Advertisement
E-Paper

‘বিজেপিকে সাহায্য! বরং মরে যাব’

গত কাল অমেঠীর এক সভায় প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে যে কেন্দ্রে কংগ্রেসের ওজনদার প্রার্থী নেই, সেখানে বিরোধী জোটের (এসপি-বিএসপি) নয়, বিজেপিরই ভোট কাটবে কংগ্রেস।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০২:১৭
ভোট কাটাকাটির অঙ্ক বিতর্কে আসরে নেমেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও। ছবি পিটিআই।

ভোট কাটাকাটির অঙ্ক বিতর্কে আসরে নেমেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও। ছবি পিটিআই।

উত্তরপ্রদেশে বিরোধী জোট এবং কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটির অঙ্ক নিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক আজও অব্যাহত। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি পুরোদস্তুর আসরে নেমেছে। জবাব দিতে প্রিয়ঙ্কার পাশাপাশি আসরে নেমেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও।

গত কাল অমেঠীর এক সভায় প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে যে কেন্দ্রে কংগ্রেসের ওজনদার প্রার্থী নেই, সেখানে বিরোধী জোটের (এসপি-বিএসপি) নয়, বিজেপিরই ভোট কাটবে কংগ্রেস।’’ তার পর থেকেই বিজেপি বলতে শুরু করেছে, ‘গোপন সমঝোতা’টি আর গোপন রইল না। স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘‘কংগ্রেস নিজেই কবুল করল, তারা জেতার জন্য নয়, শুধু বিজেপির একটু-আধটু ভোট কাটার জন্য লড়ছে।’’ এই আক্রমণের জবাব দিতে রাহুল গত কাল উত্তরপ্রদেশের এক সভায় এসপি-বিএসপি জোটকে নিশানা করেন। যদিও আজ একটি টিভি চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে, উত্তরপ্রদেশে একটা ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি জিতছে, সেটা এসপি-বিএসপি জোট হতে পারে বা কংগ্রেস।’’ এই প্রসঙ্গেই প্রিয়ঙ্কার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বলেন, ‘‘আমার বোন (প্রিয়ঙ্কা) এবং জ্যোতির (জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া)-কে আমি বলেছি যে, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল বিজেপিকে হারানো। যেখানে আমরা জিততে পারব না, সেখানে জোটকে সমর্থন করা হোক।’’

আজ অখিলেশ বলেন, ‘‘কংগ্রেস দুর্বল প্রার্থী দিয়েছে, মনে করি না। কিন্তু মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। কংগ্রেস বিজেপিকেই সাহায্য করছে।’’ আর সংসদে মোদীকে রাহুলের আলিঙ্গনের প্রসঙ্গ টেনে মায়াবতী বললেন, ‘‘সবাই জানে, দু’দল আসলে একই। সপা-বসপা জোটের বিরুদ্ধেই লড়ছে কংগ্রেস ও বিজেপি। দুই দলকেই উত্তরপ্রদেশের জনতা উৎখাত করবে।’’

গত কালের বক্তব্য প্রসঙ্গে আজ প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আমি কখনওই বলিনি, কংগ্রেস দুর্বল প্রার্থী দিয়েছে। নিজের শক্তিতেই লড়ছে কংগ্রেস। আমাকে নির্দিষ্ট ভাবে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, আমরা কি বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছি? আমি জবাবে বলেছিলাম, বিজেপিকে সাহায্য করার বদলে বরং আমি মরে যাব।’’ এ দিন সন্ধ্যায় মা সনিয়া গাঁধীকে নিয়ে রায়বরেলীতে সভা করেন প্রিয়ঙ্কা। তার আগে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দুপুরে রায়বরেলীতেই এসপি-র একটি কর্মিসভায় যান তিনি। সেখানে বক্তৃতাও দেন।

সত্যিই কি উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে এসপি-বিএসপির ‘গোপন’ সমঝোতা হয়েছে?

উত্তরপ্রদেশের প্রার্থীতালিকা যাচাই করে অনেকেই বলছেন, ১৬টির মতো আসনে কংগ্রেস ওজনদার প্রার্থী দিয়েছে। যেখানে তারা জিততে পারে। আটটি আসনে সমঝোতা হয়েছে প্রকাশ্যেই। যার মধ্যে রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী, মুলায়ম-অখিলেশ-ডিম্পল এবং অজিত সিংহ, জয়ন্ত চৌধরিদের আসন রয়েছে। বাকি আসনগুলির সিংহভাগ জায়গাতেই কংগ্রেস এমন প্রার্থী দিয়েছে, যাঁরা বিজেপির ভোটব্যাঙ্কেই থাবা বসাবেন। ফলে আখেরে লাভ হবে এসপি-বিএসপির।

দিল্লির কংগ্রেস নেতারা এই মত অস্বীকারও করছেন না। তাঁদের মতে, জাটবরা মায়াবতীর সঙ্গে আছেন। যাদব ও সংখ্যালঘুরা সপার সঙ্গে। গত লোকসভা ভোটের মতো এ বারেও বিজেপি জাটব ছাড়া অন্য দলিত এবং যাদব ছাড়া অন্য অনগ্রসর শ্রেণিতে নিজেদের দখল বাড়াতে চাইছে। আর নিজেদের ওজনদার আসন বাদে বাকিগুলিতে কংগ্রেস সে ভাবেই প্রার্থী বাছাই করেছে, যাতে উচ্চবর্ণ হোক বা দলিত-অনগ্রসর শ্রেণি— বিজেপিরই ভোট কাটা যায়। আসন ধরে ধরে কংগ্রেস কোথাও ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, রাজপুত, জাঠ প্রার্থী দিয়েছে, কোথাও কুর্মি, সোনার, কুশওয়াহা প্রার্থী করেছে।

কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, অখিলেশের সঙ্গে কথা বলেই কংগ্রেস এমন প্রার্থী দিয়েছে। রাহুল উত্তরপ্রদেশে জোট করতেও চেয়েছিলেন। অখিলেশ রাজি থাকলেও মায়াবতী বেঁকে বসেন। তার পরেই রাহুল আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। প্রিয়ঙ্কাকেও আসরে নিয়ে আসেন। তাতে আরও খাপ্পা হয়েছেন বহেনজি। বিএসপি-র এক সূত্রের মতে, যে আসনগুলিতে কংগ্রেস জোর দিচ্ছে, সেখানে ক্ষতি হবে এসপি-বিএসপি জোটের। কংগ্রেস আসন বের করতে না পারলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে বিজেপিরই ফায়দা হবে। তাই মায়া বলছেন, কংগ্রেস আসলে বিজেপিকে সাহায্য করছে।

Lok Sabha Election 2019 Congress Rahul Gandhi Priyanka Gandhi BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy