বয়স শুধুই সংখ্যা। আবার প্রমাণ করলেন কেরলের লীলা জস। ৭১ বছর বয়সে আকাশে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ঝাঁপ (ডাইভ) দিলেন তিনি। তাঁর পাখির চোখ এখন মহাকাশ। এর আগে কেরলের কোনও বাসিন্দা এত বয়সে স্কাইডাইভ করেননি।
আকাশে যখন বিমান উড়ে যেত, হাঁ হয়ে তাকিয়ে থাকতেন লীলা। বন্ধুদের বলতেন, ‘‘আকাশে যদি উড়তে পারতাম, কত মজা হত!’’ বন্ধুরা তখন লীলাকে তাঁর বয়স মনে করিয়ে দিতেন। খোঁটাও দিতেন। যদিও লীলা সে সবে পাত্তা দিতেন না। তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন, এক দিন নিজের স্বপ্নপূরণ করবেন। কী ভাবে, তা জানা ছিল না।
সেই সুযোগটা এসে গেল। লীলার পুত্র পি অনীশ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। দুবাইয়ের একটি সংস্থায় কাজ করেন। গত মাসে পুত্রের কাছে বেড়াতে গিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা জানান লীলা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে পুত্র ভেবেছিলেন আমি পাগল হয়ে গিয়েছে। পরে ও বোঝে, এটা আমার স্বপ্ন।’’ লীলা জানান, তিনি যখন ডাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন প্রশিক্ষকেরা। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, লীলা নন, অনীশ প্রশিক্ষণ নেবেন।
ডাইভিংয়ের প্রক্রিয়ার জন্য দু’লক্ষ টাকা খরচ করেন অনীশ। লীলা যখন ১৩ হাজার ফুচ উচ্চতায় বিমান থেকে ঝাঁপ দেন, তখন প্রথমে একটু যেন ভয়ই পেয়েছিলেন। তার পর সেই ভয় কেটে যায়। তখন শুধুই উত্তেজনা আর আনন্দ। তাঁর কথায়, ‘‘৬০০০ ফুট উচ্চতায় যখন প্যারাশুট নিয়ে নামলাম, তখন বুঝলাম, আমি এ বার নিরাপদে পৃথিবীতে অবতরণ করতে পারব।’’
কেরলে বাড়ি ফিরেই নিজের বন্ধুদের সেই স্কাইডাইভিংয়ের ছবি আর ভিডিয়ো দেখান লীলা। তার পর থেকে আর ঠাট্টা করেননি তাঁরা। উল্টে তাঁর সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। ছ’বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন লীলা। তিনি যে নিজের সাধপূরণ করতে পেরেছেন, তার কৃতিত্ব দিয়েছেন নিজের বাবাকে। লীলা জানান, সেনা আধিকারিক বাবাই ভয়কে জয় করতে শিখিয়েছিলেন। এখন তাঁর স্বপ্ন মহাকাশে পাড়ি দেওয়া।