Advertisement
E-Paper

স্পিকার সুমিত্রাকে আক্রমণ করে ক্ষমা চাইলেন কল্যাণ

পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতোই বিজেপিকে কোণঠাসা করার সুযোগ এসে গিয়েছিল তৃণমূলের সামনে। নিজের দোষে তা হাতছাড়া করলেন লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতিতে লোকসভায় এখন তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কল্যাণ। গত কাল বিজেপি সাংসদ হরিনারায়ণ রাজভারের আচরণের জেরে আজ সকালে সংসদ চত্বরে গাঁধীমূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০৪:৩৬

পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতোই বিজেপিকে কোণঠাসা করার সুযোগ এসে গিয়েছিল তৃণমূলের সামনে। নিজের দোষে তা হাতছাড়া করলেন লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতিতে লোকসভায় এখন তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কল্যাণ। গত কাল বিজেপি সাংসদ হরিনারায়ণ রাজভারের আচরণের জেরে আজ সকালে সংসদ চত্বরে গাঁধীমূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা। সেখানে দলের মহিলা সাংসদদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ছাড়াও রেলের বর্ধিত ভাড়া, মূল্যবৃদ্ধি, রেল বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার বিষয়গুলিও ছিল। পরে লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই ওয়েলে নেমে তৃণমূল সাংসদরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এই সময় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি রাজনৈতিক আক্রমণ করে বসেন খোদ স্পিকারকে। চিৎকার করে বলেন, “আপনি কি বিজেপির স্পিকার না নরেন্দ্র মোদীর স্পিকার?” উত্তাল হয়ে ওঠে বিজেপি-এনডিএ বেঞ্চ। প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলে। পরে লোকসভায় নিজের আসনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চান কল্যাণ। জানান, যা বলেছেন তার জন্য তিনি দুঃখিত।

বিজেপি সাংসদরা কল্যাণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার দাবি তুললেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কংগ্রেসের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মল্লিকার্জুন খড়্গেরা কিন্তু বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার পক্ষে বলেন। তৃণমূল কংগ্রেস-বিরোধী অবস্থানে অটল থাকলেও ভবিষ্যতে বিজেপি-বিরোধিতায় সব দলকেই এককাট্টা করতে চায় কংগ্রেস। মনে করা হচ্ছে, সে কারণেই অস্বস্তির সময়ে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস ভবিষ্যতে কক্ষ সমন্বয়ের জন্য জমি তৈরির চেষ্টা চালাল।

কল্যাণের ক্ষমা চাওয়ার পরে আর বিষয়টি নিয়ে এগোয়নি সরকার পক্ষ। তবে স্পিকার একটি বিবৃতিতে কল্যাণ বা কোনও দলের নাম না করেই সাংসদদের সৌজন্যবোধ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন সাংসদদের উদ্দেশে। বলেছেন, “গোটা দেশ আপনাদের দেখছে। সংসদে যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে এখানে পাঠিয়েছেন, সংসদে গণ্ডগোল করার জন্য নয়। কেউ যদি কোনও ভুল করে থাকেন, তা হলে অধিবেশনের মধ্যে গণ্ডগোল করে তার প্রত্যুত্তর দেওয়া ঠিক নয়।”

কল্যাণ-পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও অবশ্য নিজেদের আসনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন তৃণমূল সাংসদরা। কাকলি ঘোষ দস্তিদার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার সময় বিজেপি সাংসদের গত কালের আচরণের প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, “আমরা ন্যায়বিচার চাই। আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তার প্রতিকার চাই।” বিজেপির বেঞ্চে বসা রাজভারের দিকে তাকিয়ে কাকলি বলেন, “আমাদের বোনের মতো দেখুন। গালি দেওয়া বন্ধ করুন। যাঁরা আপনাকে ও আপনাদের এখানে পাঠিয়েছেন তাঁরা এমন আচরণ চান না।”

গত কালের ঘটনার পর সংসদের আবেগ অনেকটাই তৃণমূলের পক্ষে চলে গিয়েছিল। কিন্তু আজ স্পিকারের দিকে আঙুল তোলার পর ছবিটা একেবারে বদলে যায়। কাজে আসেনি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কাকলির আবেগদীপ্ত বক্তৃতাও। তত ক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। অনেকটাই চুপসে গিয়েছে তৃণমূলের মারমুখী আন্দোলন।

কাল যাকে নিয়ে এত হইচই সেই রাজভার আজ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি কেন মহিলা সাংসদদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে যাব। তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ আনছে। ওদের কাছে কি কোনও প্রমাণ আছে? বরং তৃণমূলের সাংসদরা আগাগোড়া নরেন্দ্র মোদীকে গালমন্দ করে যাচ্ছিলেন। আমি তার প্রতিবাদ করেছি মাত্র।”

বিজেপি সাংসদের গত কালের আচরণের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা।

kalyan banerjee apologised for misbehaviour loksabha speaker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy