Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

লোকে হাসুক, হাল ছাড়ছেন না এই ‘ময়ূর বিচারপতি’

বিচারপতি শর্মার কথায়, ‘‘গরুর দুধের অনেক উপকার আছে। গরুর দুধ না খেলে আমরা কি বাঁচতে পারি? গোটা বিশ্ব জানে, গরুর দুধ, সেই দুধ থেকে বানানো সন্দেশ, ক্ষীরের ট্র্যাডিশনটা আমাদের দেশের কত দিনের। কত পুরনো সেই প্রথা।’’

বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মা।- ফাইল চিত্র।

বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মা।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ১৯:৪৬
Share: Save:

আগের দিন গরু থেকে ময়ূরে চলে গিয়েছিলেন। আজ, ময়ূর ছেড়ে আরও বেশি করে গরুতে ঢুকে পড়লেন রাজস্থান হাইকোর্টের সেই ‘ময়ূর বিচারপতি’ মহেশ চন্দ্র শর্মা। আর গরু, ময়ূরের কথা বলতে বলতেই তিনি বলে দিলেন, ‘‘আগে পুরাণ। তার পর বিজ্ঞান।’’
‘ব্রহ্মচারী ময়ূর’-এর চেয়ে, বৃহস্পতিবারের বারবেলায় তাঁর বেশি পছন্দের বিষয় ছিল ‘গোমাতা’। ভয়ঙ্কর বাঘকে বাদ দিয়ে নিরীহ, উপকারী গরুকে কেন ‘জাতীয় পশু’ ঘোষণা করা উচিত, এ দিন তার বেশ কয়েকটি যুক্তি দিয়েছেন বিচারপতি শর্মা।
তাই তাঁর এ দিনের বক্তব্য জুড়ে ছিল শুধুই গরুর দুধ, গোমূত্র আর গোবর। সাংবাদিকরা ছুড়েছিলেন ‘গোমাংস’-এর ‘বাণ’। কিন্তু ‘রাজনীতিক নই’, এই বর্মে তা এড়িয়ে যান বিচারপতি। তাই ‘গোমাংস’ না ছুঁয়ে এ দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া তাঁর সাক্ষাৎকারটিকে গরুর দুধ, গোমূত্র আর গোবরেই ভরিয়ে দিলেন রাজস্থান হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শর্মা! বুধবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ময়ূর বিচারপতি’ নামে ট্রোলড হচ্ছেন বিচারপতি শর্মা।
বিচারপতি শর্মার কথায়, ‘‘গরুর দুধের অনেক উপকার আছে। গরুর দুধ না খেলে আমরা কি বাঁচতে পারি? গোটা বিশ্ব জানে, গরুর দুধ, সেই দুধ থেকে বানানো সন্দেশ, ক্ষীরের ট্র্যাডিশনটা আমাদের দেশের কত দিনের। কত পুরনো সেই প্রথা।’’
এর পরেই মানুষ ছেড়ে দেবতার প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। বোঝাতে থাকেন, গরুকে কেন অত প্রয়োজন হয় দেবতাদের। বিচারপতি শর্মা বলেন, ‘‘গরু তো শুধুই আমাদের জন্য নয়। দেবতাদেরও কাজে লাগে। মন্দিরে হিন্দু দেবতাদের মূর্তির অভিষেকের সময় লাগে গরুর দুধ। হাজার হাজার লিটার গরুর দুধ লাগে শুধু দেবতাদের পুজোতেই। মানুষকে আমরা তা করতে বারণ করতে পারি না। দুধ মানুযের প্রয়োজন। দেবতাদের পছন্দের। তাই যাতে আরও বেশি করে গরুর দুধ পাওয়া যায়, আমাদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’’

আরও পড়ুন- গরু মাতা, ময়ূর ‘আজীবন ব্রহ্মচারী’, বললেন হাইকোর্টের বিচারপতি!

গরুর দুধেই সব শেষ নয়। বিচারপতি শর্মা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘গোমূত্র আর গোবর দিয়েও আমাদের অনেক উপকার হয়। তা আমাদের খুব কাজে লাগে।’’
তবে গরুকে ‘জাতীয় পশু’ ঘোষণার যে শুধু প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি, সেটাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি রাজস্থান হাইকোর্টের বিচারপতি। তাঁর ১৩৯ পাতার রায়টা সাংবাদিকদের ভাল করে পড়ে দেখতেও বলেছেন তিনি।
কিন্তু ময়ূরকে কেন ‘ব্রহ্মচারী’ বললেন তিনি?
বিচারপতি শর্মার জবাব, ‘‘যে কোনও বিজ্ঞানীকে জিজ্ঞাসা করুন বা যাঁরা পশুপালনের কাজ করেন, তাঁদের প্রশ্ন করুন। তাঁরাও একই কথা বলবেন। তার চেয়েও বড় কথা, এটা ব্রহ্ম পুরাণে লেখা রয়েছে। যা হাজার হাজার বছরের পুরনো।’’
তবে শব্দ ‘ব্রহ্ম’ না হয়ে এ দিন তাঁর গোটা সাক্ষাৎকারে গরুই হয়ে ওঠে ‘ব্রহ্ম’! আর ময়ূর ‘ব্রহ্মচারী’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE