Advertisement
E-Paper

বিচারপতি বিলে কংগ্রেসের সায়, চাইল কিছু বদল

সংসদে একঘরে হয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিচারপতিদের নিয়োগে জাতীয় কমিশন গঠনের বিলে সায় দিতে চলেছে কংগ্রেস। এই সংবিধান সংশোধনী পাশ হলে বিচারপতিদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কলেজিয়াম ব্যবস্থার ইতি ঘটবে। তার বদলে বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ৬ সদস্যের একটি জাতীয় কমিশন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৩
Share
Save

সংসদে একঘরে হয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিচারপতিদের নিয়োগে জাতীয় কমিশন গঠনের বিলে সায় দিতে চলেছে কংগ্রেস। এই সংবিধান সংশোধনী পাশ হলে বিচারপতিদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কলেজিয়াম ব্যবস্থার ইতি ঘটবে। তার বদলে বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ৬ সদস্যের একটি জাতীয় কমিশন।

সরকার আজ বিলটি লোকসভায় পেশ করেছে। এ দিন বিতর্কও শুরু হয়েছে তা নিয়ে। সম্ভবত কালই এটি লোকসভায় পাশ হয়ে যাবে। সরকারের তরফে চেষ্টা চলছে যাতে পরশু রাজ্যসভায় এটি পাশ করানো যায়। সেটা করা গেলে ষোড়শ লোকসভায় এটাই হবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম বড় সাফল্য। সাফল্য দু’দিক দিয়ে। এক, এই বিল পাশ হলে তা বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে মাইলফলক বলেই বিবেচিত হবে। দুই, বিরোধী শিবিরের বিভিন্ন দলের সঙ্গে দৌত্য চালানো ও কংগ্রেসকে কার্যত একঘরে করে ফেলে তাদের সমর্থন আদায় করার রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিক দিয়েও এটা হবে বিজেপি নেতাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

গঠনমূলক বিরোধিতার নামে গোড়ায় বিলটির গতিরোধই করতে চেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি কৌশলে দেশ জুড়ে বিতর্ক উস্কে দেয়। প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু-সহ একাধিক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কলেজিয়াম ব্যবস্থার পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেন। অন্য দিকে বাম, তৃণমূল-সহ বাকি বিরোধীদেরও সরকার পাশে টেনে নেওয়ায় একঘরে হয়ে পড়ে কংগ্রেস। ফাঁপরে পড়ে বিলটিতে সায় দেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই তাদের। তবে সামগ্রিক ভাবে বিলে সায় দিলেও কংগ্রেস কয়েকটি ধারার সংশোধন চেয়েছে। যাতে বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রশাসনের বাড়তি অধিকার কায়েম না হয়।

বর্তমানে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়ামে থাকেন প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ সারির ৪ জন বিচারপতি। জাতীয় কমিশন এ কাজের দায়িত্ব নিলে তাতে প্রতিনিধিত্ব থাকবে প্রশাসনেরও। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও আরও দু’জন বিচারপতি ছাড়াও কমিশনের সদস্য হবেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। এই ৬ জনের মধ্যে দু’জন কারও নিয়োগ নিয়ে আপত্তি করলে কমিশনকে তা মানতে হবে। “এখানেই বড়সড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে,” বলছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ। তাঁর ব্যাখ্যা, জাতীয় কমিশনের বৈঠকে কোনও নিয়োগ-প্রস্তাব নিয়ে একা আইনমন্ত্রী আপত্তি করলে তা গ্রাহ্য হবে না। কিন্তু ওই প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর পর তিনি যদি তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠান, তখনই হবে সমস্যা। দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতির কাছে ওই প্রস্তাবটি পাঠাতে হলে কমিশনের সব সদস্যের সম্মতি লাগবে। ফলে আইনমন্ত্রী কারও নিয়োগ নিয়ে আপত্তিতে অনড় থাকলে, তাঁকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করাই যাবে না। অর্থাৎ বর্তমান চেহারায় সরকারের আনা বিলটি পাশ হতে দিলে প্রশাসনের হাতেই বিচারপতি নিয়োগের বাড়তি ক্ষমতা থেকে যাবে।

তবে এই সব প্রশ্ন তুলেও বিলটির গতিরোধ যে আর সম্ভব নয়, সেটা কংগ্রেস নেতারাও বুঝতে পারছেন। কারণ, সব রাজনৈতিক দলই বিলটিতে সায় দিচ্ছে। এমনকী, সরকারের আনা বিলটিকে এখন প্রকাশ্যেই সমর্থন করছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের একাংশ। বিচার ব্যবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তাঁরাও সরব। যদিও গত কাল শীর্ষ আদালতে এক শুনানির সময় বিচারপতি আর এম লোধা বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে বিচার ব্যবস্থার দুর্নাম করা হচ্ছে। এটা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। নইলে বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষ আস্থা হারাবেন।” তিনি এ-ও বলেন, “কলেজিয়াম ব্যবস্থা শুরু হওয়ার পর প্রথম ব্যাচে আমার নিয়োগ হয়েছিল। কলেজিয়াম ব্যবস্থা একেবারেই ব্যর্থ বলে মনে করা হলে সেই ব্যবস্থায় সব নিয়োগই ভুল বলে ধরে নিতে হয়!”

তবে প্রধান বিচারপতির এই যুক্তি রাজনীতিকরা যে শুনতে নারাজ, তা আজ লোকসভাতেই বিতর্কের সময় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। অতীতে অনেক মামলাতেই রাজনীতিকদের সম্পর্কে আদালত বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে। আজ তার উল্টোটা দেখা গেল লোকসভায়। দলমত নির্বিশেষে একাধিক সাংসদ বললেন, বিচারপতিদেরও বুঝতে হবে, তাঁরাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। এনডিএ শরিকরা তো বটেই, বিরোধী শিবিরের অন্য সব দলই আজ বিলটিতে সমর্থনের অঙ্গীকার করায় কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষে বিলটি সমর্থন করা ছাড়া আর পথ ছিল না।

তবে বিলটির পুরো কৃতিত্ব বিজেপিকে দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। তাদের অন্যতম নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “বিচার ব্যবস্থায় সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল ইউপিএ জমানায়। বিজেপিই তখন বিলটির বিরোধিতা করেছিল। আর এখন তাঁরাই বিলটি পাশ করাতে মরিয়া। অভিষেক জানান, মূল বিলটি নিয়ে কংগ্রেসের আপত্তি নেই। কিন্তু কংগ্রেস চেয়েছিল বিলটি নিয়ে আরও আলোচনা হোক।

judicial bill congress ammendment national online news support change bjp

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।