Advertisement
E-Paper

Kodiyari Balakrishnan: দায়িত্বে ফিরেই বয়স-প্রশ্নে ‘কট্টর’ অবস্থানে কোডিয়ারি

অসুস্থতার কারণে কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে এক বছর আগে অব্যাহতি নিয়েছিলেন কোডিয়ারি।

 সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৪৬
কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন।

কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন। —ফাইল চিত্র।

রাজ্য সম্মেলন আর তিন মাস দূরে। তার আগেই কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক পদে প্রত্যাবর্তন ঘটল কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের। পুরনো দায়িত্বে ফিরেই দলের জন্য দু’টো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে নিজের পুরনো অবস্থানই ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য কোডিয়ারি।

অসুস্থতার কারণে কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে এক বছর আগে অব্যাহতি নিয়েছিলেন কোডিয়ারি। কঠিন রোগের চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল তাঁর। তবে রাজনৈতিক শিবিরের জল্পনা ছিল, অর্থ তছরুপের মামলায় কোডিয়ারির ছেলে বিনীশ কোডিয়ারিকে ইডি গ্রেফতার করায় যে বিতর্ক ঘনীভূত হয়েছিল, তা সামাল দিতেই অসুস্থতাকে সামনে রেখে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল রাজ্য সম্পাদককে। বিনীশ জামিনে ছাড়া পেয়েছেন মাসদেড়েক আগে। তার পরেই আবার রাজ্য সম্পাদকের পদে ফিরে এসেছেন কোডিয়ারি! যদিও তাঁর বক্তব্য, ছেলের গ্রেফতারের ঘটনাকে টেনে নানা ধরনের ‘অপপ্রচার’ চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেই ঘটনার সঙ্গে তাঁর ছুটি নেওয়া বা ফিরে আসার কোনও সম্পর্ক নেই।

কোডিয়ারির অনুপস্থিতিতে কেরল সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ বিজয়রাঘবন। তাঁর নেতৃত্বে লড়াই করেই গত বিধানসভা ভোটে কেরলে নজির গড়ে পরপর দু’বার ক্ষমতায় এসেছে সিপিএম। বিজয়রাঘবনকেই এর পরে পূর্ণ দায়িত্বের রাজ্য সম্পাদক করা হবে, নাকি কোডিয়ারি তৃতীয় দফার জন্য থাকবেন— সেই প্রশ্নের ফয়সালা হবে কোচিতে আগামী ১ মার্চ থেকে সিপিএমের কেরল রাজ্য সম্মেলনে। তবে দলের কমিটিতে বয়ঃসীমা কার্যকর করার যে পরিকল্পনা সিপিএম নিয়েছে, সম্মেলন-পর্ব চলাকালীনই তাতে কিছু শিথিলতার পক্ষে সওয়াল করেছেন কোডিয়ারি। বিজয়রাঘবনের চেয়ে এই ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থান তুলনায় ‘কট্টর’।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী কোডিয়ারির প্রত্যাবর্তনের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে রাজ্য সম্পাদকের পদে ফিরেই কোডিয়ারি বলেছেন, রাজ্য ও জেলা কমিটিতে থাকার জন্য সদস্যদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা তাঁরা ৭৫ রাখতে চান। কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার জন্য সর্বোচ্চ বয়ঃসীমা ৭৫-এ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে এ বার। সেই অনুযায়ী রাজ্য ও জেলা কমিটি স্তরে বয়সের সীমা আরও একটু করে কমানো হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। কিন্তু কোডিয়ারিরা চাইছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির মতো একই বয়ঃসীমা রাজ্য ও জেলা কমিটিতেও কার্যকর থাক। কোডিয়ারি ফিরে আসার আগে কেরল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব রাজ্য কমিটির ক্ষেত্রে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ৬৫ বছরে বেঁধে ফেলার ভাবনায় ছিলেন। সেটা করলে কোডিয়ারির আর রাজ্যে পদে থাকা হয় না! কোডিয়ারি অবশ্য জানিয়েছেন, জেলা ও রাজ্য কমিটিতে বেশি করে নতুন মুখও আনা হবে। কিন্তু বর্যীয়ান নেতারা না সরলে নতুন মুখ বেশি করে কী ভাবে জায়গা পাবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই।

এর সঙ্গেই রয়েছে কংগ্রেস সম্পর্কে অবস্থানের প্রশ্ন। এই ক্ষেত্রে কেরলের সিপিএম এমনিতেই কংগ্রেস-বিরোধী, কোডিয়ারি তাতে আরও কট্টরপন্থী! উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মণিপুর ও গোয়া— এই পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ কোনও সমঝোতায় যাওয়া হবে না বলে ঠিক করেছে সিপিএমের পলিটবুরো। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী কোনও ফ্রন্টে থাকতে তাদের আপত্তি নেই। যে ‘মডেল’ তামিলনাড়ুর শাসক ফ্রন্টে আছে। কোথায় কোন ফ্রন্ট হতে পারে, তা ঠিক করার ভার রাজ্য নেতৃত্বের উপরে ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে মণিপুরে অবশ্য সিপিএম ও সিপিআই কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই চলে। সিপিএমের একাংশের মত, কোডিয়ারি দায়িত্বে ফিরে আসার পরে হায়দরাবাদে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেরল আরও চড়া ভাবে তাদের লাইনের পক্ষে সওয়াল করতে পারে। কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘কংগ্রেস সম্পর্কে অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার দাবি দলের নানা স্তরেই রয়েছে। সিদ্ধান্তে পৌঁছনো কঠিন। পার্টি কংগ্রেসের আগে এই বিতর্ক থামবে বলে মনে হচ্ছে না!’’

kerala CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy