Advertisement
E-Paper

রমজানের জন্য ছোট হবে কি ভোটের লাইন, মতভেদ

রমজানের মাসে ভোটগ্রহণ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রবিবারই আপত্তি তুলেছিল। তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে আম আদমি পার্টি অভিযোগ তুলেছে, বিজেপি মুসলিমদের ভোট পাবে না জানে। তাই মুসলিমরা যাতে বেশি পরিমাণে ভোট দিতে না পারেন, তার জন্যই ইচ্ছাকৃত ভাবে রমজানের মাসে তিন দফায় ভোটগ্রহণ ফেলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৪

রমজানের মাসে লোকসভার ভোটগ্রহণ নিয়ে বিতর্কের মুখে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, পুরো মাস বাদ দিয়ে লোকসভার ভোট করা সম্ভব নয়।

রমজানের মাসে ভোটগ্রহণ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রবিবারই আপত্তি তুলেছিল। তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে আম আদমি পার্টি অভিযোগ তুলেছে, বিজেপি মুসলিমদের ভোট পাবে না জানে। তাই মুসলিমরা যাতে বেশি পরিমাণে ভোট দিতে না পারেন, তার জন্যই ইচ্ছাকৃত ভাবে রমজানের মাসে তিন দফায় ভোটগ্রহণ ফেলা হয়েছে।

মুসলিমদের কাছে পবিত্র রমজানের মাস এ বছর ৫ মে শুরু হওয়ার কথা। শেষ হবে ৪ জুন। তার মধ্যেই ৬ মে, ১২ মে ও ১৯ মে— তিন দফায় ভোটগ্রহণ হবে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম রবিবারই বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তপ্রদেশ ও বিহারে সংখ্যালঘু মানুষদের অসুবিধা হবে। আজ একই যুক্তি দিয়ে আপ-এর সাংসদ সঞ্জয় সিংহের অভিযোগ, মে-জুন মাসের গরমের মধ্যে রোজা রেখে চলা মুসলিমরা কী ভাবে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবেন?

আরও পড়ুন: চেনা মুখই কি ভরসা তৃণমূলের, মমতার বাড়িতে আজ দলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠক

এ নিয়ে কার্যত দুই শিবিরে বিভক্ত রাজনৈতিক শিবির। তৃণমূল-আম আদমি পার্টির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এ দিন বলেন, ‘‘এত মরিয়া হবেন না। রমজানের সময় এর আগেও ভোট হয়েছে। এ বার ভোটের প্রচারের সময় হোলিও পড়ছে।’’ একই যুক্তি বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেনেরও। এমআইএম-এর সভাপতি আসাউদ্দিন ওয়েইসি-ও মুসলিমদের অসুবিধার কথা মানতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, মুসলিমরা কি রমজানের সময় কাজকর্ম করেন না? যাঁরা রিকশা চালিয়ে, গতর খাটিয়ে রোজগার করেন, তাঁদেরও তো রোজার সময়ে কাজ করতে হয়। ওয়েইসির পাল্টা দাবি, ‘‘রমজানের সময় মুসলিমরা আরও বেশি হারে ভোট দেবেন এবং খারাপ শক্তিকে হারাবেন।’’ সেন্টার ফর স্টাডিজ অব ডেভেলপিং সোসাইটিজ-এর শিক্ষক হিলাল অহমেদেরও যুক্তি, ‘‘রমজানের সময় মুসলিমরা কম হারে ভোট দেবেন, এটা ধরে নেওয়া ভুল। এই প্রথম রমজানের মাসে ভোট হচ্ছে না। বরঞ্চ ২০১৪-র লোকসভা ভোটের পর থেকে প্রতিটি ভোটেই মুসলিমদের ভোটের হার বেড়েছে।’’

২০১১-র জনগণনা অনুসারে দেশের জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ মুসলমান। কিন্তু লোকসভার ২১৮টি আসনে মুসলিম ভোটারদের নির্ণায়ক শক্তি হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই মুসলিম ভোট লোকসভা ভোটের গুরুত্বপূর্ণ বাজি। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে মাত্র ২২ জন মুসলিম প্রার্থী জিতে এসেছিলেন। তার পরেও নানা বিধানসভা ভোটে মুসলিমদের জিতে আসার সংখ্যা কম। কিন্তু হিলালের যুক্তি, ‘‘মুসলিমদের জিতে আসার সঙ্গে মুসলিম ভোটের হার গুলিয়ে ফেললে ভুল হবে। তাঁরা লোকসভা কেন্দ্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন। মহিলা, তফসিলি জাতি, দলিত— অন্যান্য বঞ্চিত শ্রেণির মতোই মুসলিমরাও অনেক বেশি হারে গণতান্ত্রিক অধিকার কাজে লাগাতে চান।’’

কংগ্রেস এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও অবস্থান না নিলেও, মহারাষ্ট্রের কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ হুসেল দালওয়াই কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনাই করেছেন। আপ-এর বিধায়ক আমানতুল্লা খানের অভিযোগ, ১২ মে দিল্লিতে ভোট। ওই সময় রমজানের মধ্যে মুসলিমরা কম ভোট দিলে বিজেপিরই সুবিধা হবে। বিজেপি নেতাদের পাল্টা যুক্তি, মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেন না, এই ধারণাটাই ভুল। দু’বছর আগে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে মুসলিমরাও বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। দেওবন্দ, সাহারানপুর, মুজফ্ফরনগর, বিজনোর, বরেলী-র মতো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাতেও বিজেপি জিতে এসেছে।

Lok Sabha Election 2019 Election Commission of India TMC AAP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy