Advertisement
E-Paper

যৌনকর্মী কোনও পণ্য নন! কেউ যৌনপল্লিতে গেলে তাঁকে খদ্দের বলা যায় না! কেন মামলা দায়ের হতে পারে? স্পষ্ট করল আদালত

নারীপাচারের মামলায় ২০২১ সালে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল তিরুঅনন্তপুর থানার পুলিশ। যৌনপল্লিতে এক মহিলার সঙ্গে তাঁকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:২৮
কোনও যৌনকর্মীকে ‘পণ্য’ বলে কলঙ্কিত করা যায় না, স্পষ্ট করল কেরল হাই কোর্ট।

কোনও যৌনকর্মীকে ‘পণ্য’ বলে কলঙ্কিত করা যায় না, স্পষ্ট করল কেরল হাই কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

যৌনপল্লিতে যিনি কাজ করছেন, সেই যৌনকর্মী কোনও ‘পণ্য’ নন। ফলে যৌনপল্লিতে যাওয়া কোনও ব্যক্তিকে ‘খদ্দের’ বলা যায় না। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে কেরল হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “যখন কোনও ব্যক্তি কোনও পণ্য বা পরিষেবা কেনেন, তখন তাঁকে ‘খদ্দের’ বলা যায়। কিন্তু এক জন যৌনকর্মীকে ‘পণ্য’ বলে অপমান করা যায় না।”

নারীপাচারের মামলায় ২০২১ সালে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল তিরুঅনন্তপুর থানার পুলিশ। যৌনপল্লিতে এক মহিলার সঙ্গে তাঁকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। অভিযুক্ত সেই সময় বিবস্ত্র অবস্থায় ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। মানবপাচার সংক্রান্ত মামলার বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল ধৃতের বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সম্প্রতি ওই মামলারই শুনানি চলছিল কেরল হাই কোর্টের বিচারপতি ভিজি অরুণের এজলাসে। সেখানে মামলাকারী অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে এই মামলা করা যায় না। কারণ, তাঁর মক্কেল ওই যৌনপল্লিতে একজন ‘খদ্দের’ হিসাবেই গিয়েছিলেন।

কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবীর যুক্তি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি। হাই কোর্টের বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যখন কেউ কোনও পণ্য বা পরিষেবা কেনেন, তখনই তাঁকে ‘খদ্দের’ বলা যায়। কিন্তু কোনও যৌনকর্মীকে ‘পণ্য’ বলে কলঙ্কিত করা যায় না। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, মানবপাচারের মাধ্যমে তাঁদের (যৌনকর্মীদের) এই পেশার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। অন্যদের শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে তাঁদের নিজেদের দেহ উৎসর্গ করতে বাধ্য করা হয়। এ ক্ষেত্রে নিজের দৈহিক চাহিদা পূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি টাকা দিচ্ছেন। সেটির একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে যৌনপল্লির মালিকের কাছে।

কেরল হাই কোর্টের বিচারপতি অরুণের একক বেঞ্চ জানিয়েছে, যৌনপল্লিতে যাওয়া কোনও ব্যক্তি যে টাকা দিচ্ছেন, তার মাধ্যমে তিনি কোনও যৌনকর্মীকে নিজের চাহিদা অনুসারে কাজ করতে বাধ্য করছেন বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। ফলে ওই ব্যক্তি টাকা দিয়ে কোনও যৌনকর্মীকে এই কাজ চালিয়ে যেতে প্ররোচিত করছেন। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের আওতায় মামলা করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে হাই কোর্ট।

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কয়েকটি ধারায় দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দিলেও, ওই মামলা সম্পূর্ণ খারিজ করেনি আদালত। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যৌনপল্লিতে গিয়ে টাকা দেওয়ার ফলে ওই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট যৌনকর্মীকে এই কাজ চালিয়ে যেতে প্ররোচিত করছেন। তাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের নির্দিষ্ট ধারায় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আদালত আরও জানিয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য মানবপাচার প্রতিরোধ করা। যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করতে বাধ্য হওয়া মানুষদের শাস্তি দেওয়া এর উদ্দেশ্য নয়। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে ‘খদ্দের’ বলে বিবেচনা করলে, তা আইনের উদ্দেশ্যেরই পরিপন্থী হয়ে যাবে।

Kerala High Court Kerala brothel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy