুয়া-শিক্ষক ও একটি ধর্মের পড়ুয়াদের নিশানা বানানো হয়েছিল।’’ তদন্ত কমিটির মতে, গোটা পরিকল্পনাটি ছিল উপাচার্যের। তাঁর নির্দেশেই ওই হামলা চালানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আরও অভিযোগ, ২০১৬ সালে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়োগগুলি হয়েছে সেগুলি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে সেই আবেদনকারী সঙ্ঘ-মতবাদে বিশ্বাস করেন কি না তার উপরেই জোর দিয়েছেন উপাচার্য। তাই উপাচার্যের বরখাস্তের পাশাপাশি তাঁর জমানার নিয়োগ সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখার দাবিও তুলেছে ওই কমিটি।

আরও পড়ুন: শিক্ষাক্ষেত্রে ‘বাম-দূষণ’, মোদীকে চিঠি

প্রশ্ন উঠেছে ক্যাম্পাস চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার ভূমিকা নিয়েও। সুস্মিতাদের অভিযোগ, ওই নিরাপত্তা সংস্থার যোগসাজশেই বহিরাগতরা হোস্টেলে ঢুকে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছিল। ঘটনার দিন সিসিটিভি বন্ধ থাকা ও ঠিক ঝামেলার সময়ে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিটি। সুস্মিতাদের দাবি, হামলার প্রমাণ লোপাটেই সিসিটিভি ও বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। অভিযোগ, সে দিন ঝামেলার খবর থাকা সত্ত্বেও পুলিশ দেরি করে এসেছিল। এ নিয়ে উপাচার্য ও দিল্লি পুলিশের বিবৃতির মধ্যে ফারাক পেয়েছে তদন্তকারী কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, উপাচার্য বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, তিনি বিকেল সাড়ে চারটেয় পুলিশ ডেকেছিলেন। কিন্তু পুলিশ পরে জানায় তাদের ৭.৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সুস্মিতার কথায়, ‘‘সত্যি কথাটা কে বলছেন, তা সামনে আসা উচিত।’’ কমিটির দাবি, সদস্যরা তদন্তের স্বার্থে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু উপাচার্য সময় দেননি।

হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে সার্ভার রুম ভাঙচুরের অভিযোগে এ দিন ঐশী ঘোষ-সহ জেএনইউয়ের ৯ পড়ুয়ার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল, সোমবার থেকে তাঁদের জেরা করা হবে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার দফতরে। দিল্লি পুলিশের এক কর্তা জানান, ছাত্রীদের আসার দরকার নেই। তাঁরা সুবিধামতো সময় ও জায়গা বেছে নিতে পারবেন। সেখানে পৌঁছে যাবেন মহিলা অফিসারেরা। তথ্যপ্রমাণ হিসেবে ভাইরাল ভিডিয়ো, হস্টেল ওয়ার্ডেন ও নিরাপত্তারক্ষীদের বয়ান ব্যবহার করবে দিল্লি পুলিশ। ঘটনায় আরও কয়েক জনের ভূমিকা সম্পর্কে সন্দিহান পুলিশ। তাঁদেরও এ সপ্তাহেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

JNU JNU VIOLENCE JNU ATTACK Jawaharlal Nehru University M Jagadesh Kumar Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy