ফের বিতর্কে ললিত মোদী। আবারও ব্রিটেন ঘনিষ্ঠতায় নাম জড়াল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রাক্তন চেয়ারম্যানের। যুবরাজ চার্লসের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় অন্তত ৩০ হাজার ডলার অনুদানের অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
৪৭০ কোটি টাকা তছরুপে অভিযুক্ত ললিত এই মুহূর্তে লন্ডনে। কার্যত দেশছা়ড়া। একাধিক সমনে সাড়া না পেয়ে তাঁর নামে সম্প্রতি জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে মুম্বইয়ের একটি আদালত। এরই মধ্যে ব্রিটেনের একটি সংস্থার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিয়ে ফের কোণঠাসা ললিত।
কী কাজ সেই সংস্থার? লন্ডনের একটি দৈনিকে সম্প্রতি এ নিয়ে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট মোতাবেক, ভারতে হাতির রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্য নিয়েই এই সংস্থাটি পথচলা শুরু করে বছর চারেক আগে। সংস্থাটির যুগ্ম সভাপতি, যুবরাজ চার্লস ও তাঁর পত্নী ক্যামিলা। ক্যামিলার প্রয়াত দাদা মার্ক সান্ডের তত্ত্বাবধানে এশিয়ার হাতি নিয়ে অবশ্য তার অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করে সংস্থাটি। এর ভারতীয় শাখাটির জন্যেই ললিত বিপুল অঙ্কের অনুদান করেন বলে দাবি ওই দৈনিকের।
অভিযোগ, ২০১১-র অক্টোবরে সংস্থাটিকে প্রথম ধাপে ৩০ হাজার ডলার দেন ললিত। পরের অনুদান ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সান্ড তখনও বেঁচে। সংস্থার হয়ে ‘শিল্পসামগ্রী কেনাকাটি’-তে সে বার তাঁর হাতেই আরও ৫ হাজার পাউন্ড তুলে দেন প্রাক্তন আইপিএল কর্তা। যাবতীয় এই অনুদানের কাগজপত্র এখন তাদেরই হাতে বলে জানিয়েছে ওই সংবাদপত্রটি।
২০১৪-র এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের একটি দুর্ঘটনায় মারা যান সান্ড। সস্ত্রীক যুবরাজ চার্লসই এখন সংস্থাটির মাথায় বলে সূত্রের খবর। ললিত যথারীতি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর আইনজীবী সংবাদপত্রটিকে জানান, ‘‘এ সবই আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। কোনও ভিত্তিই নেই এই ধরনের অভিযোগের।’’
সংস্থার কাজকর্ম অবশ্য দিব্যি চলছে ভারতে। বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতের ‘এলিফ্যান্ট করিডর’ নিয়ে আগামী দিনে আরও বেশি কাজ করার কথা জানাচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারাই। সংস্থা সূত্রের খবর, আগামী নভেম্বরেই ‘ট্রাভেলস টু মাই এলিফ্যান্ট’ নামে একটি প্রচারসভা হওয়ার কথা মধ্যপ্রদেশের কিপলিং ক্যাম্প এলাকায়।
ললিত মোদী যে এর সঙ্গে জড়িত, তার প্রমাণ রয়েছে সংস্থাটির নিজস্ব ওয়েবসাইটেও। সংস্থার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। ২০০৮-এ সংস্থাটিতে যোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মোদী নিজেই।অনুদানের পরিমাণ নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ সংস্থাটির। তাঁদের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভারতে ওঁকে নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’
এর আগেও ললিতকে নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে এই পত্রিকাটি। তবে তাদের সাম্প্রতিক এই দাবি ঘিরে উত্তেজনার রেশ এসে পৌঁছেছে ভারতেও। কূটনীতিকদের একাংশের মতে, ব্রিটিশ রাজনীতিতে এমনিতেই যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে ললিতের। তা খাটিয়ে মোদী ব্রিটিশ সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যুবরাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ‘তথ্য-প্রমাণে’ সেই আশঙ্কাই আরও জোরালো হল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy