Advertisement
E-Paper

বাবার রায়ে গলদ খুঁজে ইতিহাস গড়লেন ছেলে

অতীতে বাবার দেওয়া রায় কোনও ছেলের হাতে পাল্টে গিয়েছে, এমনটা ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে বিরল এবং উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছে আইনজীবী মহল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৫:০০
ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় ও ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়

ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় ও ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়

বাবার মত ‘বাতিল’ হয়ে গেল ছেলের হাত ধরে!

ব্যাপারটা অনেকটা সেই রকমই। ব্যক্তিপরিসরের অধিকার মৌলিক অধিকার— সুপ্রিম কোর্টের নয় সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ একমত হয়ে ঐতিহাসিক এই রায় দিয়েছে। এই বেঞ্চে রয়েছেন এমন এক বিচারপতি যিনি, এই নিয়ে অতীতে তাঁর বাবারই ঘোষণা করা রায়ে ‘গুরুতর খামতি’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এবং বলেছেন, ‘‘কোনও সভ্য দেশ ব্যক্তি-স্বাধীনতার পূর্ণ দখল নিতে পারে না।’’ তিনি, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের ছেলে।

অতীতে বাবার দেওয়া রায় কোনও ছেলের হাতে পাল্টে গিয়েছে, এমনটা ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে বিরল এবং উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছে আইনজীবী মহল।

কী ছিল সেই রায়?

জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে। ইন্দিরা গাঁধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার তখন সব মৌলিক অধিকার খর্ব করেছিল। আর সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের এক বেঞ্চ। প্রাক্তন বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় সেই বেঞ্চেরই সদস্য ছিলেন। ‘এডিএম জবলপুর বনাম শিবকান্ত শুক্ল’ নামে ১৯৭৬ সালের সেই বহুচর্চিত মামলায় প্রাক্তন বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়-সহ চার বিচারপতি বলেছিলেন, ব্যক্তি-স্বাধীনতার কোনও সিলমোহর নেই। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘যখন এই অধিকার কার্যকর করা হবে, তখন এটা বোঝা অসম্ভব যে এই অধিকার সংবিধান প্রদত্ত নাকি প্রাক-সাংবিধানিক।’’ বিরোধী মত পোষণ করেছিলেন বিচারপতি এইচ আর খন্না।

আরও পড়ুন:শীর্ষ আদালতে স্বীকৃতি পেল ব্যক্তিপরিসর

বৃহস্পতিবার বাবার সেই যুক্তিই খারিজ করে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, ‘এডিএম জবলপুর’ মামলায় পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে চার বিচারপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার মধ্যে ‘গুরুতর খামতি’ ছিল। প্রাক্তন বিচারপতির এই ছেলের কথায়, ‘‘জীবন এবং ব্যক্তি-স্বাধীনতা মৌলিক অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। জীবন এবং ব্যক্তি-স্বাধীনতার পূর্ণ দখল কোনও সভ্য দেশ নিতে পারে না।’’ বাবার কথার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে নিজেকে রেখে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বক্তব্য, ‘‘কেশবনন্দ ভারতী যে ভাবে দেখিয়েছেন, ব্যক্তি স্বাধীনতা মানুষের আদিম অধিকারের মধ্যেই পড়ে। জীবন বা স্বাধীনতা— রাষ্ট্রের দেওয়া উপহারও নয়, সংবিধানও এই অধিকার তৈরি করে না।’’

‘এডিএম জবলপুর’ মামলা শুরু হয়েছিল ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্ন ঘিরেই। জরুরি অবস্থা ঘোষণার আগে দুর্নীতির দায়ে আদালত ইন্দিরা গাঁধীকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং যে ভোটে তিনি জিতে এসেছিলেন তাকে মান্যতা দিতে আপত্তি জানায়। তখন ইন্দিরা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার জন্য অনুরোধ জানান। তাতে সায় দেন রাষ্ট্রপতি।

তার পরে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭-এর মধ্যে অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই হাজার হাজার বিরোধী নেতার জেল হয়েছিল। এঁদের মধ্যে ছিলেন মোরারজি দেশাই, রাজ নারায়ণ, অটলবিহারী বাজপেয়ী, জয়প্রকাশ নারায়ণ, লালকৃষ্ণ আডবাণী প্রমুখ। সংবাদমাধ্যমের উপরেও তখন জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা।

Y.V.Chandrachud D Y Chandrachud ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy