মিষ্টিমুখে অঙ্গীকার, জোট অটুট। শনিবার লালুর জন্মদিনে। ছবি: পিটিআই।
বাবার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দুই ছেলের মধ্যেই ভাগ করে দিতে চান মা। স্বামীর জন্মদিনে এমন ইচ্ছেই প্রকাশ করলেন স্ত্রী।
এত দিন ধরে বিহারের যাদব-কুলপতির উত্তরাধিকার নিয়ে নানা মহলে জল্পনা-আলোচনা-বিতর্ক লেগেই থাকত। আজ নিজে থেকেই তা নিয়ে মুখ খুললেন রাবড়ী দেবী। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের স্ত্রী। স্পষ্ট কথা বলায় লালুপ্রসাদের চেয়েও কয়েক কাঠি এগিয়ে রাবড়ী। আজ লালুর ৬৯তম জন্মদিনে রাবড়ী দেবীর বক্তব্যের পরে দলীয় নেতৃত্বের কাছে এটাই স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। রাবড়ী দেবী বলেন, ‘‘মেয়ে মিসা ভারতীকে রাজ্যসভার সদস্য করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিয়ের পরে তাঁর ঠিকানা শ্বশুরবাড়ি, গোত্রও ভিন্ন। সুতরাং এ বাড়ির উত্তরাধিকারী ছেলেরাই। তাঁরাই রাজনীতি সামলাবেন।’’
এ দিন সকাল থেকে রাবড়ী দেবীর সরকারি আবাসন, ১০ সার্কুলার রোডের সামনে বিশাল ভিড়। সংবাদমাধ্যমের ওবি ভ্যানের লম্বা লাইন। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ, উন্মাদনা। আজ এ বাড়িতে উৎসব। রাত ১২টায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেক কেটে সেই ছবি ট্যুইটারে পোস্টও করেছেন লালু। রাবড়ী দেবীর হাত থেকে গোলাপের তোড়া পেয়ে হাসিতে ফেটে পড়ছেন লালু। পরিবার সূত্রে খবর, গোটা আয়োজনটাই করেছিলেন ছোটছেলে তথা রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। মধ্যরাতে কেক কাটেন লালু। বাড়ির ভিতরে তখন হাতে গোনা পরিচিত নেতাদের প্রবেশের অনুমতি ছিল। এরই মাঝে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। হাজির ছিলেন মহাজোটের ছোটবড় প্রায় সমস্ত মাপের নেতাই। নীতীশকে পাশে বসিয়ে লালুপ্রসাদ বলেন, ‘‘আরএসএস-বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে। আমাদের জোট মজবুত।’’ লালুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে যান নীতীশ।
এ দিন জন্মদিনের অনুষ্ঠান তদারকি করেন তেজস্বী। বড়ছেলে তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ উপস্থিত থাকলেও তাঁকে খুব একটা সক্রিয় ভাবে দেখা যায়নি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অন্য সময়ে বাবার পাশে পাশে থাকেন বড় মেয়ে মিসা ভারতী। এ দিন তাঁকে দেখা যায়নি। এই অবস্থায় লালুর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে পরিবারের মতামত জানিয়ে দিয়েছেন রাবড়ী।
আরজেডি সূত্রের বক্তব্য, লালুপ্রসাদ মূলত বড় সিদ্ধান্ত নিজের জন্মদিনেই নিয়ে থাকেন। আর এ বারে জন্মদিন তো অন্য রকমের। দল ক্ষমতায় রয়েছে। দুই ছেলে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। মেয়ে রাজ্যসভার সাংসদ। সব মিলিয়ে এ বারে দলের দায়িত্ব ভাগ করার সময় এসেছে বলে মনে করছেন লালু। সে কারণেই ধীরে ধীরে ছোট ছেলে তেজস্বীকে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন তিনি। দায়িত্বে সফলও হচ্ছেন তেজস্বী। বড়ছেলে তেজপ্রতাপ এবং বড় মেয়ে মিসা ভারতীকে অনেক পিছনেও ফেলে দিয়েছেন। সেই বার্তা প্রকাশ্যে এল রাবড়ী দেবীর মন্তব্যেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy