Advertisement
E-Paper

মোদীর বিকল্প তিনিই, বোঝাতে মরিয়া মায়া

উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোটের প্রথম সভায় দলিত নেত্রী মায়াবতী আজ এই কৌশল নিলেন মূলত দু’টি কারণে। এক, নিজেকে মোদীর বিকল্প হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা স্পষ্ট করে দেওয়া।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২২
খোশমেজাজে: রবিবার উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দের সভায় মায়াবতী এবং অখিলেশ যাদব। এএফপি

খোশমেজাজে: রবিবার উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দের সভায় মায়াবতী এবং অখিলেশ যাদব। এএফপি

যতটা ঝাঁঝ দেখালেন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে, ততটাই রাহুল গাঁধীর ক্ষেত্রে। ছাড়লেন না প্রিয়ঙ্কা বঢরাকেও। ফারাক এটুকুই— মোদীর নাম নিলেন, রাহুল-প্রিয়ঙ্কার নিলেন না।

উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোটের প্রথম সভায় দলিত নেত্রী মায়াবতী আজ এই কৌশল নিলেন মূলত দু’টি কারণে। এক, নিজেকে মোদীর বিকল্প হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা স্পষ্ট করে দেওয়া। দুই, উত্তরপ্রদেশে রাহুলের আক্রমণাত্মক অবস্থানে যাতে ভোট ভাগাভাগি না-হয়, তা নিশ্চিত করা। যদিও সে কাজটি করতে গিয়ে সরাসরি মুসলিম ভোট ভাগ না-হওয়ার ‘বিতর্কিত’ আবেদন করে বসলেন বহেনজি।

দেওবন্দের মঞ্চে প্রথম বার উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোটের তিন নেতা— মায়াবতী, অখিলেশ যাদব এবং অজিত চৌধরি। তিন জনের এমন এগারোটি সভা ইতিমধ্যেই ঘোষিত। প্রধান বক্তা হয়েও প্রথমেই বললেন মায়াবতী। পরতে পরতে বিঁধলেন মোদীকে। আবার চল্লিশ মিনিটে অন্তত দু’ডজন বার তুলোধোনা করলেন কংগ্রেসকে। বার্তা দিলেন, মোদীর বিকল্প কংগ্রেস নয়, তিনি নিজে।

বিএসপি নেত্রীর চাপে অখিলেশকেও বলতে হল, ‘‘যাহা কংগ্রেস, তাহাই বিজেপি। দেশে বদল আনতেই আমাদের জোট। কিন্তু কংগ্রেস বদল চায় না। উত্তরপ্রদেশে দল তৈরি করতে চায়। এদের চিনে নিন।’’ আবার একই সঙ্গে কতকটা দু’কূল রেখেই এসপি নেতা বললেন, ‘‘এ বারের ভোট ‘নতুন প্রধানমন্ত্রী’ তৈরি করার। গত বার যিনি চা-ওয়ালা সেজে এসেছিলেন, তিনি এখন উত্তরপ্রদেশে ধর্মের চৌকিদার সেজে এসেছেন। কিন্তু দলিত-কৃষক-সংখ্যালঘুরা চৌকিদারের চৌকি ছিনিয়ে নেবেন। আফসোস, কুম্ভে স্নানের সময়ে তাঁর ৫৬ ইঞ্চির ছাতির দর্শন হল না।’’ অখিলেশ যা-ও বা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দু’কথা বললেন, অজিত সিংহ কিছুই বললেন না।

কিন্তু মায়া অপ্রতিরোধ্য। তিনি মোদীর ‘চৌকিদারি’কে নাটকবাজি বললেন। আবার প্রিয়ঙ্কার নাম না-করে তাঁর গঙ্গায় নৌকাযাত্রা, মন্দির-মসজিদে ঘোরাকেও ‘নাটকবাজি’ আখ্যা দিলেন। একই ভাবে গত ভোটের আগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-পিছু মোদীর ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ফাঁপা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে এক পংক্তিতে বসালেন রাহুলের ‘ন্যায়’ প্রকল্পকে। বললেন, ‘‘কংগ্রেসের মুখিয়া অতি-গরিবকে মাসে ৬ হাজারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেটি দারিদ্র দূর করার স্থায়ী সমাধান নয়। এর আগে তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গাঁধীও ‘গরিবি হটাও’-এর নামে বিশ দফা কর্মসূচির নাটকবাজি করেছিলেন। সব মন ভোলানো।’’

মায়া ইস্তাহার প্রকাশ করেন না। কিন্তু কতকটা রাহুলের চাপেই আজ ঘোষণা করলেন, ‘‘বিজেপি-কংগ্রেসের মতো লোভ দেখাব না। কেন্দ্রে আমরা সরকার গড়ার সুযোগ পেলে অতি-গরিবকে ৬ হাজার টাকার বদলে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে স্থায়ী রোজগারের ব্যবস্থা করব।’’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর ভঙ্গিতে ‘পুরো দেশ’ নিয়ে তাঁর ভাবনা শোনালেন মায়া। যে দেশে স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস এবং এখন বিজেপি-আরএসএস অনর্থই করেছে বলে তাঁর অভিযোগ। কংগ্রেসকেও ‘বিরোধী’ দল বলে চিহ্নিত করে মায়া বললেন, ‘‘ভুল নীতির জন্যই কেন্দ্র এবং অধিকাংশ রাজ্য থেকে ক্ষমতা গিয়েছে কংগ্রেসের। তাদের পরখ করা হয়ে গিয়েছে। যে কোনও মূল্যে তাদের ঠেকাতে হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এরই মধ্যে বিতর্ক বাধিয়ে বসলেন মায়া। সরাসরি বললেন, ‘‘বিজেপিকে টক্কর দেওয়ার যোগ্য নয় কংগ্রেস। মুসলিমরা সাবধান। শুনেছি কংগ্রেসের নীতি হল, ‘জিতি না জিতি, জোট যেন না-আসে’। কংগ্রেস জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে এমন প্রার্থী করেছে, যাতে বিজেপির ফায়দা হয়। মুসলিমরা যেন একতরফা ভোট দেন। কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে নষ্ট না-করেন।’’ মায়ার এই কথা বিজেপি তো লুফে নেবেই। সহারণপুরের জেলাশাসকও রিপোর্ট পাঠিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে।

Lok Sabha Election 2019 Mayawati Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy