Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই প্রচারযুদ্ধে মোদী-গাঁধীরা

আজ-কাল-পরশু করে লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা যত পিছিয়েছে, ততই রহস্য বেড়েছে রাজধানীতে। আজ নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে দেখা গেল, গত বারের ৯ দফা থেকে কমিয়ে এ বারে সাত দফায় ভোট হচ্ছে।

সম্মুখসমর: রাহুল গাঁধী ও নরেন্দ্র মোদী। দেশ জুড়ে প্রহর গোনা শুরু। প্রধানমন্ত্রী রবিবার যোগ দেন গাজিয়াবাদে সিআইএসএফ-এর অনুষ্ঠানে। রাহুলের ছবিটি শুক্রবারের, ওড়িশার কোরাপুটে। ছবি: পিটিআই।

সম্মুখসমর: রাহুল গাঁধী ও নরেন্দ্র মোদী। দেশ জুড়ে প্রহর গোনা শুরু। প্রধানমন্ত্রী রবিবার যোগ দেন গাজিয়াবাদে সিআইএসএফ-এর অনুষ্ঠানে। রাহুলের ছবিটি শুক্রবারের, ওড়িশার কোরাপুটে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৯
Share: Save:

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার মুহূর্তটুকুর অপেক্ষা! মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই ভোট প্রচারের টুইট করতে শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খানিক পরে প্রচার যুদ্ধে নেমে গেল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরাও।

আজ-কাল-পরশু করে লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা যত পিছিয়েছে, ততই রহস্য বেড়েছে রাজধানীতে। আজ নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে দেখা গেল, গত বারের ৯ দফা থেকে কমিয়ে এ বারে সাত দফায় ভোট হচ্ছে। তবে ভোট শেষ হওয়ার দিন পিছিয়ে গেল অনেকটা। ২৩ মে ফল ঘোষণা হবে। আজ থেকেই গোটা দেশে চালু হয়ে গেল আদর্শ আচরণবিধি।

আজ সকাল পর্যন্তও পুরোদস্তুর সরকারের প্রচারের ঢাক পিটিয়ে গিয়েছেন মোদী। ভোট ঘোষণার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতই ছিলেন তিনি। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার সাংবাদিক বৈঠক তখনও শেষ হয়নি। তার মধ্যেই পরপর আটটি টুইট করে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন মোদী। নিজেই নিজের নাম ধরে হুঙ্কার ছাড়লেন, ‘ফির এক বার মোদী সরকার’। গ্বালিয়রে আরএসএসের প্রতিনিধি সভার শেষে সঙ্ঘ-নেতা ভাইয়াজি জোশীও ভোট-যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেন।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় নির্বাচন, দেখে নিন কবে-কোথায় ভোট

বসে নেই কংগ্রেসে সভাপতি রাহুল গাঁধীও। আগামিকালই বুথ কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি। মোদীর ‘বিদায় ঘণ্টা’ বাজিয়ে তাঁর দলও নিয়ে এল নতুন স্লোগান, ‘‘সত্যের জয় হবেই। ২৩ মে, ভারতের জয়।’’ এসপি নেতা অখিলেশ যাদবও একই সুরে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এটা নিছক ভোট নয়। দেশের ভবিষ্যৎ আর জনস্বার্থে হতে চলা এক ‘মহা পরিবর্তনের’ ঘোষণা।’’ টুইট করে ‘গরিব-বিরোধী, বড়লোকদের বন্ধু’ মোদী সরকারকে দেশে অশান্তি তৈরির জন্য বিঁধেছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও।

এ বারের ভোটে মূল লড়াইটা মোদী বনাম রাহুল হলেও কংগ্রেস নেতারা এখনই দলের সভাপতির নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে বলছেন না। কারণ, কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের জোট আগেই ঠিক করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী বাছাই হবে ভোটের ফল ঘোষণার পরে। যদিও কংগ্রেসের বাকি নেতারা বলতে শুরু করেছেন, লড়াইটা সরাসরি মোদী বনাম রাহুলের। দু’পক্ষের দুই সেনাপতি রাহুল এবং মোদীর সভার হিসেবও চূড়ান্ত। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রাহুল দেশজুড়ে কমবেশি ১৭৫টি সভা করবেন। তার সঙ্গেই থাকবে রোড-শো, পদযাত্রা। মোদী অন্তত শ’দুয়েক সভা করবেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।

মোদী নিজেও জানেন তাঁর লড়াইটা রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেসের সঙ্গেই। তাই ভোট ঘোষণার পরেই কংগ্রেসকে নিশানা করলেন।
এবং বললেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে ১৩০ কোটি জনতার আশীর্বাদে ‘অসম্ভবকে সম্ভব’ করা গিয়েছে। ২০১৯ সালের লড়াই বিশ্বাস আর ইতিবাচক ভাবনার। সবকা সাথ, সবকা বিকাশের মন্ত্রে এনডিএ ফের মানুষের আশীর্বাদ চাইছে।’’

কংগ্রেসের তরফে অশোক গহলৌত পাল্টা বললেন, ‘‘কোথায় গেল অচ্ছে দিন? বছরে ২ কোটি রোজগার? কৃষকদের সঠিক দাম? ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা? মহিলাদের নিরাপত্তা? সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ মোদী। শুধু ব্যর্থতা ঢাকতেই নানা ফন্দি এঁটে যাচ্ছেন। এখন বদলের সময়। ২৩ মে দেশের মানুষ নতুন সরকার বাছবে। মোদীর বিদায় ঘণ্টা বাজবে।’’ আর এক কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল বললেন, ‘‘একটি ঐতিহাসিক জনমত পুরো বিফলে গেল পাঁচ বছরে। বাকি সব নেতিবাচক বিষয় এল, অচ্ছে দিন আজও এল না। এ বারে আসবে।’’

কমিশন জানিয়েছে, এ বারের ভোটে নতুন ভোটার প্রায় দেড় কোটি। এই বিপুল সংখ্যক ভোটারের মন জিততে সক্রিয় দু’পক্ষই। মোদী বললেন, ‘‘ভোট এসেছে। গণতন্ত্রের উৎসব। সকলে যোগ দিন। আশা করি, ঐতিহাসিক ভোট পড়বে।’’ রাহুলও দলের নেতাদের নির্দেশ দিলেন, নতুন যুব ভোটারদের সঙ্গে টানতে ঝাঁপিয়ে পড়ুক যুব মোর্চা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস নতুন ভোটারদের জন্য বার্তা নিয়ে এল, ‘‘অচ্ছে দিন আসেনি, কিন্তু ‘আপনা টাইম আয়েগা’। এখনও সময় আছে, ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE