Advertisement
E-Paper

মাটিতে পা পড়ছে না মোদী-শাহের, ভোটের লড়াই এখন মাঝ আকাশেও

এ বছর লোকসভা নির্বাচনে ভোটদাতার সংখ্যা ৯০ কোটি। দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ভোটদাতারা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:২৬
হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীতে। —ফাইল চিত্র।

হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীতে। —ফাইল চিত্র।

কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের রুখতে এ বার আকাশেও কব্জা বিজেপির। অধিকাংশ প্রাইভেট জেট এবং হেলিকপ্টারই এখন তাদের দখলে। তাতে চেপে সকাল-বিকাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন দলের নেতারা। তাতেই বিপাকে পড়েছে অন্য বিরোধী দলগুলি। প্রত্যন্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইলেও, বিমান ও কপ্টারের অভাবে তা হয়ে উঠছে না বলেই অভিযোগ।

লোকসভা নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণার তিনমাস আগে থেকেই বিজেপির তরফে বেসরকারি বিমান ও হেলিকপ্টারের বুকিং শুরু করে দেওয়া বলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন মার্টিন কনসাল্টিং সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তথা ভারতের বিজনেস এয়ারক্র্যাফ্ট অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মার্ক মার্টিন। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রচারে বিঘ্ন ঘটানো নতুন কিছু নয়। কিন্তু রাজনীতির ময়দান ছাড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আকাশে গিয়ে পৌঁছতে দেখা যায়নি আগে কখনও। প্রতিপক্ষকে রুখতে আকাশের দখল নিয়েছে একটি দল। এমন গেরিলা যুদ্ধ আগে কখনও দেখা যায়নি।’’

এ বছর লোকসভা নির্বাচনে ভোটদাতার সংখ্যা ৯০ কোটি। দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ভোটদাতারা। তাঁদের কাছে পৌঁছতে রেল বা সড়কপথকে ভরসা করছেন না নেতারা। ভোট ঘোষণার ঢের আগে থেকেই তাই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বিজেপি। নির্বাচনী প্রচারের জন্য এ বারে কমপক্ষে ২০টি প্রাইভেট জেট ও ৩০টি হেলিকপ্টার আগাম বুক করেছে তারা। তাতেই বিপাকে পড়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। বিজেপির দখলে থাকা বিমান বহরের মাত্র এক পঞ্চমাংশ তাদের হাতে এসেছে বলে গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: সর্বত্র ক্যামেরা বসিয়েছেন মোদী, কংগ্রেসকে ভোট দিলেই জেনে যাবেন: বিজেপি বিধায়ক​

বিমান ছুটিয়ে দু’বেলা বেরিয়ে পড়ার খরচ যদিও অনেকটাই। তবে তাতে বিশেষ সমস্যা হওয়ার কথা নয় এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে ধনী দল বিজেপির। সাধারণত ৪৫ দিনের জন্য প্রাইভেট জেট বুক করতে গেলে প্রতি ঘণ্টায় ৫ হাজার ৭০০ ডলার খরচ হয়, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় দিতে হয় ৭ হাজার ২০০ ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় তা ৫ লক্ষ টাকার বেশি। তাই এ বারের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির তরফে কোটি কোটি টাকা ঢালা হচ্ছে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। কারণ নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই বিমান নিয়ে এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা এ বারে গাঁধীনগরে দলের প্রার্থী অমিত শাহ। গত ৬ এপ্রিল সকালে প্রথম নয়াদিল্লি থেকে দেশের দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়া ছুটে যান তিনি। সেখান থেকে আবার রওনা দেন পূর্বের ডিব্রুগড়। সন্ধ্যায় আবার ফিরে যান পশ্চিমের আমদাবাদ। অর্থাৎ ওই একদিনেই প্রায় ৪ হাজার ৫০০ মাইল (৭ হাজার ২৪২ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দেন তিনি।

তবে শুধু বিমান ভাড়াই নয়, রয়েছে দালালের খরচও। বিজনেস এয়ারক্র্যাফ্ট অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরকে বালি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কোনও সংযোগ নেই বিমান সংস্থাগুলির। বরং নির্বাচনের সময় লোকসান পুষিয়ে নেওয়াই লক্ষ্য থাকে। তাই ব্যবসাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।” তবে রাজনৈতিক দলগুলি সরাসরি বিমানের বুকিং করে না বলেও জানান বালি। তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে চার্টার দালালদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলে ঘণ্টা প্রতি দাম ঠিক করে তারা। তাতে নিজেদের লাভের অংশ যোগ করে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বিক্রি করে।

আরও পড়ুন: নিরাপদ নয় ভারত! ২০১৮তে দেশ ছাড়লেন ৫,০০০ ধনকুবের​

তবে বিরোধী দলগুলির তুলনায় বিজেপির বিমান সংখ্যা বেশি হওয়া নিয়ে সাফাই দিয়েছেন দলের কর্মী গুলাব সিংহ পানওয়ার। গত ২২ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তিনি। এ বছর দলের জন্য পাঁচটি বিমান বুক করেছেন। কংগ্রেসে প্রচারে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ উড়িয়ে তিনি বলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক বিমানের প্রয়োজন পড়েছে। এ ব্যাপারে কোথাও কোনও ভুল নেই।” যদিও জানুয়ারি মাসেই উল্টো অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র আনন্দ শর্মা। প্রাইভেট কপ্টার পেতে তাঁদের নাকাল হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এর আগে ২০১৪-র নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল কংগ্রেস। বিমানের ভাড়া কে জুগিয়েছিল, তা জানতে চেয়েছিল তারা। সে বার শিল্পপতি গৌতম আদানির বিমান নিয়েই মোদী এদিক-ওদিক ছুটে গিয়েছিলেন বলে সামনে এসেছিল। তবে বিনা পয়সায় কাউকে বিমান দেন না বলে পরে জানিয়েছিলেন আদানি।

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Lok Sabha Election 2019 BJP Congress Election Campaign Narendra Modi Amit Shah general-election-2019-national লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy