Advertisement
E-Paper

কেরলের ‘ঋণ’ শুধতে ৭০০ কোটি দিতে চায় আমিরশাহি

আমিরশাহি সরকার জানিয়ে দিয়েছে, কেরলের জন্য ভারতকে ৭০০ কোটি টাকা দেবে তারা। যদিও সূত্রের দাবি, অন্য কোনও দেশের থেকে অর্থসাহায্য নিতে চাইছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৩
সাবধানে: বানভাসি কেরলে জল নামছে, তবে এখনও আটকে বহু। উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনা। পাশে স্থানীয়েরাও। মঙ্গলবার এর্নাকুলম জেলায়। ছবি: পিটিআই।

সাবধানে: বানভাসি কেরলে জল নামছে, তবে এখনও আটকে বহু। উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনা। পাশে স্থানীয়েরাও। মঙ্গলবার এর্নাকুলম জেলায়। ছবি: পিটিআই।

খবরের কাগজগুলো বিদেশি। কিন্তু তার প্রথম পাতায় কেরলের বন্যার খবরই সব চেয়ে বড় করে ছাপা। সঙ্গে পাতা-জোড়া বিজ্ঞাপন। তাতে দেশের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকার— ‘কেরলের জন্য মুক্তহস্তে দান করুন।’

ওয়েবসাইটগুলোও বিদেশি। কিন্তু তাতে সরাসরি দেখানো হচ্ছে কেরলের বন্যার ছবি। কাতারের রাস্তায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বেসরকারি উদ্যোগে চলছে পদযাত্রা। কেরল নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে। আমিরশাহি সরকার জানিয়ে দিয়েছে, কেরলের জন্য ভারতকে ৭০০ কোটি টাকা দেবে তারা। যদিও সূত্রের দাবি, অন্য কোনও দেশের থেকে অর্থসাহায্য নিতে চাইছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার।

সে অবশ্য পরের কথা। কিন্তু ভিন্‌দেশের একটি রাজ্যের জন্য একাধিক দেশ থেকে এ ভাবে সাহায্যের হাত এগিয়ে আসার নজির বড় একটা নেই। কারণটা কী? উপসাগরীয় দেশগুলোর বক্তব্য, তাদের উন্নতিতে মালয়ালিদের অবদান অনস্বীকার্য। এ বার সময় এসেছে সেই ঋণ ফিরিয়ে দেওয়ার।

প্রায় ৩০ লক্ষ ভারতীয় আমিরশাহিতে বসবাস এবং চাকরি করেন। তাঁদের আশি শতাংশই কেরলের মানুষ। দুবাইয়ের শাসক শেখ মহম্মদ বিন রশিদ স্বয়ং লিখেছেন, তাঁর দেশের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন কেরলের মানুষেরা। কেরলের জন্য রাতারাতি ‘এমিরেটস রেড ক্রেসেন্ট’ নামে বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি গঠন করেছেন আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আলি নাহান। একাধারে ইংরেজি এবং মালয়ালিতে লাগাতার টুইট করে চলেছেন আরব রাষ্ট্রনেতারা। টুইটারেই তাঁদের ধন্যবাদ দিয়েছেন মোদী। আবু ধাবির যুবরাজের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর।

আরও পড়ুন: রান্না মাদ্রাসায়, খাওয়া গির্জায়, বিশ্রাম মন্দিরে

কাতার এয়ারওয়েজ টুইট করে একটি বিমানের ছবি দিয়েছে। ত্রাণ এবং পুর্নগঠন সামগ্রীতে ঠাসা সেটি। সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স এবং ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেছেন আমিরশাহির কর্তারা। বৈঠকে বলা হয়েছে, জল সরলেই রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে কেরলে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির প্রতিনিধিরা কথা দিয়েছেন, তাঁরা যথাসম্ভব করবেন। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের দাবি, অর্থসাহায্য নিয়ে সরকারি প্রস্তাব এখনও আসেনি। সুনামির সময়েও বিদেশি অর্থসাহায্য নেয়নি দিল্লি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উপসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের প্রধান সেতুই হল কেরল। এবং এই বিপর্যয়ে প্রমাণ হল, সেতুটিকে ডুবতে দিতে নারাজ তারা।

কেরলের জন্য ৫০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। কেরল সরকারের চাহিদা যদিও ২৬০০ কোটির। কিন্তু কেন্দ্রের শীর্ষ সূত্রের যুক্তি, ইচ্ছেমতো অর্থ দাবি করলেই হবে না। তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে জানাতে হবে, বন্যার ফলে কতখানি ক্ষতি হয়েছে। আজই মোদীকে চিঠি লিখে আরও অর্থসাহায্যের দাবি জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। কিন্তু এক মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ৫০০ কোটি টাকা ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা মতো ১০০ কোটি মঞ্জুর করা হয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সাহায্য। রাজ্যকে ক্ষতির পরিমাণ জানাতে হবে।’’ যেখানে আমিরশাহি ৭০০ কোটি টাকা সাহায্য করছে, সেখানে কেন্দ্র মাত্র ৫০০ কোটি দিচ্ছে কেন? ওই মন্ত্রীর জবাব, ‘‘ওদের মাথা-পিছু আয়ও অনেক বেশি।’’

Kerala Floods Central Government UAE Pinarayi Vijayan Narendra Modi নরেন্দ্র মোদী The United Arab Emirates
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy