প্রতীকী চিত্র।
মুখে তো অনেক কিছুই বলে দেওয়া যায়। কিন্তু সেটা করে দেখানো যে কতটা মুশকিল, তা আর কেউ বুঝুন আর না বুঝুন, বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন নরেন্দ্র মোদী। ক্ষমতায় আসার আগে, তিনি বছরে এক কোটি করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিযেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কী দাঁড়াল? বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছ থেকে মোদী হিসেব তলব করেছেন। আগামী বছরের লোকসভা ভোটের জন্য মোদীর দরকার কর্মসংস্থান নামের অস্ত্র। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে যে সব পরিসংখ্যান বেরিয়ে পড়তে শুরু করেছে, তা মোদীর পক্ষে রীতিমতো অস্বস্তিকর।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ভারতে মোট ‘ওয়ার্কফোর্স’-এর প্রায় ৮০ শতাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রের। কাকে বলে অসংগঠিত ক্ষেত্র? যে ক্ষেত্রের কর্মীদের ইপিএফ কিংবা স্বাস্থ্য বিমা থাকেনা, যাঁরা কর ব্যবস্থার মধ্যে থাকেন না, তাঁদের ধরা হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সত্যি সত্যিই প্রতি বছরে এক কোটি কর্মসংস্থান হলে অবস্থাটা আমূল বদলে যেত। ৮০ শতাংশ কর্মীকে আর যা হোক কর্ম মানচিত্রের বাইরে থাকতে হত না।
বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে মোদী সরকারের দাবি, নোটবন্দি এবং জিএসটি-র সুবাতাস বইছে গোটা দেশে। নইলে কংগ্রেস কেন চার রাজ্যে আর বিজেপি কেন বাইশ রাজ্যে ক্ষমতায়? কিন্তুচাকরির বাজার নিয়ে যে ছবিটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে, তা কিন্তু মোদী সরকারকে ফেলে দিতে পারে অস্বস্তির মুখে।
আরও পড়ুন: সবই হল, মোদী ঝড় উঠবে কি কর্নাটকে?
আরও পড়ুন: কত কর্মসংস্থান হল ৪ বছরে? রিপোর্ট চাইলেন মোদী
দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ২০১৬-’১৭ সালেই দেশের ‘ওয়ার্কফোর্স’-এ নতুন করে ৭০ লক্ষ কর্মী যুক্ত হয়েছে। কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ৪.১ লক্ষ। আর এখানেই প্রশ্ন, কোথায় গেল এক কোটি চাকরি? তবে কি নতুন কর্মসংস্থানের যে কথা মোদী বলেছিলেন, সেটা কি স্রেফ ক্ষমতায় আসার জন্য ভোট পাওয়ার কৌশল মাত্র? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা বলেন, যে দেশে মানুষ যতটা স্বনির্ভর, সেই দেশ ততটাই সমৃদ্ধ। আর্থিক উন্নতির জন্য দরকার স্টার্ট আপের। কিন্তু স্বনির্ভরতার প্রচারে মোদী ষে ভাবে পকোড়া বিক্রির পরামর্শ দিচ্ছেন, বলছেন, ‘‘পকোড়া বিক্রি করেও দিনে ২০০ টাকা রোজগার করা যায়’’, তা কি সত্যিই স্বনির্ভরতার রাস্তা? নাকি চাকরি দিতে না পেরে যুবক-যুবতীদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে সেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের দিকেই? বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে চাকরির হিসেব চাইছেন মোদী। সামনের বছরের ভোটের প্রচারে তিনি এমন কিছু অস্ত্র চান, যা ভোট বৈতরণী পার করে দিতে পারে সহজেই। কিন্তু এখনও পর্ষন্ত যেটুকু তথ্য সামনে এসেছে, তা অনেকটা ঝুলির বেড়ালটার মতোই। যতক্ষণ তা ঝুলিতে থাকে, শান্তি। বাইরে এলেই অস্বস্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy