Advertisement
E-Paper

ফের অবসরে নিয়োগের পুরস্কার বিচারপতিকে

সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর নিয়েছেন বিচারপতি আদর্শকুমার গয়াল। সেই দিনই সন্ধ্যায় তাঁকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন নিযুক্ত করেছে মোদী সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৮
আদর্শকুমার গয়াল।

আদর্শকুমার গয়াল।

অবসরের সঙ্গে সঙ্গেই আরও এক বিচারপতি সরকারি পদ পেয়ে যাওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠল, মোদী সরকার কি বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা
করতে মরিয়া?

শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর নিয়েছেন বিচারপতি আদর্শকুমার গয়াল। সেই দিনই সন্ধ্যায় তাঁকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন নিযুক্ত করেছে মোদী সরকার। এ বারই অবশ্য প্রথম নয়। এর আগে অবসরের পরেই প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমকে কেরলের রাজ্যপাল নিযুক্ত করে কেন্দ্র। মে মাসে বিচারপতি আর কে অগ্রবালের অবসরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। এ বার বিচারপতি গয়ালের ক্ষেত্রে অবসরের দিনেই নতুন সরকারি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের স্পষ্ট অভিযোগ, অবসরের পরে কাজ দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। ট্যুইট করে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিচারপতি সদাশিবমকে কেরলের রাজ্যপাল করা হয়েছিল কারণ তিনি অমিত শাহকে সুরাহা দিয়েছিলেন। বিচারপতি অগ্রবাল প্রধান বিচারপতি মেডিক্যাল কলেজের মামলায় এবং সরকারকে সিবিআইয়ের বিশেষ অধিকর্তা মামলায় সুবিধা দিয়েছিলেন। আর বিচারপতি গয়াল অতীতে বিজেপির আইনজীবী শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে অবসরের দিনেই পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন নিয়োগ করা হয়েছে।’’

সব আইনজীবী বা প্রাক্তন বিচারপতিরা প্রশান্ত ভূষণের মতো এ ভাবে মুখ না খুললেও তাঁদের যুক্তি, এ বিষয়ে বিজেপির ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ানোটাই রীতিমতো আশ্চর্যের। অরুণ জেটলি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা থাকার সময় ২০১২-য় বলেছিলেন, অবসর ও তার পরে সরকারি পদে নিয়োগের মাঝে কিছু সময় থাকা উচিত। তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘অবসরের আগের রায়গুলি সব সময়ই অবসরের পরে চাকরি পাওয়ার ইচ্ছার দ্বারা প্রভাবিত হয়।’’

আরও পড়ুন: ২০১৯-এ অনিশ্চিত বিজেপির দেড়শো-ও!

মজার কথা হল, এ নিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও স্পষ্ট অবস্থান নিতে নারাজ। কারণ কংগ্রেসের আমলে কেন্দ্রে বা অন্য দল শাসিত রাজ্যেও একই ঘটনা ঘটছে। কেরলেই যেমন বাম সরকার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসরের কিছু দিনের মধ্যেই বিচারপতি অ্যান্টনি ডমিনিককে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছে।

বিচারবিভাগ অবশ্য এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি জে চেলমেশ্বর আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি অবসরের পর কোনও সরকারি পদ গ্রহণ করবেন না। একই অবস্থান নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফও। তিনি নভেম্বরে অবসর নেবেন।

অতীতে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এস এইচ কাপাডিয়া, আর এম লোধা, টি এস ঠাকুররাও একই অবস্থান নিয়েছিলেন। অবসরের পরে কোনও সরকারি পদ গ্রহণে সংবিধানে বাধা নেই। কিন্তু মাঝখানে অন্তত তিন বছরের ব্যবধান থাকা উচিত বলে অনেকেরই মত। প্রথম আইন কমিশন আবার সুপারিশ করেছিল, উচ্চ আদালতের কোনও বিচারপতিরই অবসরের পরে আর কোনও সরকারি পদ গ্রহণ উচিত নয়।

প্রবীণ আইনজীবী তথা মিজোরামের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবের যুক্তি, ‘‘অনেক সরকারি পদ রয়েছে যেখানে উচ্চ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদেরই প্রয়োজন। কিন্তু সম্প্রতি যে ভাবে অবসরের সঙ্গে সঙ্গেই বিচারপতিদের নতুন পদে নিয়োগ করা হচ্ছে, তা দৃষ্টিকটু।’’

আদর্শকুমার গয়াল Adarsh Kumar Goel NGT chairperson
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy