পরিষেবা এবং যাত্রীসংখ্যার নিরিখে দেশের বৃহত্তম বিমানসংস্থা ইন্ডিগোর পরিষেবা বিপর্যস্ত। যার জেরে ভোগান্তির শিকার লক্ষ লক্ষ বিমানযাত্রী। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি ওই বিমানসংস্থাকে ছাড় দিল কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। পুরনো নির্দেশিকায় উল্লিখিত কয়েকটি বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে।
যেমন আগের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, পাইলট বা বিমানচালকদের নেওয়া ছুটিকে সাপ্তাহিক বিশ্রামের যে নির্দিষ্ট সময়সীমা, তার অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ, পাইলটরা আগাম ছুটি নিন বা না-নিন, সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বিশ্রাম দিতেই হবে তাঁদের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সংক্রান্ত নিয়মটি শিথিল করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পাইলটদের ছুটির সময়সীমাও ওই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। পাইলটদের রাতের কাজ বা নাইট সংক্রান্ত বিধিও শিথিল করছে ডিজিসিএ। সমস্যা মোকাবিলায় পাইলটদের সহযোগিতাও চেয়েছে তারা।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে পাইলট এবং বিমানকর্মীদের কাজের সময়ের মেয়াদ বেঁধে দিয়েছিল ডিজিসিএ। সংস্থার তরফে ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ নামের বিধি প্রকাশ করা হয়। ওই বছরেরই জুন মাসে ওই বিধি কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু ইন্ডিগো-সহ অন্য বিমান সংস্থাগুলির আপত্তিতেই তা বহু দিন কার্যকর করা যায়নি। নভেম্বর মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই শ্রমবিধি কার্যকর করার পরেই বিপর্যস্ত হয় ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা। কর্মী অপ্রতুলতাই এই সঙ্কটের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ নয়া বিধিতে কোনও পাইলট বা বিমানকর্মীকে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি কাজে রাখা (অন ডিউটি) রাখা যাবে না।
শুক্রবার ইন্ডিগোর ৬০০-রও বেশি বিমান বাতিল করা হয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত দিল্লি বিমানবন্দর থেকে উড়বে না ইন্ডিগোর কোনও বিমান। এমনটাই জানানো হয়েছে দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে। অন্য দিকে, সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেন্নাই বিমানববন্দর থেকেও ইন্ডিগোর কোনও বিমান ছাড়বে না। বৃহস্পতিবার সারা দিনে মোট ৫৫০টি বিমান বাতিল করেছিল ইন্ডিগো। চলতি অব্যবস্থার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রীদের কাছে আরও একবার ক্ষমাও চায় তারা। তবে তাতে যাত্রীদের ভোগান্তি কমেনি। বরং বৃহস্পতিবার সারা দিনে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে সার্বিক অব্যবস্থাই লক্ষ করা গিয়েছে। ইন্ডিগোর যাত্রীদের অভিযোগ, যথাযথ খাবার এবং আশ্রয় ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন তাঁরা। কিন্তু ঠিক কোন সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যের বিমান ছাড়বে, তা বিমানসংস্থার তরফে জানানো হচ্ছে না।